শাহাদাতের মর্যাদা৩

"শাহাদাতের মর্যাদা"

মুহাম্মাদ রবিউল বাশার (৩)

(২১) জুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের সৎআমলের
মর্যাদা অন্যান্য দিনের সৎআমলের চেয়ে অনেক
গুনে উত্তম। আল্লাহর পথে জিহাদের চেয়ে উত্তম।
তবে জিহাদে বেরিয়ে জান ও মাল
নিয়ে ফিরে না আসা সমস্ত আমলের চেয়ে উত্তম।
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻣﺎ ﻣﻦ ﺍﻳﺎﻡ ﺍﻟﻌﻤﻞ ﺍﻟﺼﺎﻟﺢ ﻓﻴﻬﻦ
ﺍﺣﺐ ﺍﻟﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻌﺸﺮﺓ ﻗﺎﻟﻮﺍ ﻳﺎﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﺻﻠﻌﻢ ﻭﻻﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﻭﻻﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﻓﻲ
ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻻ ﺭﺟﻞ ﺧﺮﺝ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻭﻣﺎﻟﻪ ﻓﻠﻢ ﻳﺮﺟﻊ ﻣﻦ
ﺫﺍﻟﻚ ﺑﺸﻴﺊ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ
অনুবাদ :আল্লাহর রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, এই
দশ দিনের চেয়ে অন্যান্য দিন সৎআমল করা আল্লাহর
কাছে অধিক প্রয় নয়। তারা প্রশ্ন করলো,
হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ),আল্লাহর পথে জিহাদও নয়?
তিনি বলেন, না, আল্লাহর পথে জিহাদ ও অধিক
প্রিয় নয়। কিন্তু যে ব্যক্তি জান ও মাল
নিয়ে বেরিয়ে কিছুই ফিরিয়ে আনতে পারেনি। (তার
আমলের মর্যাদা সমস্ত আমলের চেয়ে উত্তম)। (সহীহ
বুখারী)
(২২) আল্লাহর পথে বের হওয়ার পর মৃত্যু বরন করুক,
নিহত হোক, ঘোড়ার থেকে, উটের
থেকে পড়ে গিয়ে মারা যাক, বিষাক্ত
বিচ্ছুতে দংশন করে মারা যাক বা বিছানায় আল্লাহ
যেভাবে ইচ্ছা স্বাভাবিক মৃত্যুবরন করুক, নিশ্চয়
সে শাহীদ এবং নিশ্চয় তার জন্য জান্নাত রয়েছে।
(আবু দাউদ)
(২৩)শাহীদদের কয়েকটি মর্যাদা আছে। (১)প্রথম
দফায় শাহীদ ক্ষমা করা হবে।
(২)শাহীদকে জান্নাতের অবস্থান স্থল
দেখানো হবে। (৩)কবরের
শাস্তি থেকে বাচানো হবে। (৪)শাহীদ কিয়ামতের
ভয়াবহ অবস্থা থেকে নিরাপদ থাকবে। (৫)শাহীদের
মাথায় সম্মান জনক টুপি পরানো হবে, সে টুপির
ইয়কুত পাথর দুনিয়া এবং তন্মধ্যস্থিত সকল কিছু
থেকে উত্তম! (৬)বড় চোখ বাশিষ্টা ও সুন্দরী সত্তর
জন জোড় করে দেয়া হবে। (৭)শাহীদের পরিবারের
সত্তরজন সম্পর্কে সুপারিশ কবুল করা হবে। ﻋﻦ
ﺍﻟﻤﻘﺪﺍﻡ ﺑﻦ ﻣﻌﺪﻳﻜﺮﺏ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ
ﻟﻠﺸﻬﻴﺪ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺖ ﺧﺼﺎﻝ ﻳﻐﻔﺮ ﻟﻪ ﻓﻲ ﺍﻭﻝ ﺩﻓﻌﺔ
ﻭﻳﺮﻱ ﻣﻘﻌﺪﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻭﻳﺠﺎﺭ ﻣﻦ ﻋﺬﺍﺏ ﺍﻟﻘﺒﺮ ﻭﻳﺎﻣﻦ
ﻣﻦ ﺍﻟﻔﺰﻉ ﺍﻻﻛﺒﺮ ﻭﻳﻮﺿﻊ ﻋﻠﻲ ﺭﺍﺳﻪ ﺗﺎﺝ ﺍﻟﻮﻗﺎﺭ ﺍﻟﻴﺎﻗﻮﺗﺔ
ﻣﻨﻬﺎ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻭﻣﺎ ﻓﻴﻬﺎ ﻭﻳﺰﻭﺝ
ﺛﻨﺘﻴﻦ ﻭﺳﺒﻌﻴﻦ ﺯﻭﺟﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺤﻮﺭ ﺍﻟﻌﻴﻦ ﻭﻳﺸﻔﻊ ﻓﻲ
ﺳﺒﻌﻴﻦ ﻣﻦ ﺍﻗﺮﺑﺎﺋﻪ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﺍﺑﻦ দাবুনঅ
ﻣﺎﺟﺔ :মিকদাম বিন মাদীকারিব (রাঃ)
থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
ইরশাদ করেছেন, শাহীদের আল্লাহর কাছে ছয়টি গুন
আছে। (১)প্রথম দফায় তাকে ক্ষমা করা হবে।
(২)তাঁকে জান্নাতের অবস্থান স্থল দেখানো হবে।
(৩)কবরের
শাস্তি থেকে বাচানো হবে (৪)সবচেয়ে ভীতিকর
অবস্থা থেকে সে নিরাপদ থাকবে। (৫)তাঁর মাথায়
সম্মানজনক তাজ /টুপি পরানো হবে, যার ইয়াকুত
পাথর দুনিয়া এবং তার মধ্যকর সবকিছু থেকে উত্তম।
(৬)তাঁকে বড়চোখ বিশিষ্টা সুন্দরী বাহাত্তরজন
সঙ্গী করে দেয়া হবে। (৭)তাঁর নিকটাত্মীয়দের
মধ্যে সত্তর ব্যক্তির ব্যাপারে সুপারিস কবুল
করা হবে। (তিরমিজী ও ইবনে মাজা)
(২৪)শাহীদদের প্রকারভেদ।
ﻋﻦ ﻋﺘﺒﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺴﻠﻤﻲ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ
ﺍﻟﻘﺘﻠﻲ ﺛﻼﺛﺔ ١.ﻣﻮﻣﻦ ﺟﺎﻫﺪ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻭﻣﺎﻟﻪ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ
ﺍﻟﻠﻪ ﻓﺎﺫﺍ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻗﺎﺗﻞ ﺣﺘﻲ ﻳﻘﺘﻞ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻌﻢ
ﻓﻴﻪ ﻓﺬﺍﻟﻚ ﺍﻟﺸﻬﻴﺪ ﺍﻟﻤﻤﺘﺤﻦ ﻓﻲ ﺧﻴﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﺤﺖ
ﻋﺮﺷﻪ ﻻﻳﻔﻀﻠﻪ ﺍﻟﻨﺒﻴﻮﻥ ﺍﻻ ﺑﺪﺭﺟﺔ ﺍﻟﻨﺒﻮﺓ
٢.ﻣﻮﻣﻦ ﺧﻠﻂ ﻋﻤﻼ ﺻﺎﻟﺤﺎ ﻭﺍﺧﺮ ﺳﻴﺌﺎﺟﺎﻫﺪ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻭﻣﺎﻟﻪ
ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺫﺍ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻗﺎﺗﻞ ﺣﺘﻲ ﻳﻘﺘﻞ ﻗﺎﻝ
ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻌﻢ ﻓﻴﻪ ﻣﻤﺼﻤﺼﺔ ﻣﺤﺖ ﺫﻧﻮﺑﻪ ﻭﺧﻄﺎﻳﺎﻩ ﺍﻥ
ﺍﻟﺴﻴﻒ ﻣﺤﺎﺀ ﻟﻠﺨﻄﺎﻳﺎ ﻭﺍﺩﺧﻞ ﻣﻦ ﺍﻱ ﺍﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺷﺎﺀ
٣.ﻣﻨﺎﻓﻖ ﺟﺎﻫﺪ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻭﻣﺎﻟﻪ ﻓﺎﺫﺍ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻗﺎﺗﻞ
ﺣﺘﻲ ﻳﻘﺘﻞ ﻓﺬﺍﻟﻚ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻣﺎ ﺍﻟﺴﻴﻒ ﻻﻳﻤﺤﻮ ﺍﻟﻨﻔﺎﻕ
ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺪﺍﺭﻣﻲ
অনুবাদ :
উতবা বিন আব্দুস সালমা থেকে বর্নিত।
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ -ইরশাদ করেছেন,
নিহত ব্যক্তি(শাহীদ) তিন প্রকার। যথা (১)মুমিন
জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে।
তারপর যখন শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন লড়াই
করে, এমনকি নিহত হয়। যার সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
ও শাহীদ হলো আল্লাহর আরশের নীচে আল্লাহর
শামীয়ানায় পরীক্ষিত ব্যক্তি। তার উপর নাবীদের
শ্রেষ্ঠত্ব নেই নাবুওয়াতের মর্যাদা ছাড়া।
(২)মুমিন সৎআমল ও অসৎআমল মিলিতভাবে করেছে।
জান ও মাল দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে। যখন
শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করে তখন লড়াই
করে এমনকি নিহত(শাহীদ) হয়। প্রিয় নাবী (সাঃ)
বলেছেন, তার মধ্যে কিছু ত্রুটি আছে। তার গুনাহ ও
ত্রুটিবিচ্যুতি মাফ হয়ে যাবে। নিশ্চয় তরবারীর
আঘাত গুনাহ মুছে যায় এবং জান্নাতের যে কোন
দরজা দিয়ে প্রবেশ করানো হবে।
(৩)মুনাফিক, যে জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করেছে।
যখন সে শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন সে লড়াই
করে এমনকি নিহত (শাহীদ)হয়।
সে জাহান্নামী হবে।তরবারীর আঘাত
নিফাককে মুসতে পারে না। (দারমী)
(২৫)শাহীদকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। (
ﻋﻦ ﻓﻀﺎﻟﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﻴﺪ ﻗﺎﻝ ﺳﻤﻌﺖ ﻋﻤﺮﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﻳﻘﻮﻝ
ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ ﺍﺭﺑﻌﺔ
١.ﺭﺟﻞ ﻣﻮﻣﻦ ﺟﻴﺪﺍﻻﻳﻤﺎﻥ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻓﺼﺪﻕ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺘﻲ
ﻗﺘﻞ ﻓﺬﺍﻙ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﺮﻓﻊ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺍﻟﻴﻪ ﺍﻋﻴﻨﻬﻢ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
ﻫﻜﺬﺍﻭﺭﻓﻊ ﺭﺍﺳﻪ ﺣﺘﻲ ﺳﻘﻄﺖ ﻗﻠﻨﺴﻮﺗﻪ ﻓﻤﺎﺍﺩﺭﻱ
ﺍﻗﻠﻨﺴﻮﺓ ﻋﻤﺮ ﺍﺭﺍﺩ ﺍﻡ ﻗﻠﻨﺴﻮﺓ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﻗﺎﻝ
٢.ﺭﺟﻞ ﻣﻮﻣﻦ ﺟﻴﺪ ﺍﻻﻳﻤﺎﻥ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻛﻠﻤﺎ ﺿﺮﺏ ﺟﻠﺪﻩ
ﺑﺸﻮﻙ ﻃﻠﺢ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﺒﻦ ﺍﺗﺎﻩ ﺳﻬﻢ ﻏﺮﺏ ﻓﻘﺘﻠﻪ ﻓﻬﻮ ﻓﻲ
ﺍﻟﺪﺭﺟﺔ ﺍﻟﺜﺎﻧﻴﺔ
٣.ﻭﺭﺟﻞ ﻣﻮﻣﻦ ﺧﻠﻂ ﻋﻤﻼ ﺻﺎﻟﺤﺎ ﻭﺍﺧﺮﺳﻴﺌﺎ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ
ﻓﺼﺪﻕ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺘﻲ ﻗﺘﻞ ﻓﺬﺍﻙ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﺭﺟﺔ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ
٤.ﻭﺭﺟﻞ ﻣﻮﻣﻦ ﺍﺳﺮﻑ ﻋﻠﻲ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻌﺪﻭ ﻓﺼﺪﻕ
ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺘﻲ ﻗﺘﻞ ﻓﺬﺍﻙ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﺭﺟﺔ ﺍﻟﺮﺍﺑﻌﺔ
অনুবাদ :হযরত ফুদালাহ বিন উবাইদ (রঃ)
থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি উমার বিন
খাত্তাব (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে,
আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট শুনেছি,
তিনি বলতেছিলেন যে, শাহীদগন চার শ্রেনীর
হয়ে থাকে।
যথা(১)মুমিন ব্যক্তি, দৃঢ় ঈমানদার, শত্রুর
সাথে সাক্ষাতে মিলিত হয়েছে। তারপর
আল্লাহকে সত্যায়ন করেছে। (মুজাহিদদের ও
শাহীদদের জন্য আল্লাহ তায়ালা যে বিরাট মুজরীর
ওয়াদা করেছেন, তা সত্য
বলে মেনে নিয়ে শাহাদাতের জযবা নিয়ে সর্বাত্তক
জিহাদে লিপ্ত হয়েছে) এমনকি নিহত (শাহীদ)
হয়েছে।এ হলো ঐ ব্যক্তি, যার
দিকে মানুষেরা কিয়ামাতের দিন নিজেদের চোখ
তুলে এভাবে দেখবে এবংতিনি নিজের চক্ষু
এমনভাবে তুললেন যে, তাঁর টুপি পড়ে গেল।
আমি জানি না, হযরত ওমার (রাঃ) এর টুপি উদ্দেশ্য
করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর টুপির কথা বলেছেন।
(২)মুমিন ব্যক্তি, দৃঢ় ঈমানের অধিকারী, শত্রুর
সাথে সাক্ষাতে মিলিত হলো, ভীরুতার
কারনে কাটা গাছের কাটা দিয়ে যখনই তার
শরীরের চামড়ায় আঘাত করা হয়েছে,তখনই অঙ্গাত
তীর এসে তাকে আঘাত করে। তাতেই সে নিহত
(শাহীদ) হয়। ঔ হলো দ্বিতীয় স্তরের শাহীদ।
(৩)মুমিন ব্যক্তি মিস্রিত আমল অর্থাৎ সৎআমল ও
অসৎআমল করেছে।শত্রুর সাথে সাক্ষাতে মিলিত
হয়েছে। তারপর আল্লাহকে সত্যায়ন করেছে।
(মুজাহিদ ও শাহীদদের জন্য যে অঢেল পুরস্কারের
ওয়াদা আল্লাহ করেছেন,তা সত্য বলে বিশ্বাস
করে শাহাদাতের আকাংখা নিয়ে সর্বাত্তক
জিহাদে লিপ্ত হয়েছে) এমনকি নিহত (শাহীদ)
হয়েছে। ঐ হলো তৃতীয় স্তরের শাহীদ।
(৪)মুমিন ব্যক্তি, যে নিজের উপর
বাড়াবাড়ী করেছে।শত্রুর সাথে সাক্ষাতে মিলিত
হয়েছে। তারপর আল্লাহকে সত্যায়ন করেছে।
(মুজাহিদ ও শাহীদের জন্য আল্লাহর
দেয়া প্রতিশ্রুতি সত্য বিশ্বাসে শাহীদ হওয়ার
আশায় সর্বাত্তক সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে।)
এমনকি নিহত (শাহীদ)হয়েছে। ঐ হলো চতুর্থ স্তরের
শাহীদ। (তিরমিজী)
মুমিন শাহীদদের মর্যাদায় পার্থক্য আছে! ত্যাগ ও
করবানীর পার্থক্য, আমলের পার্থক্য,আন্তরিকতা ও
ভালবাসার পার্থক্য এবং নিয়াতের পার্থক্যের
কারনে মর্যাদায় পার্থক্য দেখা দেয়।
(২৬)শাহাদাত চাইলেই শাহাদাত বরন করা যায় না।
মিথ্যা কামনা বা চাওয়া নয়। সত্যসত্যই যদি কেহ
শাহাদাত বরন করার প্রার্থনা করে বা চায়,
তহলে বিছানায় মৃত্যু হলেও শাহীদদের
স্তরসমুহে তাকে আল্লাহ পৌছে দেবেন।
ﻋﻦ ﺳﻬﻞ ﺑﻦ ﺣﻨﻴﻒ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻣﻦ
ﺳﺎﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺸﻬﺎﺩﺓ ﺑﺼﺪﻕ ﺑﻠﻐﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻨﺎﺯﻝ ﺍﻟﺸﻬﺪﺍﺀ
ﻭﺍﻥ ﻣﺎﺕ ﻋﻠﻲ ﻓﺮﺍﺷﻪ ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
অনুবাদ :হযরত সাহল বিন হুনাইফ( রাঃ)
থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ
(সাঃ)ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর
কাছে সত্যই শাহাদাতের প্রার্থনা করবে, আল্লাহ
তাকে শাহীদদের স্তর সমুহে পৌছে দেবেন। যদিও
সে বিছানায় মৃত্যু বরন করে। (সহীহ মুসলিম)
(২৭)আল্লাহর পথে নিহত হওয়াই মুলত শাহীদ। কিন্তু
মুমিন ব্যক্তি সবসময় ঈমানের গন্ডির মধ্যে থাকার
চিন্তা থাকে, তাই যে কোন ভাল কাজ
করতে করতে মারা গেলে শাহীদের সাওয়াব পায়।
শাহীদের সাওয়াব পাওয়া এবং শাহীদ হওয়া এক
পর্যায়ে বলে গন্য নয়। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া আর
তাহাজ্জুদের নামাজের সাওয়াব পাওয়া অনেক
পার্থক্য। কোন কোন কর্ম অবস্থায়
মারা গেলে শাহীদের সাওয়াব পাওয়া যায়,
সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ﻋﻦ ﺍﻡ ﺣﺮﺍﻡ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻌﻢ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﺎﺋﺪ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﺤﺮ
ﺍﻟﺬﻱ ﻳﺼﻴﺒﻪ ﺍﻟﻘﻴﺊ ﻟﻪ ﺍﺟﺮ ﺷﻬﻴﺪ ﻭﺍﻟﻐﺮﻳﻖ ﻟﻪ ﺍﺟﺮ
ﺷﻬﻴﺪﻳﻦ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻮﺩﺍﻭﺩ
অনুবাদ :হযরত উম্মে হারাম (রাঃ) থেকে বর্নিত।
তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) থেকে। তিনি বলেন,
(সামুদ্রিক যুদ্ধে যেতে বা আসতে) সমুদ্রে যার
মাথা ঘুরে বমি আসে, সে একজন শাহীদের সাওয়াব
পায়। আর যে ডুবে মারা যায়, দুইজন শাহীদের
সাওয়াব পাবে।( আবু দাউদ)
ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ
ﻣﺎﺗﻌﺪﻭﻥ ﺍﻟﺸﻬﻴﺪ ﻓﻴﻜﻢ ﻗﺎﻟﻮﺍ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﻗﺘﻞ
ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻬﻮ ﺷﻬﻴﺪ ﻗﺎﻝ ﺍﻥ ﺷﻬﺪﺍﺀ ﺍﻣﺘﻲ ﺍﺫﺍ
ﻗﻠﻴﻞ ﻣﻦ ﻗﺘﻞ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻬﻮ ﺷﻬﻴﺪ ﻭﻣﻦ ﻣﺎﺕ
ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻬﻮ ﺷﻬﻴﺪ- ﻭﻣﻦ ﻣﺎﺕ ﻓﻲ ﺍﻟﻄﺎﻋﻮﻥ
ﻓﻬﻮ ﺷﻬﻴﺪ ﻭﻣﻦ ﻣﺎﺕ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻄﻦ ﻓﻬﻮ ﺷﻬﻴﺪ ﺭﻭﺍﻩ
দাবুনঅ
ﻣﺴﻠﻢ :হযরত আবু হুরইরা (রাঃ) থেকে বর্নিত।
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জিঙ্গাসা করেছেন,
তোমরা কাকে শাহীদ বলে গোনো?
তারা (সাহাবী (রাঃ)জবাব দেন, যারা আল্লাহর
পথে নিহত হয়, তাদেরকে শাহীদ গননা করি।
তিনি বলেন, আমার উম্মাতের শাহীদের
সংখ্যা তাহলে কম হয়ে গেল। যে ব্যক্তি আল্লাহর
পথে নিহত হয়, সে শাহীদ, আর যে আল্লাহর
পথে মৃত্যুবরন করে, সে শাহীদ।
যে ব্যক্তি প্লেগে (মহামারীতে)মৃত্যুবরন করে,
সে শাহীদ। আর যে ব্যক্তি পেটের রোগে মৃত্যুবরন
করে, সে শাহীদ। (সহীহ মুসলিম)
*** মৌলিক দিক দিয়ে শাহীদ তিন প্রকার। যথা
(১) ﺷﻬﻴﺪ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻭﺍﻻﺧﺮﺓ (দুনিয়া ও
আখিরাতে শাহীদ বলে গন্য)
*** দুনিয়াবী বা বৈষয়িক কোন লক্ষ্যে নয়, আল্লাহর
কালিমা বা বানী হওয়ার লক্ষ্যে,আল্লাহর দ্বীন
বিজয়ী করার লক্ষ্যে পলায়নকারী নয়,
অগ্রগামী অবস্থায় ইসলাম বিরুধী শক্তির
সাথে লড়াই করতে যেয়ে যে মুমিন নিহত হয়,
বা যে মুমিন আল্লাহর পথে মাজলুম অবস্থায় নিহত
হয়, সে "দুনিয়া ও আখিরাতে শাহীদ "
হিসাবে গন্য।
***এই শাহীদের দুনিয়াবী বিধান বা হুকুম হলো,
তাকে গোসল দেওয়া হবে না, তার সঙ্গের কাপড়
দিয়ে কাফন দিতে হবে, কাফনের উপযুক্ত নয়, এমন
জিনিষ তার সঙ্গে দিতে হবে না, কাফনের জন্য
প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাপড়
দেওয়া যাবে এবং জানাযা পড়ে মাটি দিতে হবে।
আখিরাতে রয়েছে (১)ঋন ছাড়া অন্যান্য গুনাহ
ক্ষমা। (২)ভয়াবহ ভয় থেকে নিরাপত্তা। (৩)মাথায়
এমন তাজ পরানো হবে,যার একেকটি ইয়াকুতের মুল্য
দুনিয়া ও তার মধ্যস্থিত সবকিছু থেকে অনেক বেশী।
(৪)বাহাত্তর জন সুন্দরী সাথী দেওয়া হবে।
(৫)পরিবারের সত্তর জনের ব্যপারে সুপারিশ কবুল
করা হবে। (৬)কবরের আযাব থেকে বাচানো হবে।
(৭)বিনা হিসাবে জান্নাত দেয়া হবে। ইত্যাদি ।
(২) ﺷﻬﻴﺪ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ (দুনিয়াতে শাহীদ বলে গন্য।
কিন্তু আখিরাতে শাহীদ বলে গন্য নয়।
*** ইসলাম বিরুধী শক্তির সাথে লড়াই করে ঠিকই।
কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নয় বরং সুনাম
অর্জনের জন্য, মানুষকে বাহাদুরী ও কৃতিত্ব
দেখানোর জন্য, দুনিয়ার কোন স্বার্থের জন্য, যেমন
গনীমাতের সম্পদের জন্য, চাকুরীর জন্য ও সম্মান ও
মর্যাদার জন্য।
দুনিয়ায় তার শাহীদ বলা হবে, গোসল
দেওয়া হবে না, রক্তাক্ত অবস্থায়
মাটি দেয়া হবে ইত্যাদি কাজ দুনিয়ায় শাহীদের
মত ব্যবহার করা হবে। কিন্তু আখিরাতে কিছুই
পাবে না জাহান্নাম ছাড়া।
(৩) ﺷﻬﻴﺪ ﻓﻲ ﺍﻻﺧﺮﺓ (আখিরাতে শাহীদ বলে গন্য
হবে। কিন্তু দুনিয়ায় শাহীদ বলে গন্য নয়।
*** যে মুমিন আল্লাহর পথে যুদ্ধের ময়দানে ইসলাম
বিরুধী শক্তির সাথে লড়াই করতে যেয়ে নিহত
হয়নি। তার মৃত্যুর কোন না কোন কারন আছে। তার
মর্যাদা সাধারন মৃত্যুবরনকারীর চেয়ে বেশী।
যেমন কঠিনভাবে মৃত্যুবরন কারী মুমিনগন।
উদাহরন স্বরুপ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আখিরাতে কয়েক
প্রকার শাহীদের বর্ননা দিয়েছেন। (ক) প্লেগে মৃত
ব্যক্তি (খ) পেটের রোগে মৃত ব্যক্তি (গ)
ডুবে মরা ব্যক্তি (ঘ) আগুনে জ্বলে মৃত ব্যক্তি (ঙ)
প্রসব বেদনায় মৃত ব্যক্তি ইত্যাদি।
আখিরাতে শাহীদ হওয়ার
অর্থ :তারা আখিরাতে শাহীদদের স্তরে থাকবে।
কিন্তু দুনিয়ায় তাদের উপর শাহীদের বিধান চালু
করা হবে না। বরং সাধারন মুসলমানের মত গোসল
দেওয়া হবে, নুতন কাফনের কাপড় দিয়ে কাফন
দেওয়া হবে,তাদেরকে ইসলামের
বিজয়ী করতে যারা শাহীদ হয়, তাদের
মর্যাদা দেয়া হবেনা, যদিও আখিরাতে আল্লাহর
নিকটে তাদের জন্য একপ্রকার শাহাদাতের
মর্যাদা আছে।
*** মুহাক্কিক কিছু আলিম শাহাদাত কে দুই
ভাগে ভাগ করেছেন। যথা (১)শাহাদাতে হাকীকী ও
(২)শাহাদাতে হুকমী। (চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়