রাসুলুল্লাহ সাঃ এর রাষ্ট্র পরিচালনা

"রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মধ্যে রয়েছে বিশ্বমানুষের জন্য উত্তম
আদর্শ"

মুহাম্মাদ রবিউল বাশার।

(৩) রাষ্ট্র পরিচালনা করার আদর্শ
রয়েছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর মধ্যে।
মুশরিক, ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের ধর্মে যুগ
উপযোগী রাষ্ট্র পরিচালনার নিয়ম
নীতি না থাকায় তারা মানব-রচিত নিয়ম
অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে থাকে।
তারা প্রচার করে, ধর্ম আর রাষ্ট্র আলাদা,
এবং ধর্মে রাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতি নেই।
ধর্ম হলো আল্লাহ এবং বান্দার
মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের নাম ! সেজন্য
তাদের ধর্মে রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি,
সমাজনীতি, অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক বিধান,
পারিবারিক নীতি ইত্যাদি নাও
থাকতে পারে। আজকের মুসলিমরা আল্লাহর
কুরআন ও তাঁর রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাত
থেকে শিক্ষা না নিয়ে ইয়াহুদী, খৃষ্টান ও
মুশরিকদের নিকট থেকে শিক্ষা নেয়ার
কারনে তাদের বুলি আওড়ায়।
আসলে ইসলামে এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
জীবনে মানব জীবনের সকল দিক ও
বিভাগের নিয়ম- নীতি ও আদর্শ বিদ্যমান।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে মহান আল্লাহর
প্রতিনিধি হিসাবে রাষ্ট্র
পরিচালনা করেন। পরিপুর্নভাবে জীবন -
বিধান ইসলামে রাষ্ট্রপরিচালনার
মুলনীতি আছে।
১)আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
ﺔﻌﺒﺳ ﻢﻬﻠﻈﻳ ﻲﻓ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻠﻇ ﻻ ﻡﻮﻳ ﻞﻇ ﻻﺍ ﻪﻠﻇ
ﻡﺎﻣﺍ .ﻝﺩﺎﻋ ﻩﺍﻭﺭ...... ﻱﺭﺎﺨﺒﻟﺍ
অর্থ : সাত শ্রেনীর ব্যক্তিকে আল্লাহ
নিজের ছায়ায় স্থান দেবেন এমন এক
দিনে, যেদিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর
কোন ছায়া থাকবে না :
(১)ইনসাফকারী ইমাম বা বাদশাহ,--------
----------।(সহীহ আল -বুখারী)
২)আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আরো বলেন,
ﻦﻣ ﻡﻮﻳ ﻦﻣ ﺮﻴﺧ ﻝﺩﺎﻋ ﻡﺎﻣﺍ ﺓﺩﺎﺒﻋ ﺔﻨﺳ ﻦﻴﺘﺳ
ﻩﺍﻭﺭ ﻲﻧﺍﺮﺒﻄﻟﺍ
অর্থ : ন্যায় ও ইনসাফগার ইমাম
বা বাদশাহের একদিন (দেশ
পরিচালনা করা) ষাট বৎসর ইবাদাত
করার চেয়ে অনেক গুনে উত্তম।
(ত্বিবরানী হাসান সনদে)
তারা প্রচারনা ইসলাম
বিরুধী প্রচারনা চালিয়ে বলে ইসলামে রাজনীতি ও
রাষ্ট্রনীতি নেই। অথচ আল্লাহর রাসূল
(সাঃ) বলছেন, ইসলাম মোতাবেক
রাষ্ট্রপরিচালনা করলে শুধু সাধারন
ইবাদাতের সাওয়াবই নয় বরং ষাট বৎসর
নামায, সাদাকা, রোযা, হাজ্জ,জিকির
করলে যে সাওয়াব পাওয়া যায়, তার
চেয়ে অনেক বেশী সাওয়াব পাওয়া যায়
ইসলাম ভিত্তিক ও ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র
পরিচালনা করলে।
(ক) রাসুলুল্লাহ (সাঃ)মাক্কা ত্যাগ
করে মাদীনা এসেই ইসলামী রাষ্ট্রের
ভিত রচনা করেন।
(১) সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার কেন্দ্র
ছিল মাসজিদে নাবাবী। রাষ্ট্র ও
সামাজিক কেন্দ্র মাসজিদ প্রথমেই
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মাদীনায়
প্রতিষ্ঠা করেন। আযানের
ব্যবস্থা করে পাঁচ ওয়াক্ত
জামায়াতে নামাজের ব্যবস্থা করেন।
সামাজিক বিচার -সালিস মাসজিদেই
ব্যবস্থা করা হতো। দেশ পরিচালনার
পরামর্শ মাসজিদেই করা হতো। যুদ্ধের
পরামর্শ মাসজিদেই করা হতো।
(খ) মাদীনার নাগরিকদের
মধ্যে আঅভ্যন্তরিন সম্পর্ক দৃড় করেন।
মাক্কা হিজরাত করে যারা মাদীনায়
আসেন, তাদেরকে মুহাজির বলে। মাদীনার
মুসলিম অধিবাসীদের আনসার বলে।
তারা মুহাজিরদের সম্পদ
ভাগাভাগি করে এবং আশ্রয় দিয়ে সার্বিক
সহযোগিতা করেন। এই আনসার
এবং মুহাজিরদের মধ্যে ভাই ভাই সম্পর্ক
স্থাপন করেন রাষ্ট্রের আভ্যন্তরিন সম্পর্ক
দৃড় করার জন্য। মাদীনাবাসি আনসারগন
(রাঃ) মুহাজিরদের(রাঃ)কে নিজেদের
প্রয়োজনের তুলনায় তাদের
প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দিত। তাই আল্লাহ
বলেন,
ﻦﻳﺬﻟﺍﻭ ﺍﻮﺋﻮﺒﺗ ﺭﺍﺪﻟﺍ ﻥﺎﻤﻳﻻﺍﻭ ﻦﻣ ﻢﻬﻠﺒﻗ ﻥﻮﺒﺤﻳ
ﻦﻣ ﻢﻬﻴﻟﺍ ﺮﺟﺎﻫ ﻻﻭ ﻲﻓ ﻥﻭﺪﺠﻳ ﻢﻫﺭﻭﺪﺻ ﺔﺟﺎﺣ
ﺎﻤﻣ ﻥﻭﺮﺛﺆﻳﻭﺍﻮﺗﻭﺍ ﻢﻬﺴﻔﻧﺍ ﻲﻠﻋ ﻥﺎﻛ ﻮﻟﻭ ﻢﻬﺑ
ﺔﺻﺎﺼﺧ
অর্থ :যারা মুহাজিরদের আগমনের
পুর্বে মাদীনায় বসবাস করেছিল
এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,
তাঁরা মুহাজিরদের ভালবাসে,
মুহাজিরদেরকে যা দেয়া হয়েছে,
তজ্জন্যে তাঁরা অন্তরে ইর্ষা পোষন
করেনা এবং তারা(আনসানরা) নিজেদের
উপর (মুহাজিরদেরকে)প্রাধান্য দিত,
যদিও তারা অভাব গ্রস্থ ছিল। (সূরা আল -
হাশর, আয়াত নং৯)
(গ) তিনি মাদীনা রাষ্টের
স্থাপতি হওয়ায় মাদীনার
আশেপাশে থাকা ইয়াহুদী,( পৌত্তলিক ও
খৃষ্টানদের সাথে শান্তি চুক্তি করেন।
যাকে মাদীনার সনদ বলা হয়। এর সার্বিক
নেতৃত্ব রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর অর্পন
করা হয়। ৪৮টি ধারা সম্বলিত এ
সনদটি প়ৃথিবীর প্রথম লিখিত সংবিধান
বলে ঐতিহাসিকগন উল্লেখ করেন।
কয়েকটি ধারা নিম্মরুপ :
১)মাদীনা শত্রু কতৃক আক্রান্ত
হলে এচুক্তির অন্তর্ভুক্ত
ব্যক্তিরা প্রতিরোধ করবে।
২)রক্তপন ও মুক্তিপন পুর্বনিয়ম মাফিক
চালু থাকবে।
৩)প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম
পালন করবে।
৪)যুদ্ধের সময় প্রত্যেকে নিজ নিজ খরচ
বহন করবে।
৫)ইখতিলাফের ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
ফায়সালা মেনে নেয়া হবে। ইত্যাদি।
(ঘ) বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথ চুক্তি সম্পাদন
করেন।
(ঙ) বিভিন্ন প্রদেশে গভর্নর, বিচারক ও
কালেক্টর নিয়োগ করেন। যেমন
ইয়ামানে হযরত মায়াজ বিন যাবাল (রাঃ)
কে পাঠানোর সময় নিয়ম নীতি বলে দেন।
ইত্যাদি।
রাষ্ট্র পরিচালনার যা যা দরকার,
তা তিনি সম্পাদন করেন। হাদীস
এবং সীরাতে গ্রন্থে তা বিস্তারিত
উল্লেখ আছে। তিনি রাষ্টপরিচালক
হিসাবে সাহাবীদের (রাঃ)
পথনির্দেশনা দেন কোন
ক্ষেত্রে তাঁরা প্রাদেশিক গভর্নরদের.,
নেতৃবৃন্দের ও দায়িত্বশীলদের আনুগত্য
করবে এবং কোন ক্ষেত্রে আনুগত্য করবে না।
আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন,
ﻊﻤﺴﻟﺍ ﺔﻋﺎﻄﻟﺍﻭ ﺇﺮﻤﻟﺍ ﻲﻠﻋ ﻢﻠﺴﻤﻟﺍ ﺐﺣﺍﺎﻤﻴﻓ
ﻩﺮﻛﻭ ﺎﻣ ﻢﻟ ﺮﻣﺆﻳ ﺔﻴﺼﻌﻤﺑ ﺍﺫﺎﻓ ﺮﻣﺍ ﺔﻴﺼﻌﻤﺑ ﻼﻓ
ﻊﻤﺳ ﻻﻭ ﺔﻋﺎﻃ ﻩﺍﻭﺭ ﻱﺭﺎﺨﺒﻟﺍ
অর্থ :পছন্দ হোক আর অপছন্দ হোক মুসলিম
ব্যক্তির উপর (নেতা,রাষ্ট্রপতি, সভাপতি,
গভর্নর এর) আদেশ শ্রবন করা এবং আনুগত্য
করা আবশ্যক, যতক্ষন নাফরমানীর নির্দেশ
না দেয়া হবে। নাফরমানীর নির্দেশ যখন
দেয়া হবে, তখন আদেশ শুনা যাবেনা ও
আনুগত্য করা যাবে না। (সহীহ আল -বুখারী)
রাষ্ট্র পরিচালক হিসাবে আদর্শ
রয়েছে রাসূলুল্লাহ(সেঃ) এর মধ্যে (চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়