দাওয়াতি জীবনে রাসূলুল্লাহ সাঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব
মানুষের জন্য আদর্শ "

মুহাম্মাদ রবিউল বাশার

(৫)রাষ্ট্র গঠন ছিল রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর
দাওয়াত ও তাবলীগের আদর্শিক লক্ষ্য :
মুসলিম সমাজে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ
বিভিন্ন লক্ষ্যে করা হয়ে থাকে। কিছু লোক
আত্মশুদ্ধির জন্য দাওয়াত ও তাবলীগ করে।
কিছু লোক বহু সাওয়াব অর্জনের জন্য
দাওয়াত ও ছয় উসুল ভিত্তক তাবলীগ করে।
বিভিন্ন ব্যক্তি দাওয়াত ও তাবলীগ
বিভিন্ন উদ্দেশ্যে করে থাকে। কিন্তু
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দ্বীন কায়েমের জন্য ও
ইসলামী রাষ্টীয় ব্যবস্থা কায়েম করার
জন্য দাওয়াত ও তাবলীগের আদর্শ
রেখে গেছেন।
(ক) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
মাক্কী জীবনে প্রকাশ্যভাবে দাওয়াত ও
তাবলীগ শুরু করার পর থেকে ঠাট্টা,
বিদ্রুপ, প্রশ্ন, অভিযোগ, নির্যাতন, জুলুম,
দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ বন্দ করার
বিভিন্ন পদ্ধতি ইত্যাদি অবলম্বন
করলে মুশরিক নেতৃবৃন্দ অন্তত চারবার
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চাচা আবু তালিবের
কাছে আসে। দ্বিতীয় /তৃতীয়
বারে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছিলেন,
ﻢﻫﺪﻳﺭﺍ ﻲﻠﻋ ﺔﻣﺎﻛ ﺓﺪﺣﺍﻭ ﻢﻬﻟ ﻦﻳﺪﺗ ﺎﻬﺑ ﺏﺮﻌﻟﺍ
ﻢﻬﻴﻟﺍ ﻱﺩﻮﺗﻭ ﻢﺠﻌﻟﺍ ﺔﻳﺰﺠﻟﺍ
অর্থ আমি কুরাইশদের
কাছে একটি কালিমার দাবী করেছি, যার
মাধ্যমে আরবরা তাদের অনুগত
হবে এবং অনারবরা তাদের কাছে কর আদায়
করবে। (বিদেয়াহ অন নিহায়াহ)
রাষ্ট্র ছাড়া কর দেয় না। অতএব
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কালিমার
ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের দাওয়াত দেন।
যে রাষ্ট্রকে অমুসলিমরা কর
দিয়ে প্রজা হবে।
(খ)আল্লাহ তায়ালা দ্বীন কায়েমের জন্য
নাবী -রাসুলগন (সাঃ) কে প্রেরন করেন।
আল্লাহ বলেন, ﺍﻮﻤﻴﻗﺍ ﻦﻳﺪﻟﺍ ﺍﻮﻗﺮﻔﺘﺗﻻﻭ ﻪﻴﻓ .
অর্থ তোমরা দ্বীন কায়েম কর এবং এ
ব্যপারে ভিন্ন মত পোষন কর না। (সূরা আশ-
শুরা,আয়াত নং ১৩)
অতএব দ্বীন কায়েমের জন্য দাওয়াত ও
তাবলীগ করতে হবে। পুর্ন দ্বীনের
দাহওয়াতে দিতে হবে এবং পুর্ন দ্নবীনের
তাবলীগ করতে হবে, লক্ষ্য থাকবে দ্বীন
কায়েম করা!
(গ) একবার কুরাইশরাও
নেতা ওতবা ইবনে রবীয়া কুরাইশদের
অনুমতি নিয়ে কাবার
সামনে বসা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট
আসে। সে প্রস্তাব দেয়, তুমি উচ্চ বংশীয়,
কিন্তু তুমি এমন কাজ করছো,
যা ইতিপুর্বে কেউ করেনি।
তুমি সমাজকে ভাগ করে ফেলেছো,
দেবতাদের গালি দিচ্ছ, পুর্ব পুরুষদের
নির্বোধ বলছো, ধর্মে ক্ষুৎ বের করছো।
আসলে তুমি কি চেও? তুমি বাদশাহ
হতে চাও? তাহলে আমরা বাদশাহ
বানিয়ে নেব, তোমার উপস্থিতি ছাড়া কোন
ফায়সালা হবে না। তুমি বড়লোক হতে চাও?
তাহলে আমরা সকলে সম্পদ
দিয়ে তোমাকে বড়লোক করে দেব। আর
যদি জিন গ্রস্থ হয়ে থাক,
তাহলে ঝাড়ানোর ব্যবস্থা করবো।
তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, এবার আমার
কথা শুনুন বলে, (হা, মীম, আস -সিজদা)এর
প্রথম থেকে তিলেওয়াত শুরু করেন।
ওতবা পিছনে হাত দিয়ে তন্ময়
হয়ে শুনতে থাকেন। সিজদার আয়াত
আসলে সিজদা করে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)বলেন,
এখন আপনি যেতে পারেন।
ওতবা কুরাইশরা নেতৃবৃন্দের
কাছে যেয়ে বলেন, তোমরা যাই মনে কর
না কেন, আমি মুহাম্মাদের নিকট
থেকে এমন বানী শুনেছি,যার প্রভাব
অবশ্যই মানব সমাজে পড়বে, মানষু
তা গ্রহন করবে। সে রাষ্ট্রের মালিক
হবে। তোমরা তাকে কিছু
বলনা,সে যদি রাষ্টপতি হয়, তাহলে ﻪﻜﻠﻣ
ﻢﻜﻜﻠﻣ ﻩﺰﻋﻭ ﻢﻛﺰﻋ অর্থ তাঁর রাজত্ব
তোমাদের রাজত্ব এবং তাঁর ক্ষমতা ও
সম্মান তোমাদের ক্ষমতা ও সম্মান
বলে গন্য। (সীরাতে ইবনে হিশাম)
কোরআনের আায়াত এবং রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
এর কার্যক্রম দ্বারা ওতবা অনুভব
করতে পারছিলেন যে, মুহাম্মাদ কুরআন
ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করবে। রাষ্ট্র গঠন
করা তাঁর লক্ষ্য।
(ঘ) কুরআন ও সত্যদ্বীনের বিজয় শেষনাবীর
লক্ষ্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ﻱﺬﻟﺍﻮﻫ ﻞﺳﺭﺍ ﻪﻟﻮﺳﺭ ﻦﻳﺩﻭ ﻱﺪﻬﻟﺎﺑ ﻖﺤﻟﺍ
ﻩﺮﻬﻈﻴﻟ ﻲﻠﻋ ﻦﻳﺪﻟﺍ ﻪﻠﻛ ﻮﻟﻭ ﻩﺮﻛ ﻥﻮﻛﺮﺸﻤﻟﺍ
অর্থ তিনিই যিনি তাঁর রাসূলকে "আল -
হুদা "এবং "দ্বীনুল হাক্ক "দিয়ে প্রেরন
করেছেন, যাতে করে তিনি সমস্ত দ্বীনের
উপর উহাকেই বিজয়ী করতে পারেন, যদিও
মুশরিকরা অপছন্দ করে। (সুরা আত -তাওবা,
সুরা আল -ফাতিহা ও সুরা আস -সাফ)
রাসুলের সমস্ত কাজের লক্ষ্য ছিল আল কুরআন
ও দ্বীন কে বিজয়ী করা।
(ঙ) হিজরাতের পুর্বে রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
কে আল্লাহ একটি দুআ শিক্ষা দেন। আল্লাহ
বলেন,
ﻞﻗﻭ ﺏﺭ ﻞﺧﺪﻣ ﻲﻨﻠﺧﺩﺍ ﻕﺪﺻ ﻲﻨﺟﺮﺧﺍﻭ ﺝﺮﺨﻣ
ﻦﻣ ﻲﻟ ﻞﻌﺟﺍﻭ ﻕﺪﺻ ﻚﻧﺪﻟ ﺎﻧﺎﻄﻠﺳ ﺍﺮﻴﺼﻧ
অর্থ আর (হে রাসুল সাঃ)
তুমি প্রার্থনা কর, হে রব,
তুমি আমাকে সততাপুর্ন স্থানে প্রবেশ
করাও, সততাপুর্ন স্থানে আমাকে বের
করে নিয়ে যাও এবং তোমার খাচ্ পক্ষ
থেকে আমাকে সাহায্যকারী রাষ্ট্র
ক্ষমতা প্রদান কর। (সুরা বনী ইসরাইল)
আল্লাহ তাঁর প্রিয়
শেষনাবীকে রাষ্ট্রব্যবস্থা দান করবেন
বলে দুআ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাজের লক্ষ্য
আল্লাহই নির্ধারন করেছেন
ইসলামী রাষ্ট্র গঠন।ইসলামী রাষ্ট্র গঠন
করে আল্লাহর আইন বিধান চালু
করা এবং সে মাফিক জীবন করার
ব্যবস্থা করা হলো রাসুলের আদর্শ। (চলবে)

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়