আদর্শ পিতা হিসেবে রাসূলুল্লাহ সাঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মধ্যে বিশ্বমানবতার আদর্শ
রয়েছে "
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার
(১৩) আদর্শ পিতা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)।
পৃথিবীর মূখ দেখার প্রধান মাধ্যম হলো পিতা -মাতা।
মায়ের জরায়ুতে স্থিতি লাভের থেকেই পিতা-মাতার
দায়িত্ব শুরু হয়। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
ﻞﻛ ﺪﻟﻮﻳ ﺩﻮﻟﻮﻣ ﻲﻠﻋ ﺓﺮﻄﻔﻟﺍ ﻩﺍﻮﺑﺎﻓ ﻪﻧﺍﺩﻮﻬﻳ
ﻪﻧﺍﺮﺼﻨﻳﻭ ﻪﻧﺎﺴﺠﻤﻳﻭ ﺦﻟﺍ
অর্থ প্রত্যক সন্তান প্রকৃতির উপর জন্মগ্রহন
করে। তারপর পিতা -মাতা সন্তানকে ইয়াহুদী, খৃষ্টান
বা অগ্নি উপাসক বানায়, (মিশকাত) সন্তান
গড়ে ওঠার জন্য পিতা -মাতার বিরাট প্রভাব আছে।
পিতার -মাতা আদর্শস্থানীয় নাহলে সন্তান পরিবার
ও সন্তান ভালভাবে গড়ে ওঠে না। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আদর্শ পিতা ছিলেন। তাঁর ৪ কন্যা ও ৩ পুত্র ছিল।
কন্যাদের নাম যথাক্রমে (১)জয়নাব,(রাঃ)(২)রুকাইয়া,
(রাঃ) (৩)উম্মে কুলসুম (রাঃ)ও (৪)ফাতিমা (রাঃ)।
বদর যুদ্ধের পরপরই রুকাইয়া (রাঃ) ইন্তিকাল করেন।
উম্মে কুলসুম (রাঃ) ও যায়নাব (রাঃ) ৭ম ও ৮ম
হিজরীতে ইন্তিকাল করেন। ফাতিমা (রাঃ)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইন্তিকালের ছয় মাস পর ইন্তিকাল
করেন। পুত্র সন্তান ৩জন ছিলেন।(১) কাসিম (রাঃ)
(২)আবদুল্লাহ, (ত্বইয়েব, তাহির) (৩)ইবরাহীম। এই
তিনজনই রাসুলুল্লাহ (সা) এর জীবদ্দশায় ইন্তিকাল
করেন! রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আদর্শ স্থানীয়
পিতা ছিলেন। নিম্মে কিছু দিক তুলে ধরা হল।
(১)রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সন্তানদের ভালবাসতেন।
ﺲﻧﺍ ﻦﻋ ﻝﺎﻗ ﺽﺭ ﺎﻣ ﺍﺪﺣﺍ ﺖﻳﺍﺭ ﻢﺣﺭﺍ ﻥﺎﻛ ﻝﺎﻴﻌﻟﺎﺑ
ﻦﻣ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻥﺎﻛ ﻢﻌﻠﺻ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍ ﻪﻨﺑﺍ
ﻲﻟﺍﻮﻋ ﻲﻓ ﺎﻌﺿﺮﺘﺴﻣ ﺔﻨﻳﺪﻤﻟﺍ ﻥﺎﻜﻓ ﻖﻠﻄﻨﻳ
ﻪﻌﻣ ﻦﺤﻧﻭ ﻞﺧﺪﻴﻓ ﺖﻴﺒﻟﺍ ﻪﻧﺍﻭ ﻦﺧﺪﻴﻟ ﻥﺎﻛﻭ ﻩﺮﺌﻇ
ﺎﻨﻴﻗ ﻪﻠﺒﻘﻴﻓ ﻩﺬﺧﺎﻴﻓ ﻢﺛ ﻝﺎﻗ ﻊﺟﺮﻳ ﻭﺮﻤﻋ
ﻲﻓﻮﺗﺎﻤﻠﻓ ﻝﺎﻗ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻢﻌﻠﺻ ﻥﺍ
ﻢﺒﻫﺍﺮﺑﺍ ﻲﻨﺑﺍ ﻪﻧﺍﻭ ﻲﻓ ﺕﺎﻣ ﻱﺪﺜﻟﺍ ﻪﻟ ﻥﺍﻭ
ﻥﻼﻤﻜﺗ ﻦﻳﺮﺌﻈﻟ ﻲﻓ ﻪﻋﺎﺿﺭ ﺔﻨﺠﻟﺍ ﻩﺍﻭﺭ ﻢﻠﺴﻣ
অর্থ হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চেয়ে পরিবারের
প্রতি অধিক দয়ালু কাউকে দেখিনি। তাঁর পুত্র
ইবরাহীম (আঃ) মাদীনার পার্শবর্তী গ্রামের উচু
এলাকায় দুধ পান করতো। তাই তিনি যেতেন,
আমরা তাঁর সাথে থাকতাম। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ
করতেন। ঘরে ধুয়া আচ্ছন্ন হতো। তার দুধমা ছিলেন
কামার।তিনি তাকে নিয়ে চুম্বন করে ফিরে আসতেন।
রাবী আমর (রঃ) বলেন, তারপর ইবরাহীম (রঃ) যখন
মারা গেলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, নিশ্চয়
ইবরাহীম আমার পুত্র। সে আমার বক্ষের উপর
মারা গেছে, আর তার দুইজন দুধমা জান্নাতের
মধ্যে দুধপান করার সময় পূর্ন করবে। (সহীহ মুসলিম)
৮ম হিজরী সনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মারিয়া কিবতিয়ার ঘরে এক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন
করে। যার নাম ইবরাহীম। কোবা পল্লীর
দিকে মাদীনার পার্শবর্তী গ্রাম্য উচু এলাকায় দুধপান
করার জন্য রাখা হয়। সেখানে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আসা -যাওয়া করতেন। তাকে কোলে নিতেন, আদর
করতেন, চুম্বন করতেন। তাঁর মৃত্যুতে রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) ব্যথিত হন। চোখের পানি প্রবাহিত করেন!
এবং তিনি বলেন,
ﻚﻗﺍﺮﻔﻟ ﺎﻧﺍﻭ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍﺎﻳ ﻥﻮﻧﻭﺰﺤﻤﻟ
অর্থ আর হে ইবরাহীম, তোমার বিচ্ছেদে নিশ্চয়
আমরা দুঃখিত ও চিন্তিত।
সন্তানের প্রতি তাঁর ভালবাসা কেমন? তা অনুভব
করা যায়। তিনি আদর্শ পিতা।
ﻦﻋ ﻦﺑﺭﻮﺴﻤﻟﺍ ﻥﺍ ﺔﻣﺮﺨﻣ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻢﻌﻠﺻ ﻝﺎﻗ
ﺔﻌﻀﺑ ﻲﻨﻣ ﺪﻘﻓ ﺎﻬﻀﻐﺑﺍ ﻦﻤﻓ ﻲﻨﻀﻐﺑﺍ ﻲﻓﻭ
ﺔﻳﺍﻭﺭ ﻲﻨﺒﻳﺮﻳ ﺎﻬﺑﺍﺭﺍﺎﻣ ﻲﻨﻳﺫﻮﻳﻭ ﺎﻫﺍﺫﺍﺎﻣ ﻩﺍﻭﺭ
ﻢﻠﺴﻣﻭ ﻱﺭﺎﺨﺒﻟﺍ
অর্থ হযরত মিসওয়ার বিন মাখরামা (রাঃ)
থেকে বর্নিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
ফাতিমা আমার গোস্তের টুকরা।সুতারাং তাঁর
সাথে যে বিদ্বেষ পোশন করবে, সে আামার
সাথে বিদ্বেষ পোশন করবে।
অন্য বর্ননায় আছে, যে জিনিষ ফাতিমাকে অস্থির,
তা আমাকে অস্থির করে। আর যে জিনিষ তাকে কষ্ট
দেয়, তা আমাকে কষ্ট দেয়। (সহীহ আল -বুখারী ও
সহীহ মুসলিম)
ফাতিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কনিষ্ঠা কন্যা।
তাঁর সন্তানের প্রতি এত গভীর ভালবাসা যে,
সন্তানকে যে জিনিষ কষ্ট দেয়, তাঁকেও (রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) কেও) সে জিনিষ কষ্ট দেয়,
সন্তানকে যে জিনিষ অস্থির করে তোলে, তাঁকেও
সে জিনিষ অস্থির করে তোলে।হযরত ফাতিমা (রাঃ)
এর প্রতি বিদ্বেষ পোষন কারী রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
প্রতি বিদ্বেষ পোষনকারী বলে গন্য। রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) হলেন আদর্শ পিতা।
*** রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর এক পুত্র সন্তানের
মৃত্যুতে তিনি শোকাহত।
তাতে মুশরিকরা সমবেদনা প্রকাশ না করে,
আগুনে ঘি ঢালার মত তাঁর শোকের সাথে দুঃখ
বাড়ানোর জন্য সে লেজকাটা, তাঁর নাম স্মরন করার
মত লোক থাকবে না ইত্যাদি বলে তাঁর ব্যথা -
বেদানাকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যার
কারনে তাঁর সান্তনার জন্য আল্লাহ
তায়ালা সূরা আল -কাওসার অবতীর্ন করেন। আল্লাহ
তায়ালা বলেন,
ﺎﻧﺍ ﻙﺎﻨﺒﻄﻋﺍ ﺮﺛﻮﻜﻟﺍ ﻚﺑﺮﻟ ﻞﺼﻓ ﺮﺤﻧﺍﻭ ﻥﺍ ﻚﺌﻧﺎﺷ
ﻮﻫ ﺮﺘﺑﻻﺍ ()
অর্থ নিশ্চয় আমি তোমাকে বিপুল নিয়ামত দান
করেছি। অতএব তুমি তোমার জন্য নামাজ পড়
এবং কুরবানী কর। নিশ্চয় তোমার সাথে হিংসাকারী -
ই হল লেজকাটা। (সূরা আল -কাওসার)
মহান আল্লাহর শান্তনা দেওয়ার অর্থ সন্তানের
প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দরদ ও ভালবাসা অনেক
বেশী। সন্তানের মৃত্যুতে তিনি সাংঘাতিক শোকাহত।
মুশরিকরা এ সময় সমদুঃখে দুঃখিত. না হয়ে আনন্দ -
উল্লাস করায় তিনি আরো দুঃখিত ও শোকাহত হন।
তাই আল্লাহ তায়ালা তাঁর শান্তনার জন্য
সুরা কাওসার অবতীর্ন করেন। তিনি সন্তানদের
আদর্শ স্থানীয় ভালবাসতেন।
তবে সন্তানের ভালবাসা আল্লাহর ভালবাসার ও
আল্লেহর দ্নবীনের প্রতি ভালবাসার প্রতিবন্ধক
হতো না। বদরের যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
কন্যা রুকাইয়া (রাঃ) (হযরত ওসমান (রাঃ) এর স্ত্রী)
দারুন অসুস্থ থাকা সত্বেও যুদ্ধে যেতে বাধা হয়নি।
তিনি ওসমান (রাঃ) তার সেবার জন্য
বাড়ীতে রেখে যান। এই অসুস্থ অবস্থায়
রুকাইয়া (রাঃ) ইন্তিকাল করেন।(সহীহ আল -বুখারী)
তিনি সন্তানকে ভালবাসতেন। কিন্তু তা আল্লাহ ও
তার দ্বীন ভালবাসায় বাধা ও প্রতিবন্ধক ছিল না। এ
ভালবাসা আদর্শ স্থানীয় ভালবাসা।( চলবে)
রয়েছে "
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার
(১৩) আদর্শ পিতা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)।
পৃথিবীর মূখ দেখার প্রধান মাধ্যম হলো পিতা -মাতা।
মায়ের জরায়ুতে স্থিতি লাভের থেকেই পিতা-মাতার
দায়িত্ব শুরু হয়। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
ﻞﻛ ﺪﻟﻮﻳ ﺩﻮﻟﻮﻣ ﻲﻠﻋ ﺓﺮﻄﻔﻟﺍ ﻩﺍﻮﺑﺎﻓ ﻪﻧﺍﺩﻮﻬﻳ
ﻪﻧﺍﺮﺼﻨﻳﻭ ﻪﻧﺎﺴﺠﻤﻳﻭ ﺦﻟﺍ
অর্থ প্রত্যক সন্তান প্রকৃতির উপর জন্মগ্রহন
করে। তারপর পিতা -মাতা সন্তানকে ইয়াহুদী, খৃষ্টান
বা অগ্নি উপাসক বানায়, (মিশকাত) সন্তান
গড়ে ওঠার জন্য পিতা -মাতার বিরাট প্রভাব আছে।
পিতার -মাতা আদর্শস্থানীয় নাহলে সন্তান পরিবার
ও সন্তান ভালভাবে গড়ে ওঠে না। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আদর্শ পিতা ছিলেন। তাঁর ৪ কন্যা ও ৩ পুত্র ছিল।
কন্যাদের নাম যথাক্রমে (১)জয়নাব,(রাঃ)(২)রুকাইয়া,
(রাঃ) (৩)উম্মে কুলসুম (রাঃ)ও (৪)ফাতিমা (রাঃ)।
বদর যুদ্ধের পরপরই রুকাইয়া (রাঃ) ইন্তিকাল করেন।
উম্মে কুলসুম (রাঃ) ও যায়নাব (রাঃ) ৭ম ও ৮ম
হিজরীতে ইন্তিকাল করেন। ফাতিমা (রাঃ)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইন্তিকালের ছয় মাস পর ইন্তিকাল
করেন। পুত্র সন্তান ৩জন ছিলেন।(১) কাসিম (রাঃ)
(২)আবদুল্লাহ, (ত্বইয়েব, তাহির) (৩)ইবরাহীম। এই
তিনজনই রাসুলুল্লাহ (সা) এর জীবদ্দশায় ইন্তিকাল
করেন! রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আদর্শ স্থানীয়
পিতা ছিলেন। নিম্মে কিছু দিক তুলে ধরা হল।
(১)রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সন্তানদের ভালবাসতেন।
ﺲﻧﺍ ﻦﻋ ﻝﺎﻗ ﺽﺭ ﺎﻣ ﺍﺪﺣﺍ ﺖﻳﺍﺭ ﻢﺣﺭﺍ ﻥﺎﻛ ﻝﺎﻴﻌﻟﺎﺑ
ﻦﻣ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻥﺎﻛ ﻢﻌﻠﺻ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍ ﻪﻨﺑﺍ
ﻲﻟﺍﻮﻋ ﻲﻓ ﺎﻌﺿﺮﺘﺴﻣ ﺔﻨﻳﺪﻤﻟﺍ ﻥﺎﻜﻓ ﻖﻠﻄﻨﻳ
ﻪﻌﻣ ﻦﺤﻧﻭ ﻞﺧﺪﻴﻓ ﺖﻴﺒﻟﺍ ﻪﻧﺍﻭ ﻦﺧﺪﻴﻟ ﻥﺎﻛﻭ ﻩﺮﺌﻇ
ﺎﻨﻴﻗ ﻪﻠﺒﻘﻴﻓ ﻩﺬﺧﺎﻴﻓ ﻢﺛ ﻝﺎﻗ ﻊﺟﺮﻳ ﻭﺮﻤﻋ
ﻲﻓﻮﺗﺎﻤﻠﻓ ﻝﺎﻗ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻢﻌﻠﺻ ﻥﺍ
ﻢﺒﻫﺍﺮﺑﺍ ﻲﻨﺑﺍ ﻪﻧﺍﻭ ﻲﻓ ﺕﺎﻣ ﻱﺪﺜﻟﺍ ﻪﻟ ﻥﺍﻭ
ﻥﻼﻤﻜﺗ ﻦﻳﺮﺌﻈﻟ ﻲﻓ ﻪﻋﺎﺿﺭ ﺔﻨﺠﻟﺍ ﻩﺍﻭﺭ ﻢﻠﺴﻣ
অর্থ হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চেয়ে পরিবারের
প্রতি অধিক দয়ালু কাউকে দেখিনি। তাঁর পুত্র
ইবরাহীম (আঃ) মাদীনার পার্শবর্তী গ্রামের উচু
এলাকায় দুধ পান করতো। তাই তিনি যেতেন,
আমরা তাঁর সাথে থাকতাম। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ
করতেন। ঘরে ধুয়া আচ্ছন্ন হতো। তার দুধমা ছিলেন
কামার।তিনি তাকে নিয়ে চুম্বন করে ফিরে আসতেন।
রাবী আমর (রঃ) বলেন, তারপর ইবরাহীম (রঃ) যখন
মারা গেলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, নিশ্চয়
ইবরাহীম আমার পুত্র। সে আমার বক্ষের উপর
মারা গেছে, আর তার দুইজন দুধমা জান্নাতের
মধ্যে দুধপান করার সময় পূর্ন করবে। (সহীহ মুসলিম)
৮ম হিজরী সনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মারিয়া কিবতিয়ার ঘরে এক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন
করে। যার নাম ইবরাহীম। কোবা পল্লীর
দিকে মাদীনার পার্শবর্তী গ্রাম্য উচু এলাকায় দুধপান
করার জন্য রাখা হয়। সেখানে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আসা -যাওয়া করতেন। তাকে কোলে নিতেন, আদর
করতেন, চুম্বন করতেন। তাঁর মৃত্যুতে রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) ব্যথিত হন। চোখের পানি প্রবাহিত করেন!
এবং তিনি বলেন,
ﻚﻗﺍﺮﻔﻟ ﺎﻧﺍﻭ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍﺎﻳ ﻥﻮﻧﻭﺰﺤﻤﻟ
অর্থ আর হে ইবরাহীম, তোমার বিচ্ছেদে নিশ্চয়
আমরা দুঃখিত ও চিন্তিত।
সন্তানের প্রতি তাঁর ভালবাসা কেমন? তা অনুভব
করা যায়। তিনি আদর্শ পিতা।
ﻦﻋ ﻦﺑﺭﻮﺴﻤﻟﺍ ﻥﺍ ﺔﻣﺮﺨﻣ ﻝﻮﺳﺭ ﻪﻠﻟﺍ ﻢﻌﻠﺻ ﻝﺎﻗ
ﺔﻌﻀﺑ ﻲﻨﻣ ﺪﻘﻓ ﺎﻬﻀﻐﺑﺍ ﻦﻤﻓ ﻲﻨﻀﻐﺑﺍ ﻲﻓﻭ
ﺔﻳﺍﻭﺭ ﻲﻨﺒﻳﺮﻳ ﺎﻬﺑﺍﺭﺍﺎﻣ ﻲﻨﻳﺫﻮﻳﻭ ﺎﻫﺍﺫﺍﺎﻣ ﻩﺍﻭﺭ
ﻢﻠﺴﻣﻭ ﻱﺭﺎﺨﺒﻟﺍ
অর্থ হযরত মিসওয়ার বিন মাখরামা (রাঃ)
থেকে বর্নিত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
ফাতিমা আমার গোস্তের টুকরা।সুতারাং তাঁর
সাথে যে বিদ্বেষ পোশন করবে, সে আামার
সাথে বিদ্বেষ পোশন করবে।
অন্য বর্ননায় আছে, যে জিনিষ ফাতিমাকে অস্থির,
তা আমাকে অস্থির করে। আর যে জিনিষ তাকে কষ্ট
দেয়, তা আমাকে কষ্ট দেয়। (সহীহ আল -বুখারী ও
সহীহ মুসলিম)
ফাতিমা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কনিষ্ঠা কন্যা।
তাঁর সন্তানের প্রতি এত গভীর ভালবাসা যে,
সন্তানকে যে জিনিষ কষ্ট দেয়, তাঁকেও (রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) কেও) সে জিনিষ কষ্ট দেয়,
সন্তানকে যে জিনিষ অস্থির করে তোলে, তাঁকেও
সে জিনিষ অস্থির করে তোলে।হযরত ফাতিমা (রাঃ)
এর প্রতি বিদ্বেষ পোষন কারী রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
প্রতি বিদ্বেষ পোষনকারী বলে গন্য। রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) হলেন আদর্শ পিতা।
*** রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর এক পুত্র সন্তানের
মৃত্যুতে তিনি শোকাহত।
তাতে মুশরিকরা সমবেদনা প্রকাশ না করে,
আগুনে ঘি ঢালার মত তাঁর শোকের সাথে দুঃখ
বাড়ানোর জন্য সে লেজকাটা, তাঁর নাম স্মরন করার
মত লোক থাকবে না ইত্যাদি বলে তাঁর ব্যথা -
বেদানাকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যার
কারনে তাঁর সান্তনার জন্য আল্লাহ
তায়ালা সূরা আল -কাওসার অবতীর্ন করেন। আল্লাহ
তায়ালা বলেন,
ﺎﻧﺍ ﻙﺎﻨﺒﻄﻋﺍ ﺮﺛﻮﻜﻟﺍ ﻚﺑﺮﻟ ﻞﺼﻓ ﺮﺤﻧﺍﻭ ﻥﺍ ﻚﺌﻧﺎﺷ
ﻮﻫ ﺮﺘﺑﻻﺍ ()
অর্থ নিশ্চয় আমি তোমাকে বিপুল নিয়ামত দান
করেছি। অতএব তুমি তোমার জন্য নামাজ পড়
এবং কুরবানী কর। নিশ্চয় তোমার সাথে হিংসাকারী -
ই হল লেজকাটা। (সূরা আল -কাওসার)
মহান আল্লাহর শান্তনা দেওয়ার অর্থ সন্তানের
প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দরদ ও ভালবাসা অনেক
বেশী। সন্তানের মৃত্যুতে তিনি সাংঘাতিক শোকাহত।
মুশরিকরা এ সময় সমদুঃখে দুঃখিত. না হয়ে আনন্দ -
উল্লাস করায় তিনি আরো দুঃখিত ও শোকাহত হন।
তাই আল্লাহ তায়ালা তাঁর শান্তনার জন্য
সুরা কাওসার অবতীর্ন করেন। তিনি সন্তানদের
আদর্শ স্থানীয় ভালবাসতেন।
তবে সন্তানের ভালবাসা আল্লাহর ভালবাসার ও
আল্লেহর দ্নবীনের প্রতি ভালবাসার প্রতিবন্ধক
হতো না। বদরের যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
কন্যা রুকাইয়া (রাঃ) (হযরত ওসমান (রাঃ) এর স্ত্রী)
দারুন অসুস্থ থাকা সত্বেও যুদ্ধে যেতে বাধা হয়নি।
তিনি ওসমান (রাঃ) তার সেবার জন্য
বাড়ীতে রেখে যান। এই অসুস্থ অবস্থায়
রুকাইয়া (রাঃ) ইন্তিকাল করেন।(সহীহ আল -বুখারী)
তিনি সন্তানকে ভালবাসতেন। কিন্তু তা আল্লাহ ও
তার দ্বীন ভালবাসায় বাধা ও প্রতিবন্ধক ছিল না। এ
ভালবাসা আদর্শ স্থানীয় ভালবাসা।( চলবে)
Comments
Post a Comment