আল কুরআনে বর্ণিত মুমিনদের আদেশ নিষেধ ৫
আল -কুরআনে বর্নিত মুমিনদের আদেশ -
নিষেধ "
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার .
١٠٦،ﻣﺎﻧﻨﺴﺦ ﻣﻦ ﺍﻳﺔ ﺍﻭ ﻧﻨﺴﻬﺎ ﻧﺎﺕ ﺑﺨﻴﺮ ﻣﻨﻬﺎ ﺍﻭ ﻣﺜﻠﻬﺎ ﺍﻟﻢ
ﺗﻌﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻲ
ﻛﻞ ﺷﻴﺊ ﻗﺪﻳﺮ
١٠٧،ﺍﻟﻢ ﺗﻌﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ ﻣﻠﻚ ﺍﻟﺴﻤﻮﺍﺕ ﻭﺍﻻﺭﺽ ﻭﻣﺎﻟﻜﻢ ﻣﻦ
ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﻭﻟﻲ ﻭﻻﻧﺼﻴﺮ
অনুবাদ : (১০৬)আমি যে আয়াত রহিত
করি অথবা যা ভুলিয়ে দেই, তার
চেয়ে উত্তম অথবা তার সমতুল্য আয়াত
অবতীর্ন করি। তুমি কি জাননা যে,
আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান?
(১০৭) তুমি কি জাননা যে,আল্লাহ -রই
জন্য আসমান ও জমীনের রাজত্ব? আর
আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য না কোন
অবিভাবক আছে এবং না কোন
সাহায্যকারী আছে। (সূরা আল -
বাকারাহ)
★অবতীর্ন হওয়ার কারন : রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) পবিত্র মাক্কাহ ভুমি হিজরাত
করে পবিত্র মাদীনাহ ভুমিতে আগমন
করে আল্লাহর নির্দেশক্রমে বাইতুল
মুকাদ্দাসকে কিবলা করে ১৬/১৭ মাস
নামাজ আদায় করেন। এই কিবলার হুকুম
রহিত করে আল্লাহ পবিত্র
কাবাকে কিবলা নির্ধারন
করলে ইয়াহুদী ও মুশরিকরা তীব্র
সমালোচনা শুরু করে দেয়।
তারা বলে ,তোমরা কি দেখনা যে ,মুহাম্মাদ
তার সাথীদের একবার এক নির্দেশ দেয়।
আবার তার থেকে নিষেধ করে তার
বিপরিত নির্দেশ দেয়। আজ এক
কথা বলে। আবার. তার থেকে তার
পরের দিন প্রত্যাবর্তন করে। এই কোরআন
মুহাম্মাদের (সাঃ) বানী ছাড়া আর
কিছুই নয়। তিনি নিজের পক্ষ
থেকে বানিয়ে বানিয়ে বলেন।
উহা এমন বানী, পরস্পর বিরুধী। তখন এই
আয়াতদ্বয় অবতীর্ন হয়।
★নাসখের অর্থ :
নাসখের আভিধানিক অর্থ নকল করা,
কোন জিনিস থেকে আকৃতি দুর
করে অনুরুপ আকৃতি অন্য জিনিসের
মধ্যে রাখা। নাসখ শব্দ কখনো দুর
করা অর্থে। আবার
কখনো অন্যস্থানে রাখা অর্থে ব্যবহৃত হয়।
দুর করা অর্থে বলা হয়, ﻧﺴﺨﺖ ﺍﻟﺮﻳﺢ ﺍﻻﺛﺮ অর্থ
বাতাস চিহ্ন দূর করে দিয়েছে,
মুছে দিয়েছে। অন্য
স্থানে রাখা অর্থে বলা হয়, ﻧﺴﺨﺖ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ
অর্থ আমি কিতাবের অনুলিপি করেছি।
কিতাবে লেখার
চিহ্নগুলি অন্যস্থানে রেখেছি।
★শারীয়ার পরিভাষায় এক বিধান
রহিত করে অন্য বিধান
জারী করাকে নাসখ বলা হয়। এক বিধান
ও আইন নাসখ(রহিত) করে অন্যবিধান
জারী ও চালু তিনটি কারনে করা হয়।
(১) পরিস্থিতির ভূল
পর্যালোচনা করে কোন আইন -বিধান
রচনা করা হয়, পরে ভূল ধরা পড়ায় সেই
আইন -বিধান রহিত করে নুতন আইন
রচনা করা।
(২)ভবিষ্যতের জ্ঞান না থাকায় এক আইন
-বিধান রচনা করা হয়, পরে পরিবেশের
উপযোগী না হওয়ায় সে আইন -বিধান
নাসখ -রহিত করে অন্য আইন -বিধান
রচনা করা হয়!
(৩)অতীত -বর্তমান -ভবিষ্যত জ্ঞানের
অধিকারী জানেন যে, এই আইনের
মাধ্যমে এতদিন পর অবস্থার পরিবর্তন
ঘটবে, তখন ঐ আইন নাসখ-রহিত করে অন্য
নিদ্দিষ্ট আইন জারী করতে হবে। যেমন
ডাক্তার জানেন, এই রুগীর এই ঔষধের
মধ্যমে এতদিন পর এই পরিবর্তন
দেখা যাবে, তখন ঐ ঔষধ রহিত করে অন্য
এই ঔষধ দিতে হবে।
★প্রথম দুই প্রকার নাসখ বা রহিত করন
মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আল্লাহর
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আল্লাহর ভুল
পর্যালোচনা হতে পারে না, ভবিষ্যত
জানবেন না, তাও হতে পারে না।
তৃতীয় প্রকার নাসখ আল্লাহর জন্য
প্রযোজ্য।
★সকল ধর্মেবলম্বীরা আল্লাহর বিধান ও
আইন মানসূখ হওয়া সম্ভব
এবং বাস্তবে হয়েছে বলে স্বীকার
করে।
কিন্তু (১)ইয়াহুদীগন বলে, আল্লাহর
বিধান ও আইন মানসূখ -রহিত
হয়নি এবং মানসূখ -রহিত হওয়া সম্ভব না।
(২)অবশ্য খৃষ্টানরা আল্লাহর বিধান নাসখ
হওয়া সম্ভব এবং নাসখ
বাস্তবে হয়েছে বলে স্বীকার করে।
(৩)আবু মুসলিম আল -ইসপেহানী ও
মু'তাজিলারা বলেন, আল্লাহর বিধান
মানসূখ হওয়া সম্ভব।
তবে বাস্তবে আল্লাহর কোন বিধান
মানসূখ হয়নি।
(৪)মু'তাজিলারা ছাড়া সকল সাহাবী,
তাবিয়ী এবং প্রতি যুগের আলিমগন
আল্লাহর বিধান মানসূখ হওয়া সম্ভব
এবং বাস্তবে মানসূখ'
হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন।
প্রতি নাবীর (আঃ)
আগমনে পুর্ববর্তী নাবীর (আঃ) কিছু
না কিছু বিধান মানসূখ হয়েছে। তাই
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন,
ﻟﻢ ﺗﻜﻦ ﻧﺒﻮﺓ ﺍﻻ ﺗﻨﺎﺳﺨﺖ ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
অর্থ এমন কোন নাবুওয়াত ছিল না,
যা মানসূখ হয়নি। (সহীহ মুসলিম)
★মানসূখ বিধানের
প্রকৃতি নিয়ে পূর্ববর্তী ও
পরবর্তী আলিমদের ইখতিলাফ :
পূর্ববর্তী আলিমগনের মতে মুতলাক
(শর্তহীন)বিধানকে শর্ত যুক্ত করা, আম
(ব্যপক অর্থবোধক) বিধানকে খাচ
(নির্দিষ্ট) করা, প্রথম পরিপূর্ন বিধান
উৎখাৎ করে নুতন বিধান
দেয়া ইত্যাদি মানসূখ বলে গন্য।
এভাবে নাসখ গননা করলে মানসূখ
আয়াতের সংখ্যা পাঁচশত
আয়াতে পৌঁছায়।
নাসিখ ও মানসূখ আয়াতের
মধ্যে সামন্জস্যপূর্ণ
রক্ষা করে পরবর্তী আলিমগন মানসুখ
আয়াতের
সংখ্যা বিশে নামায়ে এনেছেন!
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রঃ) এ
কাজটি করেছেন। পরবর্তীতে শাহ
ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দিহলাবী (রঃ)
"আল -ফাওযুল কাবীরা ফী -উসূলিত -
তাফসীরে "বিশটি মানসূখ আয়াতের
মধ্যে সামন্জয্য রক্ষা করে মানসূখ
আয়াতের সংখ্যা পাঁচ -এ সীমাবদ্ধ
করেছেন।
★মানসূখের প্রকারভেদ : (1)তিলাওয়াত
মানসূখ কিন্তু হুকুম অবশিষ্ট। যেমন
ﺍﻟﺸﻴﺦ ﻭﺍﻟﺸﻴﺨﺔ ﺍﺫﺍ ﺯﻧﻴﺎ ﻓﺎﺭﺟﻤﻮﻫﻤﺎ ﻧﻜﺎﻻ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰﻳﺰ
ﺣﻜﻴﻢ
বিবাহিত ও বিবাহিতা যখন ব্যভিচার
করবে, তখন তোমরা তাদের
উভয়কে আল্লাহর পক্ষ
থেকে শাস্তি স্বরুপ প্রপ্তর নিক্ষেপ
করে মেরে ফেল। আল্লাহ
মহাপরাক্রমশালী,বিজ্ঞানময়। (সহীহ আল
বুখারী)
(2)হুকুম মানসূখ কিন্তু তিলাওয়াত অবশিষ্ট।
যেমন
ﻭﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺘﻮﻓﻮﻥ ﻣﻨﻜﻢ ﻭﻳﺬﺭﻭﻥ ﺍﺯﻭﺍﺟﺎ ﻭﺻﻴﺔ ﻻﺯﻭﺍﺟﻬﻢ ﻣﺘﺎﻋﺎ
ﺍﻟﻲ ﺍﻟﺤﻮﻝ
ﻏﻴﺮ ﺍﺧﺮﺍﺝ
অনুবাদ : আর যারা তোমাদের মধ্য
থেকে মারা যাবে এবং স্ত্রীদের
রেখে যাবে, তারা স্ত্রীদের জন্য
তাকীদপুর্ন নির্দেশ দিয়ে যাবে এক
বৎসর পর্যন্ত খরচ দেবে, বাড়ী থেকে বের
করে দেবে না। (সুরা আল বাকারা)
(3)তিলাওয়াত ও হুকুম উভয়টিই মানসূখ।
যেমন
ﺭﻭﻱ ﻣﺴﻠﻢ ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻣﻮﺳﻲ ﻛﻨﺎ ﻧﻘﺮﺍ ﺳﻮﺭﺓ ﻧﺸﺒﻬﻬﺎﻓﻲ ﺍﻟﻄﻮﻝ
ﻭﺍﻟﺸﺪﺓ ﺑﺒﺮﺍﺋﺔ ﺛﻢ ﺍﻧﺴﻴﺘﻬﺎ ﻏﻴﺮﺍﻧﻲ ﺣﻔﻈﺖ ﻣﻨﻬﺎ ﻟﻮﻛﺎﻥ ﻻﺑﻦ
ﺍﺩﻡ ﻭﺍﺩﻳﺎﻥ ﻣﻦ ﻣﺎﻝ ﻻﺑﺘﻐﻲ ﻭﺍﺩﻳﺎ ﺛﺎﻟﺜﺎ ﻭﻣﺎﻳﻤﻠﺊ ﺟﻮﻑ ﺍﺑﻦ
ﺍﺩﻡ ﺍﻻ ﺍﻟﺘﺮﺍﺏ .
অনুবাদ : ইমাম মুসলিম হযরত আবু
মুসা আশআরী (রাঃ)
থেকে বর্ননা করেছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা একটি সূরা পাঠ
করতাম, যা কাঠিন্য ও বড়ত্বের দিক
দিয়ে সূরা বারাআতের
সাথে তুলনা করতাম।
পরে উহা আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে এতটুকু
মনে আছে, আদম সন্তানের যদি দুই
উপত্যকা পরিমান সম্পদ হতো,
তাহলে সে তৃতীয় আর এক
উপত্যকা পরিমান সম্পদ অন্বেষন করতো।
আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া পুর্ন
হবে না।
আয়াতের বিধান রহিত করে বা পুর্ন
আয়াত ভুলিয়ে দিয়ে তার
পরিবর্তে অন্য আয়াত আয়াত অবতীর্ন
করেন। নাসিখ আয়াত মানসুখ আয়াতের
চেয়ে উত্তম বা সমতুল্য। শব্দের দিক
দিয়ে সমতুল্য বা উত্তম নয়। বরং কল্যানের
দিক দিয়ে ও সাওয়াবের দিক
দিয়ে উত্তম বা সমকক্ষ।
নিষেধ "
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার .
١٠٦،ﻣﺎﻧﻨﺴﺦ ﻣﻦ ﺍﻳﺔ ﺍﻭ ﻧﻨﺴﻬﺎ ﻧﺎﺕ ﺑﺨﻴﺮ ﻣﻨﻬﺎ ﺍﻭ ﻣﺜﻠﻬﺎ ﺍﻟﻢ
ﺗﻌﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻲ
ﻛﻞ ﺷﻴﺊ ﻗﺪﻳﺮ
١٠٧،ﺍﻟﻢ ﺗﻌﻠﻢ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ ﻣﻠﻚ ﺍﻟﺴﻤﻮﺍﺕ ﻭﺍﻻﺭﺽ ﻭﻣﺎﻟﻜﻢ ﻣﻦ
ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﻭﻟﻲ ﻭﻻﻧﺼﻴﺮ
অনুবাদ : (১০৬)আমি যে আয়াত রহিত
করি অথবা যা ভুলিয়ে দেই, তার
চেয়ে উত্তম অথবা তার সমতুল্য আয়াত
অবতীর্ন করি। তুমি কি জাননা যে,
আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান?
(১০৭) তুমি কি জাননা যে,আল্লাহ -রই
জন্য আসমান ও জমীনের রাজত্ব? আর
আল্লাহ ছাড়া তোমাদের জন্য না কোন
অবিভাবক আছে এবং না কোন
সাহায্যকারী আছে। (সূরা আল -
বাকারাহ)
★অবতীর্ন হওয়ার কারন : রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) পবিত্র মাক্কাহ ভুমি হিজরাত
করে পবিত্র মাদীনাহ ভুমিতে আগমন
করে আল্লাহর নির্দেশক্রমে বাইতুল
মুকাদ্দাসকে কিবলা করে ১৬/১৭ মাস
নামাজ আদায় করেন। এই কিবলার হুকুম
রহিত করে আল্লাহ পবিত্র
কাবাকে কিবলা নির্ধারন
করলে ইয়াহুদী ও মুশরিকরা তীব্র
সমালোচনা শুরু করে দেয়।
তারা বলে ,তোমরা কি দেখনা যে ,মুহাম্মাদ
তার সাথীদের একবার এক নির্দেশ দেয়।
আবার তার থেকে নিষেধ করে তার
বিপরিত নির্দেশ দেয়। আজ এক
কথা বলে। আবার. তার থেকে তার
পরের দিন প্রত্যাবর্তন করে। এই কোরআন
মুহাম্মাদের (সাঃ) বানী ছাড়া আর
কিছুই নয়। তিনি নিজের পক্ষ
থেকে বানিয়ে বানিয়ে বলেন।
উহা এমন বানী, পরস্পর বিরুধী। তখন এই
আয়াতদ্বয় অবতীর্ন হয়।
★নাসখের অর্থ :
নাসখের আভিধানিক অর্থ নকল করা,
কোন জিনিস থেকে আকৃতি দুর
করে অনুরুপ আকৃতি অন্য জিনিসের
মধ্যে রাখা। নাসখ শব্দ কখনো দুর
করা অর্থে। আবার
কখনো অন্যস্থানে রাখা অর্থে ব্যবহৃত হয়।
দুর করা অর্থে বলা হয়, ﻧﺴﺨﺖ ﺍﻟﺮﻳﺢ ﺍﻻﺛﺮ অর্থ
বাতাস চিহ্ন দূর করে দিয়েছে,
মুছে দিয়েছে। অন্য
স্থানে রাখা অর্থে বলা হয়, ﻧﺴﺨﺖ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ
অর্থ আমি কিতাবের অনুলিপি করেছি।
কিতাবে লেখার
চিহ্নগুলি অন্যস্থানে রেখেছি।
★শারীয়ার পরিভাষায় এক বিধান
রহিত করে অন্য বিধান
জারী করাকে নাসখ বলা হয়। এক বিধান
ও আইন নাসখ(রহিত) করে অন্যবিধান
জারী ও চালু তিনটি কারনে করা হয়।
(১) পরিস্থিতির ভূল
পর্যালোচনা করে কোন আইন -বিধান
রচনা করা হয়, পরে ভূল ধরা পড়ায় সেই
আইন -বিধান রহিত করে নুতন আইন
রচনা করা।
(২)ভবিষ্যতের জ্ঞান না থাকায় এক আইন
-বিধান রচনা করা হয়, পরে পরিবেশের
উপযোগী না হওয়ায় সে আইন -বিধান
নাসখ -রহিত করে অন্য আইন -বিধান
রচনা করা হয়!
(৩)অতীত -বর্তমান -ভবিষ্যত জ্ঞানের
অধিকারী জানেন যে, এই আইনের
মাধ্যমে এতদিন পর অবস্থার পরিবর্তন
ঘটবে, তখন ঐ আইন নাসখ-রহিত করে অন্য
নিদ্দিষ্ট আইন জারী করতে হবে। যেমন
ডাক্তার জানেন, এই রুগীর এই ঔষধের
মধ্যমে এতদিন পর এই পরিবর্তন
দেখা যাবে, তখন ঐ ঔষধ রহিত করে অন্য
এই ঔষধ দিতে হবে।
★প্রথম দুই প্রকার নাসখ বা রহিত করন
মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আল্লাহর
ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আল্লাহর ভুল
পর্যালোচনা হতে পারে না, ভবিষ্যত
জানবেন না, তাও হতে পারে না।
তৃতীয় প্রকার নাসখ আল্লাহর জন্য
প্রযোজ্য।
★সকল ধর্মেবলম্বীরা আল্লাহর বিধান ও
আইন মানসূখ হওয়া সম্ভব
এবং বাস্তবে হয়েছে বলে স্বীকার
করে।
কিন্তু (১)ইয়াহুদীগন বলে, আল্লাহর
বিধান ও আইন মানসূখ -রহিত
হয়নি এবং মানসূখ -রহিত হওয়া সম্ভব না।
(২)অবশ্য খৃষ্টানরা আল্লাহর বিধান নাসখ
হওয়া সম্ভব এবং নাসখ
বাস্তবে হয়েছে বলে স্বীকার করে।
(৩)আবু মুসলিম আল -ইসপেহানী ও
মু'তাজিলারা বলেন, আল্লাহর বিধান
মানসূখ হওয়া সম্ভব।
তবে বাস্তবে আল্লাহর কোন বিধান
মানসূখ হয়নি।
(৪)মু'তাজিলারা ছাড়া সকল সাহাবী,
তাবিয়ী এবং প্রতি যুগের আলিমগন
আল্লাহর বিধান মানসূখ হওয়া সম্ভব
এবং বাস্তবে মানসূখ'
হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন।
প্রতি নাবীর (আঃ)
আগমনে পুর্ববর্তী নাবীর (আঃ) কিছু
না কিছু বিধান মানসূখ হয়েছে। তাই
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন,
ﻟﻢ ﺗﻜﻦ ﻧﺒﻮﺓ ﺍﻻ ﺗﻨﺎﺳﺨﺖ ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
অর্থ এমন কোন নাবুওয়াত ছিল না,
যা মানসূখ হয়নি। (সহীহ মুসলিম)
★মানসূখ বিধানের
প্রকৃতি নিয়ে পূর্ববর্তী ও
পরবর্তী আলিমদের ইখতিলাফ :
পূর্ববর্তী আলিমগনের মতে মুতলাক
(শর্তহীন)বিধানকে শর্ত যুক্ত করা, আম
(ব্যপক অর্থবোধক) বিধানকে খাচ
(নির্দিষ্ট) করা, প্রথম পরিপূর্ন বিধান
উৎখাৎ করে নুতন বিধান
দেয়া ইত্যাদি মানসূখ বলে গন্য।
এভাবে নাসখ গননা করলে মানসূখ
আয়াতের সংখ্যা পাঁচশত
আয়াতে পৌঁছায়।
নাসিখ ও মানসূখ আয়াতের
মধ্যে সামন্জস্যপূর্ণ
রক্ষা করে পরবর্তী আলিমগন মানসুখ
আয়াতের
সংখ্যা বিশে নামায়ে এনেছেন!
আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রঃ) এ
কাজটি করেছেন। পরবর্তীতে শাহ
ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দিহলাবী (রঃ)
"আল -ফাওযুল কাবীরা ফী -উসূলিত -
তাফসীরে "বিশটি মানসূখ আয়াতের
মধ্যে সামন্জয্য রক্ষা করে মানসূখ
আয়াতের সংখ্যা পাঁচ -এ সীমাবদ্ধ
করেছেন।
★মানসূখের প্রকারভেদ : (1)তিলাওয়াত
মানসূখ কিন্তু হুকুম অবশিষ্ট। যেমন
ﺍﻟﺸﻴﺦ ﻭﺍﻟﺸﻴﺨﺔ ﺍﺫﺍ ﺯﻧﻴﺎ ﻓﺎﺭﺟﻤﻮﻫﻤﺎ ﻧﻜﺎﻻ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰﻳﺰ
ﺣﻜﻴﻢ
বিবাহিত ও বিবাহিতা যখন ব্যভিচার
করবে, তখন তোমরা তাদের
উভয়কে আল্লাহর পক্ষ
থেকে শাস্তি স্বরুপ প্রপ্তর নিক্ষেপ
করে মেরে ফেল। আল্লাহ
মহাপরাক্রমশালী,বিজ্ঞানময়। (সহীহ আল
বুখারী)
(2)হুকুম মানসূখ কিন্তু তিলাওয়াত অবশিষ্ট।
যেমন
ﻭﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺘﻮﻓﻮﻥ ﻣﻨﻜﻢ ﻭﻳﺬﺭﻭﻥ ﺍﺯﻭﺍﺟﺎ ﻭﺻﻴﺔ ﻻﺯﻭﺍﺟﻬﻢ ﻣﺘﺎﻋﺎ
ﺍﻟﻲ ﺍﻟﺤﻮﻝ
ﻏﻴﺮ ﺍﺧﺮﺍﺝ
অনুবাদ : আর যারা তোমাদের মধ্য
থেকে মারা যাবে এবং স্ত্রীদের
রেখে যাবে, তারা স্ত্রীদের জন্য
তাকীদপুর্ন নির্দেশ দিয়ে যাবে এক
বৎসর পর্যন্ত খরচ দেবে, বাড়ী থেকে বের
করে দেবে না। (সুরা আল বাকারা)
(3)তিলাওয়াত ও হুকুম উভয়টিই মানসূখ।
যেমন
ﺭﻭﻱ ﻣﺴﻠﻢ ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻣﻮﺳﻲ ﻛﻨﺎ ﻧﻘﺮﺍ ﺳﻮﺭﺓ ﻧﺸﺒﻬﻬﺎﻓﻲ ﺍﻟﻄﻮﻝ
ﻭﺍﻟﺸﺪﺓ ﺑﺒﺮﺍﺋﺔ ﺛﻢ ﺍﻧﺴﻴﺘﻬﺎ ﻏﻴﺮﺍﻧﻲ ﺣﻔﻈﺖ ﻣﻨﻬﺎ ﻟﻮﻛﺎﻥ ﻻﺑﻦ
ﺍﺩﻡ ﻭﺍﺩﻳﺎﻥ ﻣﻦ ﻣﺎﻝ ﻻﺑﺘﻐﻲ ﻭﺍﺩﻳﺎ ﺛﺎﻟﺜﺎ ﻭﻣﺎﻳﻤﻠﺊ ﺟﻮﻑ ﺍﺑﻦ
ﺍﺩﻡ ﺍﻻ ﺍﻟﺘﺮﺍﺏ .
অনুবাদ : ইমাম মুসলিম হযরত আবু
মুসা আশআরী (রাঃ)
থেকে বর্ননা করেছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা একটি সূরা পাঠ
করতাম, যা কাঠিন্য ও বড়ত্বের দিক
দিয়ে সূরা বারাআতের
সাথে তুলনা করতাম।
পরে উহা আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে এতটুকু
মনে আছে, আদম সন্তানের যদি দুই
উপত্যকা পরিমান সম্পদ হতো,
তাহলে সে তৃতীয় আর এক
উপত্যকা পরিমান সম্পদ অন্বেষন করতো।
আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া পুর্ন
হবে না।
আয়াতের বিধান রহিত করে বা পুর্ন
আয়াত ভুলিয়ে দিয়ে তার
পরিবর্তে অন্য আয়াত আয়াত অবতীর্ন
করেন। নাসিখ আয়াত মানসুখ আয়াতের
চেয়ে উত্তম বা সমতুল্য। শব্দের দিক
দিয়ে সমতুল্য বা উত্তম নয়। বরং কল্যানের
দিক দিয়ে ও সাওয়াবের দিক
দিয়ে উত্তম বা সমকক্ষ।
Comments
Post a Comment