মানবতার কান্ডারী রাসূলুল্লাহ সাঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মধ্যে বিশ্বমানবতার জন্য উত্তম আদর্শ
রয়েছে।
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার
(১০) বিশ্বমানবতাকে প্রেম,দয়া ও
ভালবাসার আদর্শ রয়েছে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর মধ্যে।
আল্লাহ তায়ালা হলেন বিশ্বের স্রষ্টা ও
মালিক। তিনি তাঁর সৃষ্টি ও
মালিকানাধীন ব্যক্তি ও বস্তুর
প্রতি অতীব দয়ালু। তাঁর দয়ার কোন
সীমা নির্ধারন করা সম্ভব নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সংকীর্ন চিন্তার
অধিকারী মানুষকে আল্লাহর দয়ার
ধারনা দেয়ার জন্য একটি উদাহরন
দিয়েছেন। আল্লাহর দয়া, প্রেম ও
ভালবাসাকে একশত ভাগের একভাগ
সারা পৃথিবীর সকল মানুষ-জিন, জীব-
জানোয়ার, পশু -পাখী, কীট -পতঙ্গ সকল
জীবের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছেন। এই
দয়ার কারনে মানুষের
মধ্যে স্বামী স্ত্রীকে, স্ত্রী স্বামীকে,
পিতা সন্তানকে, সন্তান পিতাকে,
মাতা সন্তানকে, সন্তান মাতাকে, ভাই
বোনকে ,বোন ভাইকে, বন্ধু বান্ধবীকে,
বান্ধবী বন্ধুকে, আত্মীয় আত্মীয়কে, একজন
আর একজনকে, সকল জীব
একে অপরকে ভালবাসে। সমস্ত সৃষ্টজীবের
একে অপরের প্রতি ভালবাসা আল্লাহর
দয়া ও ভালবাসার ১০০ ভাগের একভাগ
মাত্র। আর আল্লাহর একশত ভাগ ভালবাসা ও
দয়া তাহলে কেমন?
আল্লাহর শ্রেষ্ঠপ্রতিনিধি হলেন
বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ (সাঃ)। মালিক ও
প্রভুর গুন প্রতিনিধির
মধ্যে থাকা আবশ্যক। মালিক যেমন
মালিকানাধীন ব্যক্তি ও
বস্তুকে ভালবাসেন। ঠিক তেমনি মালিকের
প্রতিনিধি মালিকের মালিকানাধীন
ব্যক্তি ও বস্তুকে দয়া করবে ও ভালবাসবে।
তাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে আল্লাহ
তায়ালা বলেছেন,
ﺎﻣﻭ ﻻﺍ ﻙﺎﻨﻠﺳﺭﺍ ﺔﻤﺣﺭ ﻦﻴﻤﻟﺎﻌﻠﻟ
অনুবাদ : আর আমি (হে রাসূল (সাঃ)
তোমাকে প্রেরন করিনি বিশ্বের
জন্যে দয়ারুপে ছাড়া। (সূরা আল -আম্বিয়া,
আয়াত নং ) সারা বিশ্বের জন্য রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) হলেন দয়া ও অনুগ্রহ।
তিনি তিনি মুমিন-মুসলিম, কাফির -
মুশরিক-মুনাফিক, সকল জীব-জানোয়ার ও
নির্জীব পদার্থকে ভালবাসতেন।
*** তিনি বলেন, ﺪﺣﺍ ﺎﻨﺒﺤﻳ ﻭ ﻪﺒﺤﻧ অর্থ :
ওহুদ পাহাড় আমাদের ভালবাসে, আমরা ওহুদ
পাহাড়কে ভালবাসি। (সহীহ আল -বুখারী)
***আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, এক
পিপাসিত কুকুরকে মোজার
মধ্যে করে কুয়া থেকে পানি তুলে পান
করোরই কারনে এক পাপি মহিলাকে আল্লাহ
ক্ষমা করে দেন। (সহীহ আল -বুখারী)
কুকুর একটি জীব। রাসূলুলুল্লাহ (সাঃ)
বক্তব্য অনুযায়ী জীবের
পিপাসা মিটানো এমন ভাল কাজ,
যাতে অনেক অপরাধ ক্ষমা হয়ে থাকে। তাই
জীবে দয়া প্রদর্শনের কথা বলেছেন।
*** আল্লাহর রাসূল(সাঃ) বলেছেন,
একটি বিড়ালকে বেধে রাখায় (খেতেও
দেয়নি এবং খাওয়ার সুযোগও দেয়নি)
মারা যাওয়ার কারনে জাহান্নামে যাবে।
(সহীহ আল -বুখারী)
জাহান্নামে যাওয়ার ভয়ে জীবের
প্রতি দয়ার সৃষ্টি হবে।
সজীবকে বাচানোর চেষ্টা করবে।
*** মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ বিন উবাই
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে এবং ইসলাম
ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নিজের সমস্ত
শক্তি ব্যয় করেছে।
এব্যক্তি মারা গেলে তার পুত্রের
আবেদনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজের
জামা মুবারক আব্দুল্লাহ বিন উবাই এর
কাফন দেয়ার জন্য দিয়ে দেন।
পুত্রের আবেদনে জানাযার জন্য প্রস্তুত
হলে হযরত ওমার ফারুক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর কাপড় ধরে বলেন, আল্লাহ
আপনাকে যে কাজ করতে নিষেধ করেছেন,
সে কাজ করবেন? আল্লাহ বলেছেন,
ﻢﻬﻟﺮﻔﻐﺘﺳﺍ ﻥﺍ ﻢﻬﻟﺮﻔﻐﺘﺴﺗﻻﻭﺍ ﻢﻬﻟﺮﻔﻐﺘﺴﺗ
ﻦﻴﻌﺒﺳ ﻦﻠﻓ ﺓﺮﻣ ﻪﻠﻟﺍﺮﻔﻐﻳ ﻢﻬﻟ
অর্থ :তুমি তাদের (মুনাফিকদের) জন্য
ক্ষমা প্রার্থনা কর আর
ক্ষমা প্রার্থনা না কর। তুমি যদি তাদের
জন্য সত্তরবার ক্ষমা চাও তাহলে আল্লাহ
কখনো ক্ষমা করবেন না। (সূরা আত্ -তাওবা,
আয়াত নং)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আল্লাহ
আমাকে নিষেধ করেননি।
আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। সত্তর
বারের অধিক
ক্ষমা প্রার্থনা করলে যদি আল্লাহ
ক্ষমে করেন, তবে তাই করি।
তিনি উঠে জানাযা পড়ান
এবং তাকে কবরে নামানোর পর আবার বের
করে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মুখের মুবারক
লালা বরকত স্বিরুপ তার মুখে দিয়ে কবর
দেয়া হয়। আল্লাহ আয়াত অবতীর্ন
করে মুনাফিকদের জানাযা পড়তে নিষেধ
করেন এবং তাদের কবরের নিকট দাড়াতেও
নিষেধ করেন! আল্লাহ বলেন,
ﻞﺼﺗﻻﻭ ﺪﺣﺍ ﻲﻠﻋ ﻢﻬﻨﻣ ﺕﺎﻣ ﺍﺪﺑﺍ ﻻﻭ ﻢﻘﺗ ﻲﻠﻋ
ﻩﺮﺒﻗ
অর্থ আর(হে রাসুল) তুমি তাদের কেহ
মারা গেলে তার
জানাযা কখনো পড়বে না এবং তার কবরের
নিকট দাড়াবে না (সহীহ আল বুখারী)।
যে শীর্ষ মুনাফিক সারা জীবন
শত্রুতা করল, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
বিরুদ্ধে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ও
ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলো, তার
কাফনের জন্য জামা দিলেন, তার
জানাযা পড়ালেন এবং তার মুখে বরকতের
লালা দিলেন। এটা বিশ্বনাবীর শত্রুর
উপর অনুগ্রহ ও দয়ার প্রকাশ। এটাই তাঁর
আদর্শ।
*** যে তায়েফবাসী তিন
নেতাকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার
অপরাধে তাঁর শরীর পাথরের
আঘাতে রক্তাত্ব করলো, তাঁর শরীরের রক্ত
গড়িয়ে জুতায় শুকিয়ে পা জুতায় আটকে গেল,
অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালী দিল, লান্চিত-
অপদস্ত করে তায়েফ থেকে বিতাড়িত করলো!
তাঁকে বদদোয়া করতে বলা হয়, তারপর
ফেরেস্তারা আবেদন করেন, আপনি বললে,
তায়েফবাসীকে দুই পাশের পাহাড়
দিয়ে পরিশেষে ফেলা হবে। কিন্তু তাঁর
দয়ায় বাধা দিল। তিনি বলেন, হে আল্লাহ,
তুমি আমার জাতিকে হিদায়াত কর।
কেননা তারা অজ্ঞ। ফেরেস্তাদের বলেন,
তাদের জন্য রহমত স্বরুপ আমি প্রেরিত।
তারা হিদায়াত না পেলেও তাদের
সন্তানরা হিদায়াত পেতে পারে। অতএব
তাদের ধ্বংস করনা (বিদায়াহ অন
নিহায়াহ)
*** বদর যুদ্ধে বিজয়ী হলে সত্তরজন
কুরাইশ শত্রু বন্দী হয়। যারা মক্কায়
তাৃকে কঠিন নির্যাতন করতে থাকে, তাঁর
সাথীদের সাথেও তারা কঠিন নির্যাতন
মুলক ব্যবহার করে, তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত
নিয়ে হত্যার প্রস্তুতি নেয়, যাদের
কারনে হিজরাত করতে বাধ্য হন,
যারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে মুহাম্মাদ
(সাঃ) ও মুসলিম জাতিকে ধ্বংস
করতে এসে পাকড়াও হলো। রাসূলুল্লাহ
(সাঃ)তাদের কিছু মুক্তিপন
নিয়ে ছেড়ে দিলেন,
এজন্যে যে তারা পরে হিদায়াত
পেতে পারে। তারা হিদায়াত না পেলেও
তাদের সন্তানরা হিদায়াত পেতে পারে।
(সীরাতে ইবনে হিশাম)
*** মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
এর সামনে চরম অপরাধীরা দাড়িয়ে আছে!
তিনি ইচ্ছা করলে সকলকে ধ্বংস
করতে পারতেন। তারা সামাজিক চাপ
দিয়ে খাদ্য -শষ্যে বন্দ করে দেয়।
তারা তাঁর নামাজ রত অবস্থায় মরা উটের
নাড়ীভূড়ি চাপিয়ে দেয় তারা তাৃর গলায়
ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে,
তারা তাঁকে বিতাড়িত করার, লোহার
শিকলে বেধে আটকে মারার বা হত্যার
ষড়যন্ত্র করে। তাঁকে হত্যার জন্য ১০০
উটের ঘোষনা করে, তাদের সবাইকে ক্ষমার
ঘোষনা করলেন। (সীরাতে ইবআে হিশাম)
এটা তার চরম শত্রুর প্রতি দয়া নয়কি?তাঁর
দয়া যে কত প্রসস্ত, তা তাঁর সীরাত পাঠক
মাত্রই জানেন।
*** এক গ্রাম্য
ব্যক্তি মাসজিদে নববীতে এসে দাড়িয়ে পেশাব
করা শুরু করে!) সাহাবীগন তাকে পাকড়াও
করতে উদ্যত হলে তিনি পেশাব শেষ
না হওয়া পর্যন্ত বাধে দিতে নিষেধ
করেন। পেশাব শেষ
হলে তিনি বালতিতে পানি এনে পরিচ্ছন্ন
ও পবিত্র করতে বলেন এবং ঐ গ্রাম্য
ব্যক্তিকে সুন্দর বুঝিয়ে বললেন,
এটা আল্লাহর ঘর, ইবাদাত খানা।
এখানে পেশাব করা সমীচীন নয়।
সে ব্যক্তি খুব খুশরোজী হলো,
বুঝলো এবং ইসলাম গ্রহন করলো। (সহীহ. আল
-বুখারী)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বিশ্বের প্রতি দয়া ও
ভালাবাসায় আদর্শ ছিলেন। (চলবে)
মধ্যে বিশ্বমানবতার জন্য উত্তম আদর্শ
রয়েছে।
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার
(১০) বিশ্বমানবতাকে প্রেম,দয়া ও
ভালবাসার আদর্শ রয়েছে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর মধ্যে।
আল্লাহ তায়ালা হলেন বিশ্বের স্রষ্টা ও
মালিক। তিনি তাঁর সৃষ্টি ও
মালিকানাধীন ব্যক্তি ও বস্তুর
প্রতি অতীব দয়ালু। তাঁর দয়ার কোন
সীমা নির্ধারন করা সম্ভব নয়।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সংকীর্ন চিন্তার
অধিকারী মানুষকে আল্লাহর দয়ার
ধারনা দেয়ার জন্য একটি উদাহরন
দিয়েছেন। আল্লাহর দয়া, প্রেম ও
ভালবাসাকে একশত ভাগের একভাগ
সারা পৃথিবীর সকল মানুষ-জিন, জীব-
জানোয়ার, পশু -পাখী, কীট -পতঙ্গ সকল
জীবের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছেন। এই
দয়ার কারনে মানুষের
মধ্যে স্বামী স্ত্রীকে, স্ত্রী স্বামীকে,
পিতা সন্তানকে, সন্তান পিতাকে,
মাতা সন্তানকে, সন্তান মাতাকে, ভাই
বোনকে ,বোন ভাইকে, বন্ধু বান্ধবীকে,
বান্ধবী বন্ধুকে, আত্মীয় আত্মীয়কে, একজন
আর একজনকে, সকল জীব
একে অপরকে ভালবাসে। সমস্ত সৃষ্টজীবের
একে অপরের প্রতি ভালবাসা আল্লাহর
দয়া ও ভালবাসার ১০০ ভাগের একভাগ
মাত্র। আর আল্লাহর একশত ভাগ ভালবাসা ও
দয়া তাহলে কেমন?
আল্লাহর শ্রেষ্ঠপ্রতিনিধি হলেন
বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ (সাঃ)। মালিক ও
প্রভুর গুন প্রতিনিধির
মধ্যে থাকা আবশ্যক। মালিক যেমন
মালিকানাধীন ব্যক্তি ও
বস্তুকে ভালবাসেন। ঠিক তেমনি মালিকের
প্রতিনিধি মালিকের মালিকানাধীন
ব্যক্তি ও বস্তুকে দয়া করবে ও ভালবাসবে।
তাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে আল্লাহ
তায়ালা বলেছেন,
ﺎﻣﻭ ﻻﺍ ﻙﺎﻨﻠﺳﺭﺍ ﺔﻤﺣﺭ ﻦﻴﻤﻟﺎﻌﻠﻟ
অনুবাদ : আর আমি (হে রাসূল (সাঃ)
তোমাকে প্রেরন করিনি বিশ্বের
জন্যে দয়ারুপে ছাড়া। (সূরা আল -আম্বিয়া,
আয়াত নং ) সারা বিশ্বের জন্য রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) হলেন দয়া ও অনুগ্রহ।
তিনি তিনি মুমিন-মুসলিম, কাফির -
মুশরিক-মুনাফিক, সকল জীব-জানোয়ার ও
নির্জীব পদার্থকে ভালবাসতেন।
*** তিনি বলেন, ﺪﺣﺍ ﺎﻨﺒﺤﻳ ﻭ ﻪﺒﺤﻧ অর্থ :
ওহুদ পাহাড় আমাদের ভালবাসে, আমরা ওহুদ
পাহাড়কে ভালবাসি। (সহীহ আল -বুখারী)
***আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, এক
পিপাসিত কুকুরকে মোজার
মধ্যে করে কুয়া থেকে পানি তুলে পান
করোরই কারনে এক পাপি মহিলাকে আল্লাহ
ক্ষমা করে দেন। (সহীহ আল -বুখারী)
কুকুর একটি জীব। রাসূলুলুল্লাহ (সাঃ)
বক্তব্য অনুযায়ী জীবের
পিপাসা মিটানো এমন ভাল কাজ,
যাতে অনেক অপরাধ ক্ষমা হয়ে থাকে। তাই
জীবে দয়া প্রদর্শনের কথা বলেছেন।
*** আল্লাহর রাসূল(সাঃ) বলেছেন,
একটি বিড়ালকে বেধে রাখায় (খেতেও
দেয়নি এবং খাওয়ার সুযোগও দেয়নি)
মারা যাওয়ার কারনে জাহান্নামে যাবে।
(সহীহ আল -বুখারী)
জাহান্নামে যাওয়ার ভয়ে জীবের
প্রতি দয়ার সৃষ্টি হবে।
সজীবকে বাচানোর চেষ্টা করবে।
*** মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ বিন উবাই
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে এবং ইসলাম
ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে নিজের সমস্ত
শক্তি ব্যয় করেছে।
এব্যক্তি মারা গেলে তার পুত্রের
আবেদনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজের
জামা মুবারক আব্দুল্লাহ বিন উবাই এর
কাফন দেয়ার জন্য দিয়ে দেন।
পুত্রের আবেদনে জানাযার জন্য প্রস্তুত
হলে হযরত ওমার ফারুক (রাঃ) রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর কাপড় ধরে বলেন, আল্লাহ
আপনাকে যে কাজ করতে নিষেধ করেছেন,
সে কাজ করবেন? আল্লাহ বলেছেন,
ﻢﻬﻟﺮﻔﻐﺘﺳﺍ ﻥﺍ ﻢﻬﻟﺮﻔﻐﺘﺴﺗﻻﻭﺍ ﻢﻬﻟﺮﻔﻐﺘﺴﺗ
ﻦﻴﻌﺒﺳ ﻦﻠﻓ ﺓﺮﻣ ﻪﻠﻟﺍﺮﻔﻐﻳ ﻢﻬﻟ
অর্থ :তুমি তাদের (মুনাফিকদের) জন্য
ক্ষমা প্রার্থনা কর আর
ক্ষমা প্রার্থনা না কর। তুমি যদি তাদের
জন্য সত্তরবার ক্ষমা চাও তাহলে আল্লাহ
কখনো ক্ষমা করবেন না। (সূরা আত্ -তাওবা,
আয়াত নং)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আল্লাহ
আমাকে নিষেধ করেননি।
আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। সত্তর
বারের অধিক
ক্ষমা প্রার্থনা করলে যদি আল্লাহ
ক্ষমে করেন, তবে তাই করি।
তিনি উঠে জানাযা পড়ান
এবং তাকে কবরে নামানোর পর আবার বের
করে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মুখের মুবারক
লালা বরকত স্বিরুপ তার মুখে দিয়ে কবর
দেয়া হয়। আল্লাহ আয়াত অবতীর্ন
করে মুনাফিকদের জানাযা পড়তে নিষেধ
করেন এবং তাদের কবরের নিকট দাড়াতেও
নিষেধ করেন! আল্লাহ বলেন,
ﻞﺼﺗﻻﻭ ﺪﺣﺍ ﻲﻠﻋ ﻢﻬﻨﻣ ﺕﺎﻣ ﺍﺪﺑﺍ ﻻﻭ ﻢﻘﺗ ﻲﻠﻋ
ﻩﺮﺒﻗ
অর্থ আর(হে রাসুল) তুমি তাদের কেহ
মারা গেলে তার
জানাযা কখনো পড়বে না এবং তার কবরের
নিকট দাড়াবে না (সহীহ আল বুখারী)।
যে শীর্ষ মুনাফিক সারা জীবন
শত্রুতা করল, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
বিরুদ্ধে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ও
ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলো, তার
কাফনের জন্য জামা দিলেন, তার
জানাযা পড়ালেন এবং তার মুখে বরকতের
লালা দিলেন। এটা বিশ্বনাবীর শত্রুর
উপর অনুগ্রহ ও দয়ার প্রকাশ। এটাই তাঁর
আদর্শ।
*** যে তায়েফবাসী তিন
নেতাকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার
অপরাধে তাঁর শরীর পাথরের
আঘাতে রক্তাত্ব করলো, তাঁর শরীরের রক্ত
গড়িয়ে জুতায় শুকিয়ে পা জুতায় আটকে গেল,
অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালী দিল, লান্চিত-
অপদস্ত করে তায়েফ থেকে বিতাড়িত করলো!
তাঁকে বদদোয়া করতে বলা হয়, তারপর
ফেরেস্তারা আবেদন করেন, আপনি বললে,
তায়েফবাসীকে দুই পাশের পাহাড়
দিয়ে পরিশেষে ফেলা হবে। কিন্তু তাঁর
দয়ায় বাধা দিল। তিনি বলেন, হে আল্লাহ,
তুমি আমার জাতিকে হিদায়াত কর।
কেননা তারা অজ্ঞ। ফেরেস্তাদের বলেন,
তাদের জন্য রহমত স্বরুপ আমি প্রেরিত।
তারা হিদায়াত না পেলেও তাদের
সন্তানরা হিদায়াত পেতে পারে। অতএব
তাদের ধ্বংস করনা (বিদায়াহ অন
নিহায়াহ)
*** বদর যুদ্ধে বিজয়ী হলে সত্তরজন
কুরাইশ শত্রু বন্দী হয়। যারা মক্কায়
তাৃকে কঠিন নির্যাতন করতে থাকে, তাঁর
সাথীদের সাথেও তারা কঠিন নির্যাতন
মুলক ব্যবহার করে, তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত
নিয়ে হত্যার প্রস্তুতি নেয়, যাদের
কারনে হিজরাত করতে বাধ্য হন,
যারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে মুহাম্মাদ
(সাঃ) ও মুসলিম জাতিকে ধ্বংস
করতে এসে পাকড়াও হলো। রাসূলুল্লাহ
(সাঃ)তাদের কিছু মুক্তিপন
নিয়ে ছেড়ে দিলেন,
এজন্যে যে তারা পরে হিদায়াত
পেতে পারে। তারা হিদায়াত না পেলেও
তাদের সন্তানরা হিদায়াত পেতে পারে।
(সীরাতে ইবনে হিশাম)
*** মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
এর সামনে চরম অপরাধীরা দাড়িয়ে আছে!
তিনি ইচ্ছা করলে সকলকে ধ্বংস
করতে পারতেন। তারা সামাজিক চাপ
দিয়ে খাদ্য -শষ্যে বন্দ করে দেয়।
তারা তাঁর নামাজ রত অবস্থায় মরা উটের
নাড়ীভূড়ি চাপিয়ে দেয় তারা তাৃর গলায়
ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে,
তারা তাঁকে বিতাড়িত করার, লোহার
শিকলে বেধে আটকে মারার বা হত্যার
ষড়যন্ত্র করে। তাঁকে হত্যার জন্য ১০০
উটের ঘোষনা করে, তাদের সবাইকে ক্ষমার
ঘোষনা করলেন। (সীরাতে ইবআে হিশাম)
এটা তার চরম শত্রুর প্রতি দয়া নয়কি?তাঁর
দয়া যে কত প্রসস্ত, তা তাঁর সীরাত পাঠক
মাত্রই জানেন।
*** এক গ্রাম্য
ব্যক্তি মাসজিদে নববীতে এসে দাড়িয়ে পেশাব
করা শুরু করে!) সাহাবীগন তাকে পাকড়াও
করতে উদ্যত হলে তিনি পেশাব শেষ
না হওয়া পর্যন্ত বাধে দিতে নিষেধ
করেন। পেশাব শেষ
হলে তিনি বালতিতে পানি এনে পরিচ্ছন্ন
ও পবিত্র করতে বলেন এবং ঐ গ্রাম্য
ব্যক্তিকে সুন্দর বুঝিয়ে বললেন,
এটা আল্লাহর ঘর, ইবাদাত খানা।
এখানে পেশাব করা সমীচীন নয়।
সে ব্যক্তি খুব খুশরোজী হলো,
বুঝলো এবং ইসলাম গ্রহন করলো। (সহীহ. আল
-বুখারী)
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বিশ্বের প্রতি দয়া ও
ভালাবাসায় আদর্শ ছিলেন। (চলবে)
Comments
Post a Comment