আল্লাহ তা'য়ালার কাছে এত্তবার দু'আ করলাম। কিন্তু আমার দু'আ কবুল হচ্ছেনা কেন?

image

" আল্লাহ তা'য়ালার কাছে এত্তবার দু'আ
করলাম। কিন্তু আমার দু'আ কবুল হচ্ছেনা
কেন?"

মনে হয় আমার মধ্যে সবচেয়ে
বেশিবার উদ্ভূত হওয়া প্রশ্ন হল এটা। এই
প্রশ্নের জবাব তারিক মেহান্না (হাফি.)
একটি সুন্দর উদাহরণের মাধ্যমে দিয়েছেন। .
.
মনে করুন আপনি একটা কক্ষে বন্দী। মুক্তির একমাত্র উপায় জানালা ভেঙ্গে বের হওয়া, কিন্তু আপনার সম্বল শুধুমাত্র ছোট কিছু পাথরের টুকরো। আপনি জানালায় একটা ছোট পাথর ছুড়লেন। তাতে জানাল ভাঙ্গলো
না, কিন্তু খুব সুক্ষ্ম একটা ফাটল ধরলো।
আপনি আরেকটা পাথর ছুড়লেন। আরেকটা ছোট ফাটল। আপনি আবার একটা পাথর ছুড়ে
দিলেন, তারপর আরেকটি। তারপর আরেকটি। যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরো জানালা অসংখ্য সুক্ষ্ম ফাটলে ভরে গেছে।
.
শেষবারের মতো আপনি একটা পাথর ছুড়ে দিলেন এবং জানালার কাঁচ ভেঙ্গে গেলো।
এবং আপনি বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেলেন।
দু’আও এভাবেই কাজ করে। আপনি প্রতিটি দু’আর মাধ্যমে আংশিক জবাব পেতে থাকেন এবং আপনি ধৈর্য ও অবিচলতার সাথে একই দু’আ বারবার করার মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে শেষ পর্যন্ত দু’আর পরিপূর্ণ জবাব পাবেন।
.
এজন্যই গুহায় আটকে পড়া তিনজন ব্যক্তিকে নিয়ে যে অতি পরিচিত হাদীসটি আছে, সেখানে আমরা দেখতে পাই যে, প্রথম
ব্যক্তির দু’আর ফলে গুহামুখের পাথরটি
সামান্যই সরেছিলো। দ্বিতীয় ব্যক্তির দু’আর পর পাথরটি আর একটু সরলো। এবং তৃতীয়
ব্যক্তির দু’আর পরই তাঁরা তিনজন তাঁদের কাঙ্ক্ষিত ফল পেলেন - পাথরটি ওই পরিমাণে সরলো যার ফলে তাঁরা গুহা থেকে মুক্তি পেলেন।
.
মনে রাখবেন প্রথম পাথরটি শুধু একটি ফাটলই
ধরাবে। কিন্তু যদি আপনি পাথর ছুড়তে
থাকেন তাহলে এক সময় জানালা ভেঙ্গে
যাবে এবং আপনি মুক্ত হবেন। এর জন্য সময়ের প্রয়োজন। এই জন্যই হাদিসটিতে আমাদের
বলা হচ্ছে - “...যতক্ষণ পর্যন্ত সে অধৈর্য না হচ্ছে”
.
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) একটি হাদীসে এই
বিষয়ে বলেছেন। যদিও বুখারী ও মুসলিম - দু জায়গাতেই এই হাদীসটি আছে, তবে আমাদের আলোচনার জন্য মুসলিমের বর্ণনাটি
অধিকতর উপযুক্তঃ
.
“একজন ব্যক্তির দু’আর জবাব দেওয়া হতে থাকে - যদি সে অন্যায় অথবা হারাম কিছুর জন্য দু’আ না করে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করে – এবং যতক্ষণ পর্যন্ত সে তাড়াহুড়া না করে এবং অধৈর্য না হয়”।
.
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হলো
-“কিসের দ্বারা ব্যক্তি অধৈর্য হয়ে যাবে?”
.
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জবাব দিলেন – “সে বলবে আমি দু’আ করছি এবং করতেই থাকছি কিন্তু আমি দেখছি আমার দু’আর কোন জবাব দেওয়া
হচ্ছে না। এভাবে সে আশা হারিয়ে ফেলবে এবং আল্লাহ্-কে স্মরণ করা ছেড়ে দেবে”।
.
এই হাদীসটি বেশ কৌতূহলজনক এবং আমরা যদি গভীরভাবে হাদীসটি বুঝার চেষ্টা করি,
তাহলে কীভাবে দু’আ কাজ করে এবং
কীভাবে কাজ করে না – সে বিষয়ে আমরা অনেক কিছুই জানতে পারবো। একটু খেয়াল
করুন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কি ধরনের শব্দ
এখানে ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেছেনঃ
“... তাঁর দু’আর জবাব দেওয়া হতে থাকবে”।
.
একবার অধৈর্য ব্যক্তির অভিযোগের সাথেতুলনা করুন তো “আমি দেখছি আমার দু’আর
কোন জবাব দেওয়া হচ্ছে না”। আপাত
দৃষ্টিতে এই ব্যাপার দু’টো পরস্পর সাংঘর্ষিক মনে হতে পারে। এটা কীভাবে সম্ভব যে একজন ব্যক্তির দু’আর জবাব দেওয়া হতে থাকছে কিন্তু তাঁর কাছে মনে হচ্ছে সে কোন ফল পাচ্ছে না? দু’আর উত্তর কোথায়?
.
ব্যাপারটা হলো, অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের দু’আর জবাব একসাথে না এসে, ধাপে ধাপে আমাদের কাছে আসে। যেমন এমন কিছু হয়তো
ঘটবে যার মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছে যাবেন । কিন্তু আপনার কাছে মনে হচ্ছে আপনার দু’আর জবাব আসছে না।
.
একইভাবে আপনি জানেন, আল্লাহ্ আপনার
প্রতি তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করবেন এবং
আপনার দু’আর জবাব দেবেন - এটা সত্য। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে অলৌকিকভাবে দু’আর উত্তর পাওয়া নিয়মের ব্যতিক্রম, নিয়ম না। নিয়ম হলো আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাওয়া এবং
তাঁর কাছ থেকে এর উত্তর পাওয়ার প্রক্রিয়া সময় ও ধৈর্যের উপর নির্ভরশীল

copy from
~Tousif Bin Parves

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়