আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপায়.

আল্লাহর সাহায্য পাওয়ারff উপায়!
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার।
ভূমিকা : আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির
সেরা আশরাফুল মাখলুকাত করে সৃষ্টি করেছেন।
মানুষকে সুন্দর আকৃতি ও কাঠামো দান করেছেন,
যা অন্য কোন সৃষ্টে দেননি। আবার
মানুষকে দৈহিক কাঠামোর সাথে এমন ঞ্জান,
বিবেক ও বুদ্ধি দিয়েছেন, যা অন্য কোন
সৃষ্টি জীবকে দেননি।
যে লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য মানুষকে ঞ্জান, বিবেক
ও বুদ্ধি দিয়েছেন, সে লক্ষ্যে পৌছানোর
চেষ্টা না করলে এবং সে মুতাবিক কাজ ও আমল
না করলে, সৃষ্টির সেরা এই শীর্ষ
আসনে থাকা তো দুরের কথা, অন্যান্য সৃষ্টির
সমকক্ষও থাকতে পারবে না। বরং সৃষ্টির
সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব হিসাবে গন্য হবে। আল্লাহ
তায়ালা বলেন,
ﻟﻘﺪ ﺧﻠﻘﻨﺎ ﺍﻻﻧﺴﺎﻥ ﻓﻲ ﺍﺣﺴﻦ ﺗﻘﻮﻳﻢ ﺛﻢ ﺭﺩﺩﻧﺎﻩ
ﺍﺳﻔﻞ ﺳﺎﻓﻠﻴﻦ ﺍﻻ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻣﻨﻮﺍ ﻭﻋﻤﻠﻮﺍ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺎﺕ
ﻓﻠﻬﻢ ﺍﺟﺮ ﻏﻴﺮ .ﻥﻮﻨﻤﻣ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﻄﻴﻦ
অর্থ (4) নিশ্চয় আমি মানুষকে সুন্দরতর
অবয়বে সৃষ্টি করেছি। (5) তারপর
আমি তাকে নীচ থেকে নীচে ফিরিয়ে দিয়েছি।
(6) কিন্তু যারা ঈমান এনেছে এবং সৎআমল ও
সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে অশেষ
পুরস্কার। (সূরা আতত্বীন)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
ﻭﻟﻘﺪ ﺫﺭﺃﻧﺎ ﻟﺠﻬﻨﻢ ﻛﺜﻴﺮﺍ ﻣﻦ ﺍﻟﺠﻦ ﻭﺍﻻﻧﺲ ﻟﻬﻢ
ﻗﻠﻮﺏ ﻻﻳﻔﻘﻬﻮﻥ ﺑﻬﺎ ﻭﻟﻬﻢ ﺍﻋﻴﻦ ﻻﻳﺒﺼﺮﻭﻥ ﺑﻬﺎ
ﻭﻟﻬﻢ ﺍﺫﺍﻥ ﻻﻳﺴﻤﻌﻮﻥ ﺑﻬﺎ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻛﺎﻻﻧﻌﺎﻡ ﺑﻞ ﻫﻢ
ﺍﺿﻞ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ .ﻥﻮﻠﻓﺎﻐﻟﺍ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻻﻋﺮﺍﻑ
অর্থ নিশ্চয় আমি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও
মানুষকে সৃষ্টি করেছি। তাদের অন্তর রয়েছে,
তার দ্বারা বিবেচনা করেনা, তাদের চোখ
রয়েছে, তার দ্বারা তারা দেখেনা, তাদের কান
রয়েছে, তার দ্বারা শোনেনা।তারা চতুষ্পদ
জন্তুর মত, বরং তার চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই
হলো গাফিল, শৈথিল্যপরায়ন। (সূরা আল আ 'রাফ,
আায়াত নং 179)
** মানুষকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির
সেরা হিসাবে টিকিয়ে রাখার জন্য
যুগে যুগে নাবী রাসূল (সাঃ) দেরকে পাঠিয়েছেন,
তাঁদের কাছে গাইডবুক হিসাবে কিতাব, সহীফা ও
দ্বীন দিয়েছেন। যারা আল্লাহর কিতাব ও
দ্বীনের প্রতি ঈমান এনেছে, ঐ কিতাব ও দ্বীন
বিরুধী মতবাদ সমুহ ঘৃনাভরে ত্যাগ করে কিতাব
ওও দ্বীন মুতাবিক আমল ও জীবন যাপন করে,
তারাই সৃষ্টির
সেরা হিসাবে টিকে থাকতে পারবে। আর
যারা পূর্নকিতাব ও পূর্নদ্বীনের প্রতি ঈমান
আনবেনা এবং পূর্নদ্বীন মুতাবিক আমল ও জীবন
যাপন করবে না,তারাই সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট।
মহান আল্লাহ বলেন,
ﺍﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻛﻔﺮﻭﺍ ﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻓﻲ ﻧﺎﺭ
ﺟﻬﻨﻢ ﺧﺎﻟﺪﻳﻦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ ﺷﺮ ﺍﻟﺒﺮﻳﺔ
ﺍﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻣﻨﻮﺍ ﻭﻋﻤﻠﻮﺍ ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺎﺕ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ
.ﺔﺑﺮﺒﻟﺍﺮﻴﺧ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺒﻴﻨﺔ
অর্থ নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে অর্থাৎ
আহলে কিতাব (ইয়াহুদী ও খৃষ্টান) ও
মুশরিকরা জাহান্নামের
আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির
সবচেয়ে নিকৃষ্ট।
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম ও
সৎআমল করেছে, তারাই সৃষ্টির সেরা। (সূরা আল
বাইয়িনাহ, আয়াত নং 6 ও 7)
** আল্লাহ তায়ালা দুটি দায়িত্ব পালন করার
জন্য মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। যথা (1)ইবাদাত,
গোলামী ও দাসত্ব (2)খিলাফাত ও প্রতিনিধিত্ব।
ইবাদাত করার ক্ষেত্রে মানুষ এবং জিন সমান
দায়িত্বশীল। কিন্তু খিলাফাতের দায়িত্ব
পালনের ক্ষেত্রে মানুষ একক মার্যাদার
অধিকারী। খিলাফাতের দায়িত্ব আল্লাহ
মানুষকে দিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের
মার্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু জিনকে খিলাফাতের
মার্যাদা দেননি।
ইবাদাতের ক্ষেত্রে মানুষ ও জিন সমান
এবং আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য
উভয়কে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ
বলেন,
ﻭﻣﺎ ﺧﻠﻘﺖ ﺍﻟﺠﻦ ﻭﺍﻻﻧﺲ .ﻥﻭﺪﺒﻌﻴﻟ ﻻﺍ ﺳﻮﺭﺓ
ﺍﻟﺬﺍﺭﻳﺎﺕ
অর্থ আর একমাত্র আমার ইবাদাত জন্যই আমি জিন
ও মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছি। (সূরা আজ
জারিয়াত, আয়াত নং 56)
কিন্তু খিলাফাতের দায়িত্ব মানুষ ছাড়া আর
কাউকে দেননি। আল্লাহ বলেন,
ﻭﻫﻮ ﺍﻟﺬﻱ ﺟﻌﻠﻜﻢ .ﺽﺭﻻﺍ ﻒﺋﻼﺧ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻻﻧﻌﺎﻡ
অর্থ আর তিনিই
তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন।
(সূরা আল আনআম, আয়াত নং 165)
মানুষ যখন জীবনের সর্বক্ষেত্রে একমাত্র
আল্লাহর ইবাদাত করবে এবং তাঁরই
প্রতিনিধি হিসাবে তাঁরই আইন চালু করবে, অন্য
সকল প্রকার মানব রচিত আইন ঘৃনাভরে ত্যাগ
করে চলবে, তখনই মানুষ সৃষ্টির
সেরা হিসাবে টিকে থাকবে। এদুটি দায়িত্ব
পালন করতে হলে জীবনের সকল ক্ষেত্রে কুরআন ও
সুন্নাহ এবং পরিপুর্ন দ্বীন মুতাবিক আমল
করতে হবে, জীবন যাপন করতে হবে। পরিপুর্ন
দ্বীনের দাওয়াত দিতে হবে এবং পরিপুর্ন দ্বীন
কায়েম করতে হবে, ইসলামী জীবন
ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মানুষের সার্বভৌমত্ব নয়। বরং একমাত্র আল্লাহর
সার্বভৌম ক্ষমতা মেনে জীবনের সকল
ব্যপারে তাঁর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আনুগত্য
এবং মানুষের খিলাফাত (প্রতিনিধিত্ব)
না হলে সঠিক আল্লাহর ইবাদাত হয়না, আবার
খিলাফাতও হয়না। খিলাফাতের দায়িত্ব পালন
করাও বেশী ও অনেক ইবাদাতের সাওয়াব
পাওয়া যাবে। তাই আল্লাহর রাসূল (সাঃ)
বলেছেন,
ﻳﻮﻡ ﻣﻦ ﺍﻣﺎﻡ ﻋﺎﺩﻝ ﺧﻴﺮ ﻣﻦ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺳﺘﻴﻦ ﺳﻨﺔ ﺭﻭﺍﻩ
য়ায্ন থ্রঅ
ﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻲ বিচারক রাষ্ট্রনায়কের একদিন ষাট
বৎসর ইবাদাত করার চেয়ে অনেক উত্তম।
(ত্বাবারানী, সনদ হাসান)
একদিন মাত্র আল্লাহর বিধান মাফিক, কুরআন ও
সুন্নাহ মাফিক, পরিপুর্ন দ্বীন ও ইসলাম মাফিক
রাষ্ট্র পরিচালনা করার মার্যাদা এত বেশী যে,
ষাট বৎসর ইবাদাত (নাফল নামাজ, সাদাকাহ,
রোজা, হাজ্জ, জিকির ইত্যাদি) করার
চেয়ে অনেকগুনে উত্তম।
সকল নাবী রাসুল (সাঃ)কে জীবনের সর্ব ক্ষেত্র
থেকে তাগুতের ইবাদাত ত্যাগ এবং সকল
ক্ষেত্রে আল্লাহর ইবাদাত করার দাওয়াত দেয়ার
জন্য আল্লাহ পাঠিয়েছেন। সৃষ্টির দাসত্ব ও
মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে আল্লাহর দাস
বানানো ছিল নাবীরাসুল(সাঃ)দের দায়িত্ব।
আল্লাহ বলেন,
ﻭﻟﻘﺪ ﺑﻌﺜﻨﺎ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺍﻣﺔ ﺭﺳﻮﻻ ﺍﻥ ﺍﻋﺒﺪﻭﺍﺍﻟﻠﻪ
ﻭﺍﺟﺘﻨﺒﻮﺍ .ﺕﻮﻏﺎﻄﻟﺍ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﻨﺤﻞ
অর্থ আর নিশ্চয় আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসুল
পাঠিয়েছি এই দাওয়াত দেয়ার জন্য যে,
তোমরা আল্লাহর ইবাদাত করো এবং তাগুতের
ইবাদাত ত্যাগ করো। (সূরা আননাহল, আয়াত
নং 36)(চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়