রোযার গুরুত্ব পুর্ণ কয়েকটি মাসআলা , অবশ্যই জানা দরকার

রোযা,সাওমপ্রশ্নঃ (৪২০) রোযাদার হস্ত মৈথুন করলে
কি রোযা ভঙ্গ হবে? তাকে কি কোন
কাফ্ফারা দিতে হবে?
উত্তরঃ রোযাদার হস্ত মৈথুন করে যদি
বীর্যপাত করে তবে তার রোযা ভঙ্গ হয়ে
যাবে। দিনের বাকী অংশ তাকে ছিয়াম
অবস্থায় কাটাতে হবে। এ অপরাধের জন্য
আল্লাহ্র কাছে তওবা করতে হবে এবং উক্ত
দিনের রোযা কাযা আদায় করতে হবে।
কিন্তু কাফ্ফারা আবশ্যক হবে না। কেননা
কাফ্ফারা শুধুমাত্র সহবাসের মাধ্যমে রোযা
ভঙ্গ করলে আবশ্যক হবে।
প্রশ্নঃ (৪২১) রোযাদারের জন্য আতর-
সুগন্ধির ঘ্রাণ নেয়ার বিধান কি?
উত্তরঃ রোযাদারের আতর-সুগন্ধির ঘ্রাণ
নেয়াতে কোন অসুবিধা নেই। চাই তৈল
জাতীয় হোক বা ধোঁয়া জাতীয়। তবে
ধোঁয়ার সুঘ্রাণ নাকের কাছে নিয়ে শুঁকবে
না। কেননা এতে একজাতীয় পদার্থ আছে যা
পেট পর্যন্ত পৌঁছায়, তখন রোযা ভঙ্গ হয়ে
যাবে। যেমন পানি বা তদানুরূপ বস্তু। কিন্তু
সাধারণ ভাবে তার সুঘ্রাণ নাকে ঢুকলে
কোন অসুবিধা নেই।
প্রশ্নঃ (৪২২) নাকে ধোঁয়া টানা এবং
চোখে বা নাকে ড্রপ দেয়ার মধ্যে পার্থক্য
কি?
উত্তরঃ উভয়ের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, নাকে
ভাপের ধোঁয়া টানা নিজ ইচ্ছায় হয়ে থাকে।
যাতে করে ধোঁয়ার কিছু অংশ পেটে প্রবেশ
করে, তাই এতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কিন্তু
ড্রপ ব্যবহার করে উহা পেটে পৌঁছানোর
ইচ্ছা করা হয় না; বরং এতে উদ্দেশ্য হচ্ছে
নাকে বা চোখে শুধু ড্রপ ব্যবহার করা।
প্রশ্নঃ (৪২৩) রোযাদারের নাকে, কানে ও
চোখে ড্রপ ব্যবহার করার বিধান কি?
উত্তরঃ নাকের ড্রপ যদি নাড়ী পর্যন্ত
পৌঁছে তবে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কেননা
লাক্বীত বিন সাবুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত
হয়েছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তাঁকে বলেন, ﻭَﺑَﺎﻟِﻎْ ﻓِﻲ ﺍﻟِﺎﺳْﺘِﻨْﺸَﺎﻕِ ﺇِﻟَّﺎ
ﺃَﻥْ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺻَﺎﺋِﻤًﺎ ছিয়াম অবস্থায় না থাকলে
ওযুর ক্ষেত্রে নাকে অতিরিক্ত পানি নিবে।
[38] অতএব পেটে পৌঁছে এরকম করে
রোযাদারের নাকে ড্রপ ব্যবহার করা
জায়েয নয়। কিন্তু পেটে না পৌঁছলে কোন
অসুবিধা নেই।
চোখে ড্রপ ব্যবহার করা সুরমা ব্যবহার করার
ন্যায়। এতে রোযা নষ্ট হবে না। অনুরূপভাবে
কানে ড্রপ ব্যবহারেও রোযা বিনষ্ট হবে না।
কেননা এসব ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার কোন
দলীল নেই। এবং যে সব ক্ষেত্রে
নিষেধাজ্ঞা এসেছে এগুলো তারও
অন্তর্ভূক্ত নয়। চোখ বা কান দ্বারা
পানাহার করা যায় না। এগুলো শরীরের
অন্যান্য চামড়ার লোমকুপের মত।
বিদ্বানগণ উল্লেখ করেছেন, কোন লোকের
পায়ের তলায় যদি তরল কোন পদার্থ
লাগানো হয় এবং এর স্বাদ গলায় অনুভব করে,
তবে রোযার কোন ক্ষতি হবে না। কেননা
উহা খানা-পিনা গ্রহণের স্থান নয়। অতএব
সুরমা ব্যবহার করলে, চোখে বা কানে ড্রপ
ব্যবহার করলে রোযা নষ্ট হবে না- যদিও
এগুলো ব্যবহার করলে গলায় স্বাদ অনুভব
করে।
অনুরূপভাবে চিকিৎসার জন্য অথবা অন্য কোন
কারণে যদি কেউ তৈল ব্যবহার করে, তাতেও
রোযার কোন ক্ষতি হবে না।
এমনিভাবে শ্বাস কষ্ট দূর করার জন্য যদি
মুখে পাইপ লাগিয়ে অক্সিজেনের মাধ্যমে
শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়াকে চলমান করা
হয়, এবং তা পেটে পৌঁছে, তাতেও রোযার
কোন ক্ষতি হবে না। কেননা উহা
পানাহারের অন্তর্ভূক্ত নয়।
প্রশ্নঃ (৪২৪) রোযা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে
কি ছিয়াম বিশুদ্ধ হবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ, তার ছিয়াম বিশুদ্ধ হবে।
কেননা স্বপ্নদোষ রোযা বিনষ্ট করে না।
এটা তো মানুষের অনিচ্ছায় হয়ে থাকে। আর
নিদ্রা অবস্থায় সংঘটিত বিষয় থেকে কলম
উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে একটি সতর্কতাঃ বর্তমান যুগে
অনেক মানুষ রামাযানের রাতে জেগে
থাকে। কখনো আজেবাজে কর্ম এবং কথায়
রাত কাটিয়ে দেয়। তারপর গভীর নিদ্রায়
সমস্ত দিন অতিবাহিত করে। বরং মানুষের
উচিত হচ্ছে, রোযার সময়টাকে যিকির,
কুরআন তেলাওয়াত প্রভৃতি আনুগত্যপূর্ণ ও
আল্লাহর নৈকট্যদানকারী কাজে
অতিবাহিত করা।
প্রশ্নঃ (৪২৫) রোযাদারের ঠান্ডা ব্যবহার
করার বিধান কি?
উত্তরঃ ঠান্ডা-শীতল বস্তু অনুসন্ধান করা
রোযাদার ব্যক্তির জন্য জায়েয, কোন
অসুবিধা নেই। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) রোযা রেখে গরমের কারণে
বা তৃষ্ণার কারণে মাথায় পানি ঢালতেন।[39]
ইবনু ওমর (রাঃ) রোযা রেখে গরমের
প্রচন্ডতা অথবা পিপাসা হ্রাস করার জন্য
শরীরে কাপড় ভিজিয়ে রাখতেন। কাপড়ের
এই সিক্ততার কোন প্রভাব নেই। কেননা উহা
এমন পানি নয়, যা নাড়ী পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
প্রশ্নঃ (৪২৬) রোযাদার কুলি করা বা নাকে
পানি নেয়ার কারণে যদি পেটে পৌঁছে যায়,
তবে কি তার রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে?
উত্তরঃ রোযাদার কুলি করা বা নাকে পানি
নেয়ার কারণে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে পানি
পেটে পৌঁছে যায়, তবে তার রোযা ভঙ্গ হবে
না। কেননা এতে তার কোন ইচ্ছা ছিল না।
আল্লাহ্ বলেন,
] ﻭَﻟَﻴْﺲَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺟُﻨَﺎﺡٌ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺃَﺧْﻄَﺄْﺗُﻢْ ﺑِﻪِ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﻣَﺎ ﺗَﻌَﻤَّﺪَﺕْ
ﻗُﻠُﻮﺑُﻜُﻢْ[
ভুলক্রমে তোমরা যা করে ফেল সে সম্পর্কে
তোমাদের কোন গুনাহ্ নেই। কিন্তু তোমাদের
অন্তর যার ইচ্ছা করে তার কথা ভিন্ন।(সূরা
আহযাবঃ ৫)
প্রশ্নঃ (৪২৭) রোযাদারের আতরের সুঘ্রাণ
ব্যবহার করার বিধান কি?
উত্তরঃ ৪২১ নং প্রশ্নের উত্তর দেখুন।
প্রশ্নঃ (৪২৮) নাক থেকে রক্ত বের হলে কি
রোযা নষ্ট হবে?
উত্তরঃ নাক থেকে রক্ত বের হলে রোযা
নষ্ট হবে না- যদিও বেশী পরিমাণে বের হয়।
কেননা এখানে ব্যক্তির কোন ইচ্ছা
থাকেনা।
সতর্কতা বশতঃ ফজরের দশ/পনর মিনিট পূর্বে
পানাহার বন্ধ করা।
প্রশ্নঃ (৪২৯) রামাযানের কোন কোন
ক্যালেন্ডারে দেখা যায় সাহুরের জন্য শেষ
টাইম নির্ধারণ করা হয়েছে এবং তার প্রায়
দশ/পনর মিনিট পর ফজরের টাইম নির্ধারণ
করা হয়েছে। সুন্নাতে কি এর পক্ষে কোন
দলীল আছে নাকি এটা বিদআত?
উত্তরঃ নিঃসন্দেহে ইহা বিদআত। সুন্নাতে
নববীতে এর কোন প্রমাণ নেই। কেননা
আল্লাহ্ তা’আলা সম্মানিত কিতাবে বলেন,
] ﻭَﻛُﻠُﻮﺍ ﻭَﺍﺷْﺮَﺑُﻮﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﺘَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻜُﻢْ ﺍﻟْﺨَﻴْﻂُ ﺍﻟْﺄَﺑْﻴَﺾُ ﻣِﻦْ
ﺍﻟْﺨَﻴْﻂِ ﺍﻟْﺄَﺳْﻮَﺩِ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮِ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗِﻤُّﻮﺍ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ [
এবং প্রত্যুষে (রাতের) কাল রেখা হতে
(ফজরের) সাদা রেখা প্রকাশিত হওয়া
পর্যন্ত তোমরা খাও ও পান কর; অতঃপর
রাত্রি সমাগম পর্যন্ত তোমরা রোযা পূর্ণ
কর।(সূরা বাক্বারাঃ ১৮৭)
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বলেন,
ﺃَﻥَّ ﺑِﻠَﺎﻟًﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺆَﺫِّﻥُ ﺑِﻠَﻴْﻞٍ ﻓَﻜُﻠُﻮﺍ ﻭَﺍﺷْﺮَﺑُﻮﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳُﺆَﺫِّﻥَ ﺍﺑْﻦُ
ﺃُﻡِّ ﻣَﻜْﺘُﻮﻡٍ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳُﺆَﺫِّﻥُ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻄْﻠُﻊَ ﺍﻟْﻔَﺠْﺮُ
নিশ্চয় বেলাল রাত থাকতে আযান দেয়, তখন
তোমরা খাও ও পান কর, যতক্ষণ না ইবনে
উম্মে মাকতূমের আযান শোন। কেননা ফজর
উদিত না হলে সে আযান দেয় না।[40]
ফজর না হতেই খানা-পিনা বন্ধ করার জন্য
লোকেরা সময় নির্ধারণ করে যে
ক্যালেন্ডার তৈরী করেছে তা নিঃসন্দেহে
আল্লাহ্র নির্ধারিত ফরযের উপর
বাড়াবাড়ী। আর এটা হচ্ছে আল্লাহ্র
দ্বীনের মাঝে অতিরঞ্জন। নবী
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ﻫَﻠَﻚَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻨَﻄِّﻌُﻮﻥَ ﻫَﻠَﻚَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻨَﻄِّﻌُﻮﻥَ ﻫَﻠَﻚَ ﺍﻟْﻤُﺘَﻨَﻄِّﻌُﻮﻥَ
অতিরঞ্জনকারীগণ ধ্বংস হোক।
অতিরঞ্জনকারীগণ ধ্বংস হোক।
অতিরঞ্জনকারীগণ ধ্বংস হোক।[41]
প্রশ্নঃ (৪৩০) এয়ারপোর্টে থাকাবস্থায় সূর্য
অস্ত গেছে মুআয্যিন আযান দিয়েছে,
ইফতারও করে নিয়েছে। কিন্তু বিমানে চড়ে
উপরে গিয়ে সূর্য দেখতে পেল। এখন কি
পানাহার বন্ধ করতে হবে?
উত্তরঃ খানা-পিনা বন্ধ করা অবশ্যক নয়।
কেননা যমীনে থাকাবস্থায় ইফতারের সময়
হয়ে গেছে সূর্যও ডুবে গেছে। সুতরাং
ইফতার করতে বাধা কোথায়? রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻗْﺒَﻞَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞُ ﻣِﻦْ ﻫَﺎ ﻫُﻨَﺎ ﻭَﺃَﺩْﺑَﺮَ ﺍﻟﻨَّﻬَﺎﺭُ ﻣِﻦْ ﻫَﺎ ﻫُﻨَﺎ
ﻭَﻏَﺮَﺑَﺖِ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﻓْﻄَﺮَ ﺍﻟﺼَّﺎﺋِﻢُ
এদিক থেকে যখন রাত আগমণ করবে এবং
ঐদিক থেকে দিন শেষ হয়ে যাবে ও সূর্য
অস্ত যাবে, তখন রোযাদার ইফতার করে
ফেলবে।[42]
অতএব এয়ারপোর্টের যমীনে থাকাবস্থায়
যখন সূর্য ডুবে গেছে, তখন তার দিনও শেষ
হয়ে গেছে, তাই সে শরীয়তের দলীল
মোতাবেক ইফতারও করে নিয়েছে। সুতরাং
শরীয়তের দলীল ব্যতীরেকে আবার তাকে
পানাহার বন্ধ করার আদেশ দেয়া যাবে না।
প্রশ্নঃ (৪৩১) রোযাদারের কফ অথবা থুথু
গিলে ফেলার বিধান কি?
উত্তরঃ কফ বা শ্লেষা যদি মুখে এসে
একত্রিত না হয় গলা থেকেই ভিতরে চলে
যায় তবে তার রোযা নষ্ট হবে না। কিন্তু যদি
গিলে ফেলে তবে সে ক্ষেত্রে বিদ্বানদের
দু’টি মত রয়েছেঃ
১ম মতঃ তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা
উহা পানাহারের স্থলাভিষিক্ত।
২য় মতঃ রোযা নষ্ট হবে না। কেননা উহা
মুখের সাধারণ থুথুর অন্তর্গত। মুখের মধ্যে
সাধারণ পানি যাকে থুথু বলা হয় তা দ্বারা
রোযা নষ্ট হয় না। এমনকি যদি থুথু মুখের
মধ্যে একত্রিত করে গিলে ফেলে তাতেও
ছিয়ামের কোন ক্ষতি হবে না।
আমরা জানি আলেমগণ মতবিরোধ করলে তার
সমাধান কুরআন-সুন্নাহ্ থেকে খুঁজতে হবে।
কিন্তু এক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাতে সুস্পষ্ট
কোন উক্তি নেই। এ বিষয়ে যখন সন্দেহ হয়ে
গেল, তার ইবাদতটি নষ্ট হয়ে গেল না নষ্ট হল
না। তখন আমাদেরকে মূলের দিকে ফিরে
যেতে হবে। মূল হচ্ছে দলীল ছাড়া ইবাদত
বিনষ্ট না হওয়া। অতএব কফ গিলে নিলে
রোযা নষ্ট হবে না।
মোটকথা কফ নিজ অবস্থায় ছেড়ে দিবে।
উহা গলার নীচে থেকে মুখে টেনে নিয়ে
আসার চেষ্টা করবে না। কিন্তু মুখে এসে
পড়লে বাইরে ফেলে দিবে। চাই রোযাদার
হোক বা না হোক। কিন্তু গিলে ফেললে
রোযা নষ্ট হবে এর জন্য দলীল দরকার।
প্রশ্নঃ (৪৩২) খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করলে কি
ছিয়াম নষ্ট হবে?
উত্তরঃ খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ করে যদি তা
গিলে না ফেলে, তবে ছিয়াম নষ্ট হবে না।
কিন্তু একান্ত দরকার না পড়লে এরূপ করা
উচিত নয়। এ অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত যদি পেটে
কিছু ঢুকে পড়ে তবে ছিয়ামের কোন ক্ষতি
হবে না।
প্রশ্নঃ (৪৩৩) রোযা রেখে হারাম বা
অশ্লীল কথাবার্তা উচ্চারণ করলে কি
ছিয়াম নষ্ট হবে?
উত্তরঃ আমরা আল্লাহ্ তা’আলার নিম্ন
লিখিত আয়াত পাঠ করলেই জানতে পারি
ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি? আর তা
হচ্ছে তাক্বওয়া বা আল্লাহ্ ভীতি অর্জন
করা ও আল্লাহ্র ইবাদত করা। আল্লাহ্ বলেন,
] ﻳَﺎﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡُ ﻛَﻤَﺎ ﻛُﺘِﺐَ ﻋَﻠَﻰ
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﻠِﻜُﻢْ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗَﺘَّﻘُﻮﻥَ [
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয
করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল
তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে
তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।(সূরা
বাক্বারাঃ ১৮৩)
তাক্বওয়া হচ্ছে হারাম কাজ পরিত্যাগ করা।
ব্যাপক অর্থে তাক্বওয়া হচ্ছে, আল্লাহ্র
নির্দেশিত বিষয় বাস্তাবায়ন করা, তাঁর
নিষেধ থেকে দূরে থাকা। নবী
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺪَﻉْ ﻗَﻮْﻝَ ﺍﻟﺰُّﻭﺭِ ﻭَﺍﻟْﻌَﻤَﻞَ ﺑِﻪِ ﻭﺍﻟْﺠَﻬْﻞَ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻟِﻠَّﻪِ
ﺣَﺎﺟَﺔٌ ﻓِﻲ ﺃَﻥْ ﻳَﺪَﻉَ ﻃَﻌَﺎﻣَﻪُ ﻭَﺷَﺮَﺍﺑَﻪُ
যে ব্যক্তি (রোযা রেখে) মিথ্যা কথা,
মিথ্যা অভ্যাস ও মূর্খতা পরিত্যাগ করল না,
তার পানাহার পরিহার করার মাঝে
আল্লাহর কোন দরকার নেই।[43]
অতএব এ কথা নিশ্চিত হয়ে গেল যে,
রোযাদার যাবতীয় ওয়াজিব বিষয়
বাস্তবায়ন করবে এবং সবধরণের হারাম
থেকে দূরে থাকবে। মানুষের গীবত করবে
না, মিথ্যা বলবে না, চুগলখোরী করবে না,
হারাম বেচা-কেনা করবে না, ধোঁকাবাজী
করবে না। মোটকথা চরিত্র ধ্বংসকারী
অন্যায় ও অশ্লীলতা বলতে যা বুঝায় সকল
প্রকার হারাম থেকে বিরত থাকবে। আর
একমাস এভাবে চলতে পারলে বছরের
অবশিষ্ট সময় সঠিক পথে পরিচালিত হবে
ইনশাআল্লাহ্।
কিন্তু আফসোসের বিষয় অধিকাংশ
রোযাদার রামাযানের সাথে অন্য মাসের
কোন পার্থক্য করে না। অভ্যাস অনুযায়ী
ফরয কাজে উদাসীনতা প্রদর্শন করে,
হালাল-হারামে কোন পার্থক্য নেই। গর্হিত
ও অশ্লীল কথা কাজে লিপ্ত থাকে। মিথ্যা,
ধোঁকাবাজী প্রভৃতি নিত্যনৈমিত্তিক
ব্যাপার। তাকে দেখলে বুঝা যাবে না তার
মধ্যে ছিয়ামের মর্যাদার কোন মূল্য আছে।
অবশ্য এ সমস্ত বিষয় ছিয়ামকে ভঙ্গ করে
দিবে না। কিন্তু নিঃসন্দেহে তার ছওয়াব
বিনষ্ট করে দিবে।
প্রশ্নঃ (৪৩৪) মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেয়ার বিধান
কি? ইহা কি ছিয়াম নষ্ট করে?
উত্তরঃ মিথ্যা দেয়া অন্যতম কাবীরা গুনাহ্।
আর তা হচ্ছে না জেনে কোন বিষয়ে
স্বাক্ষ্য দেয়া অথবা জেনে শুনে বাস্তবতার
বিপরীত সাক্ষ্য প্রদান করা। এতে ছিয়াম
বিনষ্ট হবে না। কিন্তু ছিয়ামের ছওয়াব
কমিয়ে দিবে।

collected

http://porokalerjonnokaaj.blogspot.in/2015/06/blog-post_91.html?m=1

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়