IF CHARACTER IS LOST, EVERYTHING IS LOST... চরিত্র নষ্ট তো সবই নষ্ট
IF CHARACTER IS LOST, EVERYTHING IS
LOST...

১)
পাশের রিকসাটা যাওয়ার সময় শব্দ শুনে তাকালাম,
ছেলেটা বাম হাতে মেয়েটার পিছনে কোমর
জড়িয়ে বসা। মেয়েটা সহসা আবেগে-আহলাদে
উথলে উঠে সামনের চুলগুলো পাশে সরিয়ে
দিলো। ওরা পিচ্চি পিচ্চি ছেলেমেয়ে, কলেজ পাশ
করেনি নিশ্চিত।
রিকসা জ্যামে বসে আছি। কৌনিক দুরত্বে রিকসায় এক
ছেলে দুই মেয়ে বসে। ছেলেটা উপরে
বসে দু'পায়ে প্রসারিত করে মাঝখানে একটা
মেয়েকে বসিয়েছে। ওদের রিকসায় বসা ও
আলাপের ধরণের গোটা বিষয়টাতে নোংরামি
ঠিকরে বের হচ্ছিলো। পাশের মানুষেরা তাদের
দিকে তাকালেও কারো ভ্রূক্ষেপ নাই।
সহ্য করা কঠিনই। পকেট থেকে মোবাইল বের
করে এটা-ওটা পড়তে লাগলাম। কী আর করা...
"ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুব, সাব্বিত কুলুবানা 'আলা দ্বীনিক"
(২)
একটু ভ্যাতলা ভ্যাতলা মিষ্টি কথা, জন্মতারিখ জানা,
আকাইম্মা বিষয় নিয়া আজাইরা প্যাচাল পাড়তে পারা আর
ফাস্টফুডের দোকানের বিলটা দিতে পারলেই
প্রেমিক হওয়া যায়। পটায়া পটায়া বহুত আকাম করা যায়।
চুলগুলা না আঁচড়ালে, একটু 'ক্যাজুয়াল লুক' নিতে
পারলে তো পোয়াবারো।
আধযুগ ধরে প্রেম করা পোলারে তাদের বিয়া
কবে হবে তা জিজ্ঞাসা করলে কয়, 'মামা অনেক
দায়িত্ব মামা। এখন আমি রেডি না, বাসাতেও রেডি না।
বিয়ে করলে তো লাইফ পুরা বদলায়া যাবে।'......
বিয়ের প্ল্যান নাই কিন্তু তারা ঠিকই বছর ধইরা রেগুলার
ফেসবুকের কমেন্টে কোলন স্টার মেরে
কমেন্টিং করে। এই রোমান্সে রোমাঞ্চিত বন্ধুরা
তাতে লাইকায়। ঢাকায় রেস্টুরেন্টে বসে, রিকসার
হুড তুলে প্রেম করে। ওয়াহ ওয়াহ!! এসব ড্যূড আর
চিক্সদের কাছ থেকে নতুন নতুন ঐশী সিরিজের
কাহিনী সৃষ্টির অপেক্ষা কেবল... মুক্তি কই?
(৩)
"ছেলের বয়স মাত্র ২৭। এখনই কীসের বিয়ে?"
-- আহাহা! মাত্র সাতাশ বছর। ছেলে তো শিশুই।
আজকাল তো ছেলেরা বড় থাকে যখন তার বয়স
১৭। ক্লাস ইলেভেন-টুয়েলভে পড়ে, তখন তারা
বড় থাকে, ফুটপাতে, রিকসায়, পার্কে কলেজ
ড্রেসপরা মেয়েদের সাথে শরীরের উত্তাপ
ভাগাভাগি করে। যে ছেলে এইসব দেখে
টেখে আরো ১০ বছর পার করে ফেলসে, সে
শিশু না তো কী? সে তো বড়ই হয় নাই। হইলে
কি আর এই দশা হইত? এই সমাজ অনেক অনেক
শিশুতে ভরে থাকুক।
এখনকার সময়ের প্রবাদ তাই বদলে গেছে :
If money is lost, everything is lost,
If health is lost, something is lost.
IF CHARACTER IS LOST, NOTHING IS LOST.
(৪)
বোন, সেজেগুজে একটা ছেলের চোখের
দৃষ্টি পাওয়া কিন্তু নিজেকে অপমান করা। একটা
ছেলে চোখ দিয়ে শরীরটাকে স্ক্যান করতে
থাকে, টের তো পাও, তাইনা? অসভ্য সমাজে
তোমার আপন ভাইও হয়ত কারো শরীরের দিকে
এভাবেই তাকায়। তাই বলে পুরুষরা খারাপ বলে গালি
দেবে? ভালো ছেলেও কিন্তু অনেক।
কিছু মেয়ে যেমন শরীরটাকে অন্যের কাছে
তুলে ধরে কারো কারো ফ্লার্টিং পাওয়ার আশায়,
অমন ছেলেরাও ওটাকেই ভালোবাসে। তাই সেই
অভ্যাসের বশেই ভালো মেয়েদেরকেও
চোখের শিকার বানায়। এখন তারা যেমন নোংরা,
আখিরাতেও এই নোংরাদের আল্লাহ আলাদা করেই
পাকড়াও করবেন।
বোন, তুমি সংযত হও। আল্লাহকে ভয় করো। এই
শরীরটাকে জাহান্নামের আগুণের কারণ করিয়ো না
বোন। আমি তোমাদের কাছে অনুরোধ করি,
আল্লাহকে স্মরণ করো, শরীরকে আবৃত
রাখো। তোমার ওই কমনীয় চামড়া এখন হয়ত
পুরুষের চোখ ঝলসে দিচ্ছে, একসময় আগুণ
এসে তা ঝলসে দিবে এমন যেন না হয়।
(৫)
ঢাকা শহরে চলার ফাঁকে দেখবেন রিকসার হুড তুলে
নোংরামি, ঝোপঝাড় পাওয়াই যায়না তবে পার্কে গাছ
পেলে তার নিচে ছেলেমেয়েদের
অননুমোদিত অন্তরঙ্গতার দৃশ্য, অথবা অকারণেই
মেয়ে বান্ধবীর শরীর ঘুরে স্পর্শ করে যাওয়া
ছেলেবন্ধুদের হাতগুলো যেখানে সেখানে--
এগুলো এই সমাজেরই দৃশ্য। এখন আপনি কান
পাতলেও যেন শুনতে পাবেন ছেলেবন্ধুদের
সাথে ঘুরতে বের হওয়া মেয়েদের মাঝে চাপা
কান্না। ফিজিক্যালি অ্যাবিউজ হওয়া বেশ সাদামাটা ঘটনা
হয়ে গেছে!
এসব ঘটনা নানান কারণে ঘটে। সব নিয়ে বলতে
চাওয়া, ভাবতে যাওয়া সম্ভব নয় আমার। আমার একটা
উপলব্ধি হলো, অজস্র ছেলেই সাধারণত
মেয়েদের প্রতি অত্যন্ত হীন ধারণা পোষণ
করে। ছেলেদের মাঝে মেয়েদের তুলনায়
পর্নগ্রাফির আসক্তি অনেক বেশি। যেসব
ছেলেরা গল্প-আড্ডায় মেয়েদের 'মাল' বলে,
নায়িকাদের শরীরের আলাপ করে, তাদের
চোখে মেয়েরা কমনীয় এক টুকরা মাংসপিন্ড। এরা
সচরাচর মেয়েদের 'বন্ধু' হতে চেয়ে তাদের
সাথে সময় দেয়।
মেয়েদের মাঝে নোংরা চিন্তাটা সচরাচর কম
থাকলেও, সেখানে অন্য এক ঘটনা। নিজেকে
আবৃতা রাখা, একটু কনজারভেটিভ থাকাকে পুরোনো
মনে করে ছেলেদের কাছে 'ফ্রি' হতে পারা,
ঘুরতে বের হওয়া ও ছেলেবন্ধু রাখা অনেকেই
'স্মার্টনেস' মনে করছে -- 'নারী স্বাধীনতা'
মার্কা কথা বলা ভোগবাদী প্রচারণা ও নাটক-সিনেমা-
সিরিয়ালের ফলে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনই কোমলমতি
মেয়েদের করছে শরীরকেন্দ্রিক এবং উগ্র।
সেই অল্প বন্ধুত্ব-আড্ডা দিয়ে শুরু হয়ে শরীর
দিয়ে শেষ করে অনেক অনেক মেয়েই।
কষ্টকর কথা হলো, এরা ভুল করে, ভুল করে
ভুগে, এরাই চরমমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ভুগে
তাদের পরিবার। এভাবে কামুক ছেলেদের কাছে
'ইউজড' হওয়াটার পেছনে একটা ছোট্ট ভুল চিন্তাই
যেন অনেকক্ষেত্রে সূচনা করে দেয়।
শারীরিক সম্পর্ককে ডালভাত করে ফেলার বিষয়টা
সচরাচর অল্পতে শুরু হয়। পাপ করতে করতে
একসময় নিজেকে নিজের কাছে যখন
অন্যায়কারী মনে হয়, তখন ছেলেমেয়েরা সব
ভুলে স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়, কোথা থেকে
কোথায় যায় টের পায়না। অথচ আল্লাহ বান্দা ভুল
বুঝে পাহাড় সমান পাপ নিয়ে তাওবা করলেও তিনি
তাকে ক্ষমা করবেন। ছেলেমেয়েদের উচিৎ
তারা যে ভুলই করুক না কেন, তাওবা করে আল্লাহর
কাছে ক্ষমা চাওয়া। তিনি মাফ করলে তো পৃথিবীর
মানুষদের কথা ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। যারা
পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাদের উপায় করে
দেন। তবে নিঃসন্দেহে দুনিয়ার চেয়ে আখিরাত
উত্তম স্থান। একটু হয়ত কষ্টই হবে পুরোনো
জীবন ফেলে আসতে, কিন্তু তাদের ভবিষ্যত
অনেক সুন্দর হবে ইনশাআল্লাহ।
আমরা সুন্দর ও পবিত্র সম্পর্কের সমাজের
প্রত্যাশায় করি সবসময়...
(৬)
এই নব্য টাকাওয়ালা ছেলেটার রূপসী-যুবতী বউটা
যদি জানতো ঐ ছেলেটা ভার্সিটি লাইফে
মেয়েদের নিয়ে কেমন কথা বলত, ছেলেটা
ক্যাম্পাসের মেয়েদেরকে কী সব 'সম্মানসূচক'
'শব্দ দিয়ে সম্বোধন করতো যা
দেহজীবীদেরকে করা হয়, মোড়ের চায়ের
দোকানে বসে সামনে দিয়ে মেয়েদের নিয়ে
কোন রিকসা গেলে আরোহীদের শরীরের
অঙ্গপরিমাপক শব্দগুলো মুখ দিয়ে বের করে
চারপাশের সবাইকে ঝলসে দিতো, রাতের বেলা
রতিকলার মেয়েদের চলচ্চিত্র দেখে দিনের
বেলা আলাপ করত বন্ধুদের সামনে...
তখনো ছেলেটাকে 'তত্ত্বকথা' শুনিয়েছিলো
কিছু মানুষ, কিন্তু তার কাছে সেসব কথার দাম ছিলো
না। পরেও কখনো ভালো করে জানা যায়নি রিকসায়
চড়ে যাওয়া মেয়েদেরকে তাদের শরীর নিয়ে
'প্রশংসা বাণী' শোনানোর কারণে কখনো ক্ষমা
চেয়েছিলো কিনা। বরং, চাকুরিতে এসে মেয়ে
কলিগদের পাশে তার দন্ত-বিকশিত হাসিমাখা ছবি
অনলাইনে দেখা যেত। গল্পের আড্ডায় কোন
মেয়ে 'সেইরকম মাল' সেই বিষয়টা সবাইকে
জানিয়ে দিতো।
কয়েক বছর পেরিয়ে গেলো। এখন, নতুন
যুবতী বউয়ের স্বামী ছেলেটি এখন মাল্টি
ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করে। টাকার প্রবাহ
বেশ ভালোই। তারা দু'জনে মিলে দাঁত কেলিয়ে
ছবি তুলে, এখানে ওখানে ঘুরে নতুন অ্যালবাম
করে ছবি ফেবুতে আপলোড করে। মধুচন্দ্রিমার
বিশেষ অ্যালবামে স্বল্প পোশাকে সমুদ্রতীরে
তোলা ছবিগুলো ফেসবুকে দিয়ে বন্ধুদের
'কিউট কাপল', 'খুব নাইস লাগছে', 'সেইরকম জোস
লাগতেছে', 'নাইস কাপল, 'মেড ফর ইচ আদার'
টাইপের কমেন্টের ফুলঝুরি পেয়ে 'দাম্পত্য'
জীবনকে সফলতায় ভরে দিয়েছে।
অথচ, ছেলেটার মন তো মনে হয় বদলায় নাই,
তাইনা? চিন্তাভাবনা দৃষ্টিভঙ্গি অন্তরের ভিতরেই
আছে, আগের মতই... এই মেয়েতে ক'দিন
মজে থাকবে ও? মেয়েদের নিয়ে এত এত
আপত্তিকর বাক্যগুলো তো এই অন্তর থেকেই
বের হয়েছিল, যা এখনো আছে। ক'দিন পর যখন
যুবতী বৌয়ের সাথে ঝগড়া লাগবে, তাদের এই
প্রেম কেমন থাকবে তখন? ছেলেটি ক্ষেপে
গেলে যদি আগের সেই শব্দগুলো ব্যবহার
করে, নবপরিণীতা স্ত্রীর সম্ভ্রম আর সম্মান কিছু
থাকবে? এই রূচিকেও কি মেয়েটা মেনে নিবে?
( সংকলিত )
এসো আলোর পথে
LOST...

১)
পাশের রিকসাটা যাওয়ার সময় শব্দ শুনে তাকালাম,
ছেলেটা বাম হাতে মেয়েটার পিছনে কোমর
জড়িয়ে বসা। মেয়েটা সহসা আবেগে-আহলাদে
উথলে উঠে সামনের চুলগুলো পাশে সরিয়ে
দিলো। ওরা পিচ্চি পিচ্চি ছেলেমেয়ে, কলেজ পাশ
করেনি নিশ্চিত।
রিকসা জ্যামে বসে আছি। কৌনিক দুরত্বে রিকসায় এক
ছেলে দুই মেয়ে বসে। ছেলেটা উপরে
বসে দু'পায়ে প্রসারিত করে মাঝখানে একটা
মেয়েকে বসিয়েছে। ওদের রিকসায় বসা ও
আলাপের ধরণের গোটা বিষয়টাতে নোংরামি
ঠিকরে বের হচ্ছিলো। পাশের মানুষেরা তাদের
দিকে তাকালেও কারো ভ্রূক্ষেপ নাই।
সহ্য করা কঠিনই। পকেট থেকে মোবাইল বের
করে এটা-ওটা পড়তে লাগলাম। কী আর করা...
"ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুব, সাব্বিত কুলুবানা 'আলা দ্বীনিক"
(২)
একটু ভ্যাতলা ভ্যাতলা মিষ্টি কথা, জন্মতারিখ জানা,
আকাইম্মা বিষয় নিয়া আজাইরা প্যাচাল পাড়তে পারা আর
ফাস্টফুডের দোকানের বিলটা দিতে পারলেই
প্রেমিক হওয়া যায়। পটায়া পটায়া বহুত আকাম করা যায়।
চুলগুলা না আঁচড়ালে, একটু 'ক্যাজুয়াল লুক' নিতে
পারলে তো পোয়াবারো।
আধযুগ ধরে প্রেম করা পোলারে তাদের বিয়া
কবে হবে তা জিজ্ঞাসা করলে কয়, 'মামা অনেক
দায়িত্ব মামা। এখন আমি রেডি না, বাসাতেও রেডি না।
বিয়ে করলে তো লাইফ পুরা বদলায়া যাবে।'......
বিয়ের প্ল্যান নাই কিন্তু তারা ঠিকই বছর ধইরা রেগুলার
ফেসবুকের কমেন্টে কোলন স্টার মেরে
কমেন্টিং করে। এই রোমান্সে রোমাঞ্চিত বন্ধুরা
তাতে লাইকায়। ঢাকায় রেস্টুরেন্টে বসে, রিকসার
হুড তুলে প্রেম করে। ওয়াহ ওয়াহ!! এসব ড্যূড আর
চিক্সদের কাছ থেকে নতুন নতুন ঐশী সিরিজের
কাহিনী সৃষ্টির অপেক্ষা কেবল... মুক্তি কই?
(৩)
"ছেলের বয়স মাত্র ২৭। এখনই কীসের বিয়ে?"
-- আহাহা! মাত্র সাতাশ বছর। ছেলে তো শিশুই।
আজকাল তো ছেলেরা বড় থাকে যখন তার বয়স
১৭। ক্লাস ইলেভেন-টুয়েলভে পড়ে, তখন তারা
বড় থাকে, ফুটপাতে, রিকসায়, পার্কে কলেজ
ড্রেসপরা মেয়েদের সাথে শরীরের উত্তাপ
ভাগাভাগি করে। যে ছেলে এইসব দেখে
টেখে আরো ১০ বছর পার করে ফেলসে, সে
শিশু না তো কী? সে তো বড়ই হয় নাই। হইলে
কি আর এই দশা হইত? এই সমাজ অনেক অনেক
শিশুতে ভরে থাকুক।
এখনকার সময়ের প্রবাদ তাই বদলে গেছে :
If money is lost, everything is lost,
If health is lost, something is lost.
IF CHARACTER IS LOST, NOTHING IS LOST.
(৪)
বোন, সেজেগুজে একটা ছেলের চোখের
দৃষ্টি পাওয়া কিন্তু নিজেকে অপমান করা। একটা
ছেলে চোখ দিয়ে শরীরটাকে স্ক্যান করতে
থাকে, টের তো পাও, তাইনা? অসভ্য সমাজে
তোমার আপন ভাইও হয়ত কারো শরীরের দিকে
এভাবেই তাকায়। তাই বলে পুরুষরা খারাপ বলে গালি
দেবে? ভালো ছেলেও কিন্তু অনেক।
কিছু মেয়ে যেমন শরীরটাকে অন্যের কাছে
তুলে ধরে কারো কারো ফ্লার্টিং পাওয়ার আশায়,
অমন ছেলেরাও ওটাকেই ভালোবাসে। তাই সেই
অভ্যাসের বশেই ভালো মেয়েদেরকেও
চোখের শিকার বানায়। এখন তারা যেমন নোংরা,
আখিরাতেও এই নোংরাদের আল্লাহ আলাদা করেই
পাকড়াও করবেন।
বোন, তুমি সংযত হও। আল্লাহকে ভয় করো। এই
শরীরটাকে জাহান্নামের আগুণের কারণ করিয়ো না
বোন। আমি তোমাদের কাছে অনুরোধ করি,
আল্লাহকে স্মরণ করো, শরীরকে আবৃত
রাখো। তোমার ওই কমনীয় চামড়া এখন হয়ত
পুরুষের চোখ ঝলসে দিচ্ছে, একসময় আগুণ
এসে তা ঝলসে দিবে এমন যেন না হয়।
(৫)
ঢাকা শহরে চলার ফাঁকে দেখবেন রিকসার হুড তুলে
নোংরামি, ঝোপঝাড় পাওয়াই যায়না তবে পার্কে গাছ
পেলে তার নিচে ছেলেমেয়েদের
অননুমোদিত অন্তরঙ্গতার দৃশ্য, অথবা অকারণেই
মেয়ে বান্ধবীর শরীর ঘুরে স্পর্শ করে যাওয়া
ছেলেবন্ধুদের হাতগুলো যেখানে সেখানে--
এগুলো এই সমাজেরই দৃশ্য। এখন আপনি কান
পাতলেও যেন শুনতে পাবেন ছেলেবন্ধুদের
সাথে ঘুরতে বের হওয়া মেয়েদের মাঝে চাপা
কান্না। ফিজিক্যালি অ্যাবিউজ হওয়া বেশ সাদামাটা ঘটনা
হয়ে গেছে!
এসব ঘটনা নানান কারণে ঘটে। সব নিয়ে বলতে
চাওয়া, ভাবতে যাওয়া সম্ভব নয় আমার। আমার একটা
উপলব্ধি হলো, অজস্র ছেলেই সাধারণত
মেয়েদের প্রতি অত্যন্ত হীন ধারণা পোষণ
করে। ছেলেদের মাঝে মেয়েদের তুলনায়
পর্নগ্রাফির আসক্তি অনেক বেশি। যেসব
ছেলেরা গল্প-আড্ডায় মেয়েদের 'মাল' বলে,
নায়িকাদের শরীরের আলাপ করে, তাদের
চোখে মেয়েরা কমনীয় এক টুকরা মাংসপিন্ড। এরা
সচরাচর মেয়েদের 'বন্ধু' হতে চেয়ে তাদের
সাথে সময় দেয়।
মেয়েদের মাঝে নোংরা চিন্তাটা সচরাচর কম
থাকলেও, সেখানে অন্য এক ঘটনা। নিজেকে
আবৃতা রাখা, একটু কনজারভেটিভ থাকাকে পুরোনো
মনে করে ছেলেদের কাছে 'ফ্রি' হতে পারা,
ঘুরতে বের হওয়া ও ছেলেবন্ধু রাখা অনেকেই
'স্মার্টনেস' মনে করছে -- 'নারী স্বাধীনতা'
মার্কা কথা বলা ভোগবাদী প্রচারণা ও নাটক-সিনেমা-
সিরিয়ালের ফলে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনই কোমলমতি
মেয়েদের করছে শরীরকেন্দ্রিক এবং উগ্র।
সেই অল্প বন্ধুত্ব-আড্ডা দিয়ে শুরু হয়ে শরীর
দিয়ে শেষ করে অনেক অনেক মেয়েই।
কষ্টকর কথা হলো, এরা ভুল করে, ভুল করে
ভুগে, এরাই চরমমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ভুগে
তাদের পরিবার। এভাবে কামুক ছেলেদের কাছে
'ইউজড' হওয়াটার পেছনে একটা ছোট্ট ভুল চিন্তাই
যেন অনেকক্ষেত্রে সূচনা করে দেয়।
শারীরিক সম্পর্ককে ডালভাত করে ফেলার বিষয়টা
সচরাচর অল্পতে শুরু হয়। পাপ করতে করতে
একসময় নিজেকে নিজের কাছে যখন
অন্যায়কারী মনে হয়, তখন ছেলেমেয়েরা সব
ভুলে স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়, কোথা থেকে
কোথায় যায় টের পায়না। অথচ আল্লাহ বান্দা ভুল
বুঝে পাহাড় সমান পাপ নিয়ে তাওবা করলেও তিনি
তাকে ক্ষমা করবেন। ছেলেমেয়েদের উচিৎ
তারা যে ভুলই করুক না কেন, তাওবা করে আল্লাহর
কাছে ক্ষমা চাওয়া। তিনি মাফ করলে তো পৃথিবীর
মানুষদের কথা ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। যারা
পবিত্র থাকতে চায়, আল্লাহ তাদের উপায় করে
দেন। তবে নিঃসন্দেহে দুনিয়ার চেয়ে আখিরাত
উত্তম স্থান। একটু হয়ত কষ্টই হবে পুরোনো
জীবন ফেলে আসতে, কিন্তু তাদের ভবিষ্যত
অনেক সুন্দর হবে ইনশাআল্লাহ।
আমরা সুন্দর ও পবিত্র সম্পর্কের সমাজের
প্রত্যাশায় করি সবসময়...
(৬)
এই নব্য টাকাওয়ালা ছেলেটার রূপসী-যুবতী বউটা
যদি জানতো ঐ ছেলেটা ভার্সিটি লাইফে
মেয়েদের নিয়ে কেমন কথা বলত, ছেলেটা
ক্যাম্পাসের মেয়েদেরকে কী সব 'সম্মানসূচক'
'শব্দ দিয়ে সম্বোধন করতো যা
দেহজীবীদেরকে করা হয়, মোড়ের চায়ের
দোকানে বসে সামনে দিয়ে মেয়েদের নিয়ে
কোন রিকসা গেলে আরোহীদের শরীরের
অঙ্গপরিমাপক শব্দগুলো মুখ দিয়ে বের করে
চারপাশের সবাইকে ঝলসে দিতো, রাতের বেলা
রতিকলার মেয়েদের চলচ্চিত্র দেখে দিনের
বেলা আলাপ করত বন্ধুদের সামনে...
তখনো ছেলেটাকে 'তত্ত্বকথা' শুনিয়েছিলো
কিছু মানুষ, কিন্তু তার কাছে সেসব কথার দাম ছিলো
না। পরেও কখনো ভালো করে জানা যায়নি রিকসায়
চড়ে যাওয়া মেয়েদেরকে তাদের শরীর নিয়ে
'প্রশংসা বাণী' শোনানোর কারণে কখনো ক্ষমা
চেয়েছিলো কিনা। বরং, চাকুরিতে এসে মেয়ে
কলিগদের পাশে তার দন্ত-বিকশিত হাসিমাখা ছবি
অনলাইনে দেখা যেত। গল্পের আড্ডায় কোন
মেয়ে 'সেইরকম মাল' সেই বিষয়টা সবাইকে
জানিয়ে দিতো।
কয়েক বছর পেরিয়ে গেলো। এখন, নতুন
যুবতী বউয়ের স্বামী ছেলেটি এখন মাল্টি
ন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করে। টাকার প্রবাহ
বেশ ভালোই। তারা দু'জনে মিলে দাঁত কেলিয়ে
ছবি তুলে, এখানে ওখানে ঘুরে নতুন অ্যালবাম
করে ছবি ফেবুতে আপলোড করে। মধুচন্দ্রিমার
বিশেষ অ্যালবামে স্বল্প পোশাকে সমুদ্রতীরে
তোলা ছবিগুলো ফেসবুকে দিয়ে বন্ধুদের
'কিউট কাপল', 'খুব নাইস লাগছে', 'সেইরকম জোস
লাগতেছে', 'নাইস কাপল, 'মেড ফর ইচ আদার'
টাইপের কমেন্টের ফুলঝুরি পেয়ে 'দাম্পত্য'
জীবনকে সফলতায় ভরে দিয়েছে।
অথচ, ছেলেটার মন তো মনে হয় বদলায় নাই,
তাইনা? চিন্তাভাবনা দৃষ্টিভঙ্গি অন্তরের ভিতরেই
আছে, আগের মতই... এই মেয়েতে ক'দিন
মজে থাকবে ও? মেয়েদের নিয়ে এত এত
আপত্তিকর বাক্যগুলো তো এই অন্তর থেকেই
বের হয়েছিল, যা এখনো আছে। ক'দিন পর যখন
যুবতী বৌয়ের সাথে ঝগড়া লাগবে, তাদের এই
প্রেম কেমন থাকবে তখন? ছেলেটি ক্ষেপে
গেলে যদি আগের সেই শব্দগুলো ব্যবহার
করে, নবপরিণীতা স্ত্রীর সম্ভ্রম আর সম্মান কিছু
থাকবে? এই রূচিকেও কি মেয়েটা মেনে নিবে?
( সংকলিত )
এসো আলোর পথে
Comments
Post a Comment