রহস্য গল্প- একজন আদর্শ স্বামী

'মিয়া ভাই (রহস্য
গল্প)একজন আদর্শ স্বামী.

পয়ত্রিশ বছর বয়সে মেগাসিটি ঢাকায় নিজের
ফ্ল্যাটে বসে সিগারেট ধরাতে গিয়ে পনের বছর
বয়সে গ্রামের আখ ক্ষেতের আড়ালে গিয়ে
সিগারেট ধরানোর মধ্যে অদ্ভুত এক সাদৃশ্য লক্ষ্য
করলাম।
সিগারেট ধরাতে চাচ্ছি কিন্তু পারছিনা।হাত কাঁপছে।
এভাবেই কেঁপেছিল এখন থেকে মোটামুটি বছর
বিশেক আগে সেই আখ ক্ষেতে বসে জীবনে
প্রথমবারের মত সিগারেট ধরানোর সময়।এরপর
অসংখ্যবার কাজটা করা হলেও আজকের মত
কখনোই হয়নি।
আমি আবাব্রো লাইটার ধরিয়ে মুখের কাছে
আনতেই দেখতে পেলাম শিখাটা কাঁপছে।
বিশ বছর আগের সেইদিনটার সাথে আরো একটা
ক্ষেত্রে মিল আছে আজকের দিনটার।সেদিন
যেমন জীবনের প্রথম কোনও নিষিদ্ধ কাজ করার
উত্তেজনায় হাত কেঁপে উঠেছিল আজও একই
ব্যাপার।নিষিদ্ধ কাজগুলো বোধহয় সবসময়ই
স্নায়ুকে এভাবেই শিথিল করে দেয়।প্রাথমিক
উত্তেজনা কেটে যেতেই একটা অবসাদ এসে
ভর করে শরীরে।
আমি আপাতত সিগারেট ধরানো বাদ দিয়ে ঘুরে
খাটের উপর বসা নীলার দিকে তাকালাম।একটা চাদর
দিয়ে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে ও।আমি
তাকাতেই আমার দিকে কেমন একটা হাসি দিয়ে খাট
থেকে নেমে পাশের রুমে চলে গেল।
আমি আবার সিগারেট ধরানোয় মন দিলাম।আশ্চর্য!এবার
কোনো ধরনের কাঁপাকাঁপি ছাড়াই সিগারেটটা ধরাতে
পারলাম।কষে একটা টান দিলাম সিগারেটে।এতক্ষণ
ধরে এই সামান্য কাজটা করতে না পারার সম্পূর্ণ রাগটা
ঝাড়লাম ক্যান্সার স্টিকটার উপর।আমার ধারণা নীলার
উপস্থিতিই এতক্ষন আমার স্নায়ুর উপর বাড়তি চাপ
ফেলছিল।
আমি উঠে গিয়ে অ্যাশট্রেতে ছাই ফেললাম।রুপা
যেখানে সেখানে ছাই ফেলা একদমই পছন্দ
করেনা।আমিও ওর অপছন্দের কাজগুলো
মোটেই করিনা।একজন আদর্শ স্বামীর যোগ্য
প্রতিচ্ছবি আমি।
খুব সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই অফিসে চলে
যাই।রুপার রান্না করতে কষ্ট হবে বলে দুপুরের
খাবার সকালে নেইনা।দুপুরে নিজেই এসে
খেয়েযাই।অফিস থেকে কখনই দেরী করে
ফিরিনা।বাসায় ফিরে বউয়ের সাথে হিন্দি সিরিয়াল
দেখতে বসে যাই।মাঝে মাঝে যখন আবেগঘন
দৃশ্য দেখে রুপা নাক টানতে থাকে তখন আস্তে
করে রুমালটা বাড়িয়ে দেই ওর দিকে!
কখনই ওকে ওর বাবার বাড়ি যেতে নিষেধ করিনা।
আমি যেতে না পারলেও ওকে একা একা যাবার
অনুমতি দিয়ে দিয়েছি।
মাসের শুরুতে বেতনটা এনে রুপার হাতে তুলে
দিয়ে আমিও যেন একরকম নিশ্চিন্ত হয়ে যাই।
সপ্তাহে একদিন নিয়ম করে ওকে নিয়ে ঘুরতে
বের হই।প্রেমিক প্রেমিকার মত করে একজন
আরেকজনের হাত ধরে ঘুরে বেড়াই আমরা।
ক্লান্ত হয়ে পড়লে ঢুকে পড়ি কোনো
রেস্টুরেন্টে।সেগুলোও বরাবরই অভিজাত হয়ে
থাকে।কখনো কফির মগ,কখনো বা অন্য
কোনো কিছু সামনে নিয়ে একে অপরের
চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি।সে সময়টাতে রুপা
নিশ্চয়ই নিজের স্বামী ভাগ্যে আত্মতৃপ্তি অনুভব
করে।
একজন আদর্শ স্বামী হয়ে আমি নিজেও কম পাইনি
রুপার কাছ থেকে।বরং কী পাইনি সে হিসেবেই
তালগোল পাকিয়ে ফেলব।
এখনও রুপা পতিপ্রাণা স্ত্রীর মত আমাকে ছাড়া খায়না।
প্রতিদিনই খাবারের টেবিলে আমার একটা না একটা
পছন্দের উপস্থিতি পাই।রান্নাতেও যে কোনও
মেয়ের ঈর্ষার পাত্রী রুপা।
আমার পূর্ব অনুমতি থাকলেও কোন কাজ আমাকে না
বলে করেনা।সামান্য একটা কানের দুল কেনার
আগেও আমার জানিয়ে নেবে।
আজ পর্যন্ত আমাদের কখনো ঝগড়া হয়েছে কিনা
এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না আমার।রুপা অবশ্য
বলতে পারবে।মেয়েটার দিন তারিখ মনে রাখার
ক্ষমতা অসাধারণ।আমার যেকোনো ভবিষ্যত
কাজের কথা ওকে একবার বলে রাখলে আমাকে
আর সেটা নিয়ে টেনশন করতে হয়না।
মোবাইলের রিমাইন্ডারের মত ঠিকই সময়মত মনে
করিয়ে দেবে।
এমন একটা মেয়েকে বউ হিসেবে পাওয়ার পর
আসলে আর কিছু চাইবার থাকতে পারেনা।কিন্তু
জন্মগতভাবেই মানুষের রক্তের মধ্যে নিষিদ্ধ
জিনিষের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ঢুকিয়ে দেয়া
হয়েছে।
আমার মনে হয়,নিষিদ্ধ কাজের সময় দেহে বাড়তি
যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় সেটাই মুল আকর্ষণ।মানুষ
রক্তে অ্যাড্রোনালিনের ছড়িয়ে পড়াটা বার বার
উপভোগ করতে চায়।নয়ত রুপার মত স্ত্রী
থাকতে নীলা কেন আমার শয্যার ভাগীদার হবে?
আমি দরজার খোলার শব্দে তাকিয়ে দেখি নীলা
বেরিয়ে আসছে পাশের রুম থেকে।প্রথমেই
আমার চোখ পড়ে গেল ওর কপালে।টিপটা ঠিকমত
বসাতে পারেনি।একদিকে সরে গেছে।আমার
মনে পড়ে গেল,ও ঘরে কোন আয়না নেই।
টিপটার কথা বলতে হবে ওকে।
নীলার পরনে হালকা সবুজ রঙয়ের একটা শাড়ি।একটু
আগে যেটা পড়া ছিল সেটাই।কিন্তু আমি অবাক হয়ে
লক্ষ্য করলাম,মাত্র আধঘন্টা আগেও এই শাড়িতে
জড়ানো অবয়বটা আমার কাছে যতটা আকর্ষণীয়
মনে হয়েছিল,সে আকর্ষণের বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট
নেই।
কেন হয় এমনটা? কাঙ্ক্ষিত বস্তুটাকে পেয়ে যাবার
প্রতিক্রিয়া?নাকি নিষিদ্ধ বস্তুগুলো এভাবেই দ্রুত তার
আকর্ষণ হারায়?
‘আমি গেলাম,’আমার সামনে দাঁড়িয়ে বলল নীলা।একটা
সন্ত্রস্তভাব লক্ষ্য করলাম ওর মধ্যে।একটু আগের
সেই মদির কন্ঠ বেমালুম গায়েব!
‘এমনই হয়!’আমি মনে মনে বললাম।মুখে
বললাম,‘হ্যা,যাও,রুপারও বোধহয় আসার সময় হয়ে
গেছে।’
নীলা আর কোনো কথা না বলে দরজার দিকে হাঁটা
দিল।
‘দরজা খোলার আগে কী হোল দিয়ে ভালভাবে
দেখে নিও,’গলা চড়িয়ে বললাম আমি।ওকে দরজা
পর্যন্ত বোধহয় এগিয়ে দেয়া উচিৎ ছিল।ইচ্ছে
করছেনা।
নীলা আমার কথার জবাব দিলনা।দরজা খুলে বেরিয়ে
গেল।একটু পরই পাশের ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ হবার
আওয়াজ পেলাম।‘ও তাহলে ভালভাবেই বাসায় ফিরতে
পেরেছে,’ভাবলাম আমি।
নীলা আমার পাশের ফ্ল্যাটে থাকে।একই ফ্লোর।
স্বামী বিদেশে থাকে।নীলার সাথে শুধু ওর এক
বিধবা ফুফু শাশুড়ি থাকে।দজ্জাল টাইপ মহিলা।তাঁর কারনেই
নীলা এখনো পুরোপুরি উচ্ছনে যায়নি।স্বামী
দেশের বাইরে থাকায় পাখির স্বভাব পেয়েছে
সুদীপা।যেখানে সেখানে উড়ে বেড়ায়।গায়ের
রঙ শ্যামলা হলেও চেহারায় চটুলতার ছাপ স্পষ্ট।খুব
ভাল ছলাকলা করতে জানে মেয়েটা।
ওকে আমি প্রথম দেখি লিফটে।দেখাটা তখন শুধু
দেখাই ছিল।সেটাকে অন্য কিছুতে রুপান্তরিত করার
কথা তখনো ভাবিনি,এখনও ভাবিনা।রুপার মত বউ
ফেলে সেটা ভাবাটা অন্যায়ও বটে।আজকের ঘটনাটা
স্রেফ সাময়িক একটা উত্তেজনার আকাঙ্ক্ষা
থেকে ঘটে গিয়েছে।
হঠাত মাথায় প্রশ্ন এল,আমি কি রুপার উপর থেকে
আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি?রুপার সাথে সংসার করতে
করতে কি আমি ক্লান্ত?
উত্তরটা সোজা না।বেশ কঠিন।শুধুমাত্র সাময়িক
উত্তেজনার লোভে স্ত্রীর বিশ্বাসের
জায়গাটাকে আস্তাকুড়ে পরিনত করাটা কতটা
যুক্তিযুক্ত?তবে এটাও ঠিক রুপাকে ছাড়া আমি
নিজেকে কল্পনা করতে পারিনা।আর নীলাকে
ভালবাসার তো কোনো প্রশ্নই ওঠেনা।ওমন
মেয়েকে শুধু ব্যাবহার করা যায়,ভালবাসা যায়না।
আচ্ছা,নীলাকে নিয়ে আমি যেমনটা ভাবছি রুপাকে
নিয়েও এমনটা ভাবেনাতো কেউ?
ছিঃছিঃ এসব কি ভাবছি আমি?সম্ভবত একঘেয়ে নীরস
জীবন যাপন ধীরে ধীরে আমার মানসিক বিকৃতি
ঘটাচ্ছে।হয়ত কয়দিন পরই দেখা যাবে গভীর
রাতে হাতে ছুরি নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছি।
রাস্তাঘাটে মেয়েছেলে দেখলেই ধর্ষণ করার
পর গলা দু ফাঁক করে দিচ্ছি।লন্ডনের সেই কুখ্যাত
রহস্যময় সিরিয়াল কিলার জ্যাক দ্যা রিপারের মত।পত্রিকায়
শিরোনাম আসবে,‘বাংলার জ্যাক দ্যা রিপারের
আবির্ভাব,নৃশংসতার নতুন অধ্যায়!’
আমি বোধহয় সত্যি সত্যিই ম্যানিয়াকে পরিণত হচ্ছি।
প্রতিজ্ঞা করলাম আজই শেষ।নিষিদ্ধ উত্তেজনার
খোঁজ আমি আর কখনোই করবনা।
উত্তেজনা আমি নিজেই তৈরি করে নেব।আগামী
মাসেই রুপাকে নিয়ে দেশের বাইরে ঘুরতে যাব।
মাথায় মেঘের মুকুট পড়া আকাশ ছোঁয়া পর্বতমালা
আমার মধ্যে তৈরি করবে শিহরণ।দিনে সমুদ্রে ডুব
দেব উত্তেজনার খোঁজে।রাতে রুপাতে,অন্য
কিছুর খোঁজে।
সিদ্ধান্তটা নেবার সাথে সাথেই অদ্ভুত এক
প্রশান্তিতে ভরে গেল আমার গোটা অস্তিত্ব।ঠিক
তখনই মনে পড়ে গেল নীলাকে বাঁকা হয়ে থাকা
টিপটার কথা বলা হয়নি।
দুই
রুপা বাসায় এল নীলা চলে যাবার প্রায় ঘন্টাখানেক
পর।ও বাসায় ঢোকা মানেই বাসার মধ্যে একটা পাখির
ঝাঁক ঢুকে পড়া।প্রচুর কথা বলে মেয়েটা।ভালই
লাগে শুনতে।
বাসায় পা দিয়েই বলল,‘বুঝেছ,মা অনেক করে
খেয়ে আসতে বলেছিল আমাকে।আমি বললাম তাই
আবার হয় নাকি?তোমার জামাই বাসায় একা একা কি খাবে?
মা অবশ্য বলেছিল তোমাকেও ফোন করে
ডেকে পাঠাতে,আমি রাজি হইনি।ভাল করেছিনা?’
‘হুমম,অনেক ভাল করেছ।’মনে মনে বললাম,‘কতটা
ভাল যে করেছ সেটা তুমি নিজেও জানোনা!’
‘এখন বল কী খাবে?আমি কিন্তু এই রাত করে
বেশি ঝামেলা করতে পারবনা।চিকেন বিরিয়ানী করি?’
আমি হেসে ফেললাম।পাগলীটা বলে কী?
বললাম,‘বিরিয়ানী তাহলে কী?’
‘আমি বোঝাতে চেয়েছি বিরিয়ানীর সাথে আর
কিছু করতে পারবনা।বুঝতে পেরেছেন বস?’
‘জী ম্যাম,পেরেছি।যদি বিরিয়ানীটা ভাল হয় তাহলে
বড় ধরনের একটা সারপ্রাইজ দেব তোমাকে।’
‘তাহলে সারপ্রাইজ দেবার জন্য রেডি থাকো।
বিরিয়ানী অবশ্যই ভাল হবে।’
‘ইনশাল্লাহ বলো।’
‘ইনশাল্লাহ।আমি তাহলে রান্না বসিয়ে দিয়ে আসি।
এরপর তোমাকে ফারজানার বিয়ের ভিডিও দেখাব।’
‘ফারজানাটা যেন কে?’
‘আরে ওই যে,আমার বান্ধবী।সেদিন ওর
বিয়েতে গেলামনা?তুমি তো জরুরী মিটিং-এর
কারণে আসতে পারলেনা।’
‘ও হ্যা,মনে পড়েছে।আচ্ছা তুমি রান্না চড়িয়ে দিয়ে
এস এরপর তোমার বিয়ের ভিডিও দেখব।’
রুপা কয়েক পা এগিয়ে থমকে দাড়াল।‘ওরে ফাজিল!
আমার বিয়ের ভিডিও না?দাড়াও আজ বিরিয়ানীতে এমন
ঝাল দেব!
‘তাহলে সারপ্রাইজ মিস করবে।’
‘সারপ্রাইজ তুমি আমাকে এমনিতেই দেবে আমি
জানি।’
‘তা অবশ্য ভুল বলো নাই।’আমি বললাম।
রুপা একটা মিষ্টি হাসিদিয়ে চলে গেল রান্নাঘরের
দিকে।সেদিকে তাকিয়ে একটা স্বস্তির নিশ্বাস
ফেললাম।যাক,নীলার ব্যাপারটা তাহলে বুঝতে
পারেনি রুপা!
কিছুক্ষন পর রুপা যখন রান্না চাপিয়ে,পোশাক চেঞ্জ
করে আমাদের বেডরুমে ঢুকল তখন আমি টিভি
দেখছি।ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড।আমার প্রিয় অনুষ্ঠান।
তবে অনুষ্ঠানের চাইতে অনুষ্ঠানের নামটা আমার
কাছে বেশি প্রিয়।
প্রতিটা সংসারই যেন এক একটা বুনো জঙ্গল।আর
আমরা প্রতিনিয়ত সেই জঙ্গলের বিরুদ্ধে লড়ে
যাচ্ছি।অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
রুপা রুমে ঢুকে ওয়ারড্রোবের ওপর থেকে ওর
মুভি ক্যামেরাটা নামাল।ওটা হাতে নিয়ে বলল,‘এই তুমি কি
আমার ক্যামেরাটা নিয়েছিলে?’
‘না তো।কেন কি হয়েছে?’আমি টিভি পর্দার দিকে
তাকিয়ে বললাম।
‘না তেমন কিছু হয়নি।আমি সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের
হবার আগে ফুল চার্জ দেখে গিয়েছিলাম,এখন
দেখি একটুও চার্জ নেই।’
‘হয়ত ব্যাটারিতে প্রবলেম।’
রুপা উঠে গিয়ে স্পেয়ার ব্যাটারি নিয়ে এল।ব্যাটারি
লাগিয়ে কিছুক্ষন খুট খাট করে বলল,‘তাই তো বলি
এমনি এমনি চার্জ শেষ হয় কিভাবে?দেখনা,কী
বোকামিটাই না করেছি।বাসা থেকে বের হবার
আগে ভুলে ভিডিও চালু করে গিয়েছিলাম।ঘন্টা
দুয়েক ভিডিও হবার পর চার্জ ফুরিয়ে ক্যামেরাটা একা
একাই বন্ধ হয়ে গেছে।’
‘ডিলিট করে দাও।’অন্যমনস্ক হয়ে বললাম কথাটা।ঠিক
তখনই বিদ্যুৎচমকের মত মনে পড়ে গেল
ক্যামেরাটা ওয়ারড্রোবের উপর রাখা ছিল।ওখান
থেকে পুরো রুমের ভিউ পাওয়া যায়।তারমানে একটু
আগের ঘটনা...
আমি ঝট করে পেছন ফিরলাম।রুপার দিকে
এগোতে গিয়ে দেখি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে
ওর মুখভঙ্গি সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে।চেহারায় ফুটে
উঠেছে তীব্র অবিশ্বাস,বিষ্ময় আর...আর একরাশ
বেদনা।
উপসংহার
ঘন্টাখানেক পর
রাত তখন বেশ গভীর হয়েছে।ঢাকার অভিজাত
এলাকার একটি বাড়ি থেকে একটি ছায়ামূর্তি বেরিয়ে
এল রাস্তায়।একটু আগ পর্যন্ত বাড়িটার একটা ফ্ল্যাট
থেকে প্রচন্ড ঝগড়া ঝাঁটির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল।এই
মুহূর্তে সব নীরব,নিস্তব্ধ এবং নিথর!
ছায়ামূর্তিটা বাড়ি থেকে বেড়িয়ে হাঁটতে শুরু করল।
রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে যাবার ঠিক আগমুহূর্তে তার
হাতে ধরা ছুড়িটা থেকে টুপ করে এক ফোঁটা রক্ত
ঝরে পড়ল।
একসপ্তাহ পর পত্রিকার শিরোনাম-বাংলার জ্যাক দ্যা
রিপারের আবির্ভাব,নৃশংসতার নতুন অধ্যায়...
পুনশ্চঃপাঠকরা এত অলস কেন হয়?পনেরো বিশ
মিনিট লাগিয়ে গল্পটা পড়তে পারলেও একটা কমেন্ট
করতে পারেননা!(আর কিছু বললাম না!)

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়