নারীর ফেতনা ভয়ঙ্কর Save your eyes

সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যে। দরূদ ও
সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর পরিবারবর্গ এবং
সাহাবাগণের উপর।
সাধারণ ভাবে সকল মানুষ এবং বিশেষ ভাবে যুবক ও
অবিবাহিতরা সবচেয়ে বড় যে সমস্যার সম্মুখীন
হচ্ছে, তাহলো অপরিচিতা মহিলার প্রতি দৃষ্টি প্রদান
করা। তারা এই বিপদের সম্মুখীন সকল জায়গাতেই
হচ্ছে। হাটে-বাজারে, হাসপাতালে, বিমানবন্দরে,
এমন কি পবিত্র জায়গা গুলোতেও এ বিপদ থেকে
মুক্ত নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন:
: ﻣَﺎ ﺗَﺮَﻛْﺖُ ﺑَﻌْﺪِﻱ ﻓِﺘْﻨَﺔً ﺃَﺿَﺮَّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ
“আমার পরে পুরুষের জন্যে মহিলাদের চেয়ে
অধিক ক্ষতিকারক কোন ফিতনা রেখে যাই
নি।” (বুখারী মুসলিম) তিনি আরও বলেছেন:
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺣُﻠْﻮَﺓٌ ﺧَﻀِﺮَﺓٌ ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻣُﺴْﺘَﺨْﻠِﻔُﻜُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻓَﻴَﻨْﻈُﺮُ
ﻛَﻴْﻒَ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﻓَﺎﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀَ ﻓَﺈِﻥَّ ﺃَﻭَّﻝَ ﻓِﺘْﻨَﺔِ
ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨِّﺴﺎﺀ
“নিশ্চয়ই এই দুনিয়া হচ্ছে সবুজ-শ্যামল, সুমিষ্ট।
আল্লাহ তা’আলা ইহাতে তোমাদেরকে খলীফা
(প্রতিনিধি) নিযুক্ত করেছেন এই জন্যই যে, তিনি
দেখতে চান তোমরা কি আমল কর। অতএব
তোমরা দুনিয়ার ফিতনা হতে বাঁচ এবং মহিলাদের
ফিতনা থেকেও বেঁচে থাক। কেননা বনী
ইসরাইলের মধ্যে সর্ব প্রথম যে ফিতনা (বিপদ)
দেখা দিয়েছিল তা ছিল মহিলার ফিতনা।” (মুসলিম)
নিম্নে দৃষ্টি সংযত রাখার কতিপয় উপায় পেশ করা হল
যা উক্ত বিপদজনক ফিতনা থেকে রক্ষা করতে
সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ:
১) দৃষ্টি অবনত রাখা: হারাম বা নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি
দৃষ্টি নিক্ষেপ না করার ব্যাপারে রয়েছে বহু
আয়াত ও হাদীস : যেমন,
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ﻗُﻞْ ﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻳَﻐُﻀُّﻮﺍ ﻣِﻦْ ﺃَﺑْﺼَﺎﺭِﻫِﻢْ ﻭَﻳَﺤْﻔَﻈُﻮﺍ ﻓُﺮُﻭﺟَﻬُﻢْ
ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺯْﻛَﻰ ﻟَﻬُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺧَﺒِﻴﺮٌ ﺑِﻤَﺎ ﻳَﺼْﻨَﻌُﻮﻥَ
“মু’মিনদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে
সংযত করে এবং তাদের লজ্জা স্থানের হেফাজত
করে, এটা তাদের জন্যে পবিত্রতম; তারা যা করে
সে বিষয়ে আল্লাহ অবিহিত।” (সূরা নূর: ৩০)।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻛَﺘَﺐَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﺁﺩَﻡَ ﺣَﻈَّﻪُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺰِّﻧَﺎ ﺃَﺩْﺭَﻙَ ﺫَﻟِﻚَ ﻟَﺎ
ﻣَﺤَﺎﻟَﺔَ ﻓَﺰِﻧَﺎ ﺍﻟْﻌَﻴْﻨَﻴْﻦِ ﺍﻟﻨَّﻈَﺮُ ﻭَﺯِﻧَﺎ ﺍﻟﻠِّﺴَﺎﻥِ ﺍﻟﻨُّﻄْﻖُ ﻭَﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ
ﺗَﻤَﻨَّﻰ ﻭَﺗَﺸْﺘَﻬِﻲ ﻭَﺍﻟْﻔَﺮْﺝُ ﻳُﺼَﺪِّﻕُ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﻭْ ﻳُﻜَﺬِّﺑُﻪ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা আদম সন্তানের উপর
জেনার একটা অংশ অবধারিত করে দিয়েছেন।
নিশ্চিতভাবে তা সে পাবে। সুতরাং চোখের জিনা হল
দৃষ্টি দেয়া। জিহ্বার জিনা হল কথা বলা। আর অন্তর
কামনা করে। লজ্জা স্থান তা সত্যে পরিণত করে,
অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” অর্থাৎ লজ্জা স্থানের
দ্বারা কেউ অশ্লীলতায় লিপ্ত হয় আবার কেউ তা
থেকে বিরত থাকে। (বুখারী মুসলিম)।
সাহাবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রা:) বলেন, আমি
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে মহিলার প্রতি
হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করলে তিনি বললেন:
“তুমি তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখ।” (মুসলিম ও আবু
দাউদ)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী (রা:) কে
লক্ষ্য করে বলেছেন:
ﻳَﺎ ﻋَﻠِﻲُّ ﻟَﺎ ﺗُﺘْﺒِﻊْ ﺍﻟﻨَّﻈْﺮَﺓَ ﺍﻟﻨَّﻈْﺮَﺓَ ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻚَ ﺍﻟْﺄُﻭﻟَﻰ ﻭَﻟَﻴْﺴَﺖْ ﻟَﻚَ
ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓ
“হে আলী তুমি অপরিচিতা মহিলার প্রতি বার বার দৃষ্টি
ফেলিও না। কেননা তোমার জন্যে প্রথমবার বৈধ
হলেও দ্বিতীয় বার বৈধ নয়।” (তিরমিযী)
হাদীসে উল্লেখিত প্রথমবার দৃষ্টি বৈধ হওয়ার
উদ্দেশ্য হল, অনিচ্ছাকৃত বা হঠাৎ যেই দৃষ্টি পড়ে
যায়; ইচ্ছাকৃত দেখা নয়।
২) আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা করা এবং তাঁর
সম্মুখে নিজেকে উপস্থিত রাখা:
এই কঠিন ফিতনা থেকে নিজেকে বাঁচানো ও
হেফাজতে রাখার ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলার কাছে
বার বার প্রার্থনা করা।
মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীসে কুদসীতে
এসেছে:
ﻳَﺎ ﻋِﺒَﺎﺩِﻱ ﻛُﻠُّﻜُﻢْ ﺿَﺎﻝٌّ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦْ ﻫَﺪَﻳْﺘُﻪُ ﻓَﺎﺳْﺘَﻬْﺪُﻭﻧِﻲ ﺃَﻫْﺪِﻛُﻢْ
“হে আমার বান্দাগণ! তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট,
কিন্তু আমি যাকে হেদায়েত দেই সে নয়। সুতরাং
আমার কাছে হেদায়েত চাও আমি তোমাদেরকে
হেদায়েত দিব।” (মুসলিম)
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
”এবং যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা
করে, তখন তাদেরকে বলে দাও: নিশ্চয়ই আমি
সন্নিকট বর্তী। কোন আহ্বানকারী যখনই
আমাকে আহবান করে তখনই আমি তার আহবানে
সাড়া দিয়ে থাকি। সুতরাং তারাও যেন আমার আহবানে
সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে, তাহলেই তারা
সঠিক পথে চলতে পারবে।” (সূরা বাকারাঃ ১)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দুয়াতে
বলতেন:
ﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻗْﺴِﻢْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺧَﺸْﻴَﺘِﻚَ ﻣَﺎ ﻳَﺤُﻮﻝُ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻦَ
ﻣَﻌَﺎﺻِﻴﻚَ
“হে আল্লাহ আমাদের অন্তঃকরণে আপনার ভয় দান
করুন, যা আমাদের এবং আপনার নিষিদ্ধ পাপকাজের
মাঝে প্রতিবন্ধক হবে।”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুয়াতে
আরও বলতেন:
ﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﺳَﻤْﻌِﻲ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﺑَﺼَﺮِﻱ ﻭَﻣِﻦْ
ﺷَﺮِّ ﻟِﺴَﺎﻧِﻲ ﻭَﻣِﻦْ ﺷَﺮِّ ﻗَﻠْﺒِﻲ
উচ্চারণ: (আল্লাহম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন শাররি সাময়ী,
ওয়া মিন র্শারি বাছারী, ওয়া মিন র্শারি লিসানী, ওয়া
মিন র্শারি ক্বলবী।)
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আমার কর্ণ, আমার
চক্ষু, আমার জিহ্বা এবং আমার অন্তরের অনিষ্ট
থেকে পরিত্রাণ চাই।” (আবু দাউদ)। আল্লামা
আলবানী (র:) অত্র হাদীছটিকে সহীহ
বলেছেন।)
৩) সকল অবস্থায় আমাদেরকে পর নারীর প্রতি
দৃষ্টি দেয়ার ব্যাপারে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন
করার চেষ্টা করতে হবে:
কেননা সর্বাবস্থায়, সর্ব ক্ষেত্রে ও সকল সময়
হারামে পতিত হওয়া থেকে দৃষ্টি সংযত রাখা
আবশ্যক। সুতরাং বাতিল দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করার
অধিকার তোমার নেই এবং এই বলেও তুমি
নিজেকে পাক বলে দাবী করিও না যে, বর্তমানে
চলমান কুপ্রথা আমাকে এই ভয়াবহ বিপদের প্রতি
আহবান করছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻤُﺆْﻣِﻦٍ ﻭَﻻ ﻣُﺆْﻣِﻨَﺔٍ ﺇِﺫَﺍ ﻗَﻀَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟُﻪُ ﺃَﻣْﺮﺍً
ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﻟَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺨِﻴَﺮَﺓُ ﻣِﻦْ ﺃَﻣْﺮِﻫِﻢْ ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﻌْﺺِ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮﻟَﻪ
ﻓَﻘَﺪْ ﺿَﻞَّ ﺿَﻼﻻً ﻣُﺒِﻴﻨﺎ
“আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়সালা
করলে কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিন নারীর
নিজেদের কোন ব্যাপারে অন্য কোন
সিদ্ধান্তের ইখতিয়ার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলকে অমান্য করলে সে তো
স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।”(সূরা আহযাব ৩৬)
৪) আল্লাহ তা’আলা আমাদের সম্পর্কে অবগত
আছেন এবং তাঁর জ্ঞান দ্বারা আমরা
পরিপূর্ণভাবে পরিবেষ্টিত। তাই তাঁর থেকে
লজ্জা করা আবশ্যক:
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎ ﺍﻟْﺄِﻧْﺴَﺎﻥَ ﻭَﻧَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﺎ ﺗُﻮَﺳْﻮِﺱُ ﺑِﻪِ ﻧَﻔْﺴُﻪُ ﻭَﻧَﺤْﻦُ
ﺃَﻗْﺮَﺏُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣِﻦْ ﺣَﺒْﻞِ ﺍﻟْﻮَﺭِﻳﺪِ
“আমি মানুষ সৃষ্টি করেছি এবং তার মন নিভৃতে যে
কুচিন্তা করে, সে সম্বন্ধেও আমি অবগত আছি।
আমি তার গ্রীবা স্থিত ধমনী থেকেও অধিক
নিকটবর্তী।”(সূরা ক্বাফঃ ১৬)
আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন:
ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﺧَﺎﺋِﻨَﺔَ ﺍﻟْﺄَﻋْﻴُﻦِ ﻭَﻣَﺎ ﺗُﺨْﻔِﻲ ﺍﻟﺼُّﺪُﻭﺭ
“চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি
জানেন।” (সূরা মু’মিন ১৯)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ
করেছেন:
“আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি আল্লাহ তা’আলা
থেকে লজ্জা করার জন্যে, যেমন ভাবে তুমি
তোমার সম্প্রদায়ের একজন ভাল লোক থেকে
লজ্জাবোধ কর।” (অত্র হাদীসটি হাসান বিন সুফইয়ান
বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম আহমাদ (র:) কিতাবুয
যুহুদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন ও আল্লামা
নাছির উদ্দিন আলবানী (র:) ইহাকে সহীহ
বলেছেন।)
অতত্রব আল্লাহ তা’আলা থেকে লজ্জা করুন। আপনি
আপনার দৃষ্টিকে অধিক হালকা মনে করে লাগামহীন
ভাবে ছেড়ে দিবেন না।
৫) আপনার কান, চোখ এবং দেহের চামড়া আপনার
আপনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে:
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﻣَﺎ ﺟَﺎﺀُﻭﻫَﺎ ﺷَﻬِﺪَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺳَﻤْﻌُﻬُﻢْ ﻭَﺃَﺑْﺼَﺎﺭُﻫُﻢْ
ﻭَﺟُﻠُﻮﺩُﻫُﻢْ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ 
“তারা যখন জাহান্নামের কাছে পৌঁছবে, তখন
তাদের কান, চক্ষু, ও ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে
সাক্ষী দিবে।”(সূরা ফুসসিলাত (হা মীম সাজদাহ ২০)
সহীহ মুসলিমে আনাস (রা:) হতে বর্ণিত আছে ,
তিনি বলেন:
“একদা আমরা আল্লাহর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম কাছে উপবিষ্ট ছিলাম, তখন তিনি হাসলেন।
অতঃপর বললেন, “তোমরা কি জানো আমি কেন
হাসলাম?” আনাস (রা:) বলেন, আমরা বললাম, আল্লাহ ও
তাঁর রাসূলই সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভাল
জানেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বললেন, “আল্লাহর সামনে বান্দার কথোপকথন
শুনে হাসলাম। সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক!
আমাকে জুলুম থেকে পরিত্রাণ দিবেন না? রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ
বলবেন, হ্যাঁ অবশ্যই! তখন সে বলবে, আমার
বিরুদ্ধে আমার নিজের ভিতর থেকে কোন
সাক্ষী ছাড়া অন্য কারও সাক্ষ্য গ্রহণ করব না। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তখন আল্লাহ
বলবেন, “আজ তোমার বিরুদ্ধে তোমার নিজের
আত্মা এবং সম্মানিত লেখকগণই (ফেরেশতা)
সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট।” অত:পর তার মুখে তালা
লাগিয়ে দেয়া হবে এবং তার অঙ্গসমূহকে কথা
বলার আদেশ দেয়া হবে, তখন তার অঙ্গসমূহ তার
কৃতকর্ম সম্পর্কে বলতে শুরু করবে। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “অতঃপর
তাকে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে কথা বলার
জন্যে ছেড়ে দেয়া হবে। এক পর্যায়ে সে
অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে লক্ষ্য করে বলবে, ধ্বংস হও
তোমরা, আফসোস, তোমাদের জন্যেই তো
আমি এতো পরিশ্রম করতাম।” (মুসলিম)
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণ হয় যে,
যে চক্ষু দ্বারা আপনি হারাম জিনিস দেখে মানসিক
তৃপ্তি লাভ করছেন তা কাল কিয়ামতে আপনার
বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে। অতএব আপনার চক্ষুকে
হারামে পতিত হওয়া থেকে বিরত রাখুন।
৬) স্মরণ করুন ঐ সমস্ত ফেরেশতাদেরকে যারা
আপনার প্রতিটি আমলকে সংরক্ষণ করে রাখছে:
আল্লাহ তা’আলা বলেন:
: ﻣَﺎ ﻳَﻠْﻔِﻆُ ﻣِﻦْ ﻗَﻮْﻝٍ ﺇِﻟَّﺎ ﻟَﺪَﻳْﻪِ ﺭَﻗِﻴﺐٌ ﻋَﺘِﻴﺪ
“সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার
জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী
রয়েছে।” (সূরা ক্বাফ ১৮)
আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন:
ﻭَﺇِﻥَّ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻟَﺤَﺎﻓِﻈِﻴﻦَ , ﻛِﺮَﺍﻣﺎً ﻛَﺎﺗِﺒِﻴﻦَ , ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ ﻣَﺎ ﺗَﻔْﻌَﻠُﻮﻥَ
“নিশ্চয়ই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত
আছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা জানে যা
তোমরা কর।” (সূরা ইনফিত্বারঃ ১০-১২)
৭) স্মরণ করুন ঐ জমিন কে যার উপরে থেকে
আপনি গুনার চর্চা করে চলছেন:
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন:
ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﺗُﺤَﺪِّﺙُ ﺃَﺧْﺒَﺎﺭَﻫَﺎ
“সেদিন (জমিন) তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।” (সূরা
যিলযাল: ৪)
এই আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
ﻓَﺈِﻥَّ ﺃَﺧْﺒَﺎﺭَﻫَﺎ ﺃَﻥْ ﺗَﺸْﻬَﺪَ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﻋَﺒْﺪٍ ﺃَﻭْ ﺃَﻣَﺔٍ ﺑِﻤَﺎ ﻋَﻤِﻞَ
ﻋَﻠَﻰ ﻇَﻬْﺮِﻫَﺎ ﺃَﻥْ ﺗَﻘُﻮﻝَ ﻋَﻤِﻞَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻳَﻮْﻡَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻗَﺎﻝَ
ﻓَﻬَﺬِﻩِ ﺃَﺧْﺒَﺎﺭُﻫَﺎ
“জমিন তার গর্ভাস্থিত বিষয়কে বলে দেয়ার অর্থ
হল, কিয়ামতের দিন মহিলা ও পুরুষ প্রত্যেক বনী
আদমের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে যা তার উপরে
থেকে করা হয়েছে। জমিন বলবে, উমুক দিন
উমুক কাজ আমার উপর থেকে
করেছে।”(তিরমিযী)
৮) বেশী বেশী নফল ইবাদত করা:
কেননা ফরয ইবাদতের পাশাপাশি বেশী বেশী
নফল ইবাদত করলে আল্লাহ তাঁর বান্দার অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গকে হেফাজতে রাখেন। যেমন,
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা’আলা বলেন: “যে
ব্যক্তি আমার কোন অলীর সাথে শত্রু“তা পোষণ
করবে, আমি অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা
করব। আমার বান্দা যে সব ইবাদতের মাধ্যমে আমার
নৈকট্য হাসিল করে থাকে, তার মধ্যে ঐ ইবাদতের
চেয়ে আমার কাছে আর অধিক প্রিয় কোন
ইবাদত নেই, যা আমি তার উপর ফরজ করেছি। বান্দা
নফল ইবাদতের মাধ্যমে সর্বদা আমার এতটুকু নৈকট্য
অর্জন করতে থাকে, যার কারণে আমি তাকে
ভালবাসতে শুরু করি। আমি যখন তাকে ভালবাসতে থাকি
তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে
শুনে, আমি তার চোখ হয়ে যাই যার মাধ্যমে সে
দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই, যার মাধ্যমে স্পর্শ
করে এবং আমি তার পা হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে
চলাফেরা করে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, আমি
তাকে দিয়ে দেই। সে যদি আমার কাছে আশ্রয়
প্রার্থনা করে আমি তাকে আশ্রয় প্রদান
করি।” (বুখারী)
৯) বিবাহ করা: কেননা বিবাহই হল কুদৃষ্টি থেকে
বেঁচে থাকার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা এবং
উত্তম পন্থা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
ﻳَﺎ ﻣَﻌْﺸَﺮَ ﺍﻟﺸَّﺒَﺎﺏِ ﻣَﻦْ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻉَ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﺍﻟْﺒَﺎﺀَﺓَ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺰَﻭَّﺝْ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ
ﺃَﻏَﺾُّ ﻟِﻠْﺒَﺼَﺮِ ﻭَﺃَﺣْﺼَﻦُ ﻟِﻠْﻔَﺮْﺝِ ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﻄِﻊْ ﻓَﻌَﻠَﻴْﻪِ
ﺑِﺎﻟﺼَّﻮْﻡِ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻟَﻪُ ﻭِﺟَﺎﺀٌ
“হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহ
করার শক্তি রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা ইহা
চক্ষু এবং লজ্জা স্থানের হেফাযতকারী। আর যে
ব্যক্তি বিবাহ করার শক্তি না রাখে সে যেন রোযা
রাখে। ইহা তার জন্যে ঢাল স্বরূপ।” (বুখারী ও
মুসলিম)
১০) বান্দার প্রতি আল্লাহর তা’আলার প্রতিটি
নেয়ামতের স্মরণ করা এবং তার উপযুক্ত শুকরিয়া
করা:
সুতরাং মানুষ চোখকে ভাল ও শরীয়ত সম্মত
কাজে ব্যয় করলে এবং হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ
থেকে বিরত থাকলে এতে তার এই নেয়ামতের
শুকরিয়া করা হল। আর যখন উহাকে হারাম ও নিষিদ্ধ
বস্তুর মধ্যে ছেড়ে দিল তখন সে এই
নেয়ামতের কুফরী করল এবং অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
করল।
১১) অধিক হারে আল্লাহ তা’আলার যিকির করা:
কেননা যিকিরই হল শয়তান থেকে বেঁচে
থাকার কারণ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেন:
ﻭَﺁﻣُﺮُﻛُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﺬْﻛُﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻓَﺈِﻥَّ ﻣَﺜَﻞَ ﺫَﻟِﻚَ ﻛَﻤَﺜَﻞِ ﺭَﺟُﻞٍ ﺧَﺮَﺝَ
ﺍﻟْﻌَﺪُﻭُّ ﻓِﻲ ﺃَﺛَﺮِﻩِ ﺳِﺮَﺍﻋًﺎ ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺗَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺣِﺼْﻦٍ ﺣَﺼِﻴﻦٍ
ﻓَﺄَﺣْﺮَﺯَ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻛَﺬَﻟِﻚَ ﺍﻟْﻌَﺒْﺪُ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﺮِﺯُ ﻧَﻔْﺴَﻪُ ﻣِﻦْ
ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺬِﻛْﺮِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
“আমি তোমাদেরকে আল্লাহর যিকির করার আদেশ
দিচ্ছি। কেননা যে আল্লাহর যিকির করে তার উদাহরণ
হল ঐ ব্যক্তির ন্যায় যাকে আক্রমণ করার জন্য
শত্রু তার পিছু ধাওয়া করছে। শত্রু থেকে
আত্মরক্ষার জন্যে সে একটি সুরক্ষিত
প্রাচীরের মধ্যে আশ্রয় নিল এবং শত্রু“র
আক্রমণ থেকে বেঁচে গেলো।
এমনভাবে বান্দাকে কোন জিনিস শয়তান থেকে
রক্ষা করতে পারে না একমাত্র আল্লাহর যিকির
ছাড়া।” (তিরমিযী)
যখন আপনি এই ফিতনার সম্মুখীন হবেন তখন
আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ করুন। কেননা এই
স্মরণ দ্বারা যেন আপনি শয়তানকে বিতাড়িত করতে
পারেন এবং তার থেকে মুক্তি লাভ করতে পারেন।
আল্লাহর যিকির মানুষের অন্তরকে কুদৃষ্টি থেকে
ফিরিয়ে রাখে। বান্দা যখন আল্লাহর যিকির করে তখন
এই যিকির তাঁর ভয় ও তাঁর থেকে লজ্জার
কারণ হেতু বান্দার কুদৃষ্টির মাঝে এবং আল্লাহর মাঝে
প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।
১২) জান্নাতে হুরদের কথা স্মরণ করুন:
যেন আপনি হারাম জিনিস থেকে দূরে থেকে অতি
সহজেই উহা লাভ করতে পারেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
ﻭَﻟَﻮْ ﺃَﻥَّ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﺍﻃَّﻠَﻌَﺖْ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ
ﻟَﺄَﺿَﺎﺀَﺕْ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﻭَﻟَﻤَﻠَﺄَﺗْﻪُ ﺭِﻳﺤًﺎ ﻭَﻟَﻨَﺼِﻴﻔُﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺃْﺳِﻬَﺎ
ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﻣَﺎ ﻓِﻴﻬَﺎ
“জান্নাতের কোন একজন রমণী যদি দুনিয়া
বাসীর দিকে একবার উকি দিত তাহলে দুনিয়ার সকল
বস্তুকে আলোকিত করে ফেলত এবং সুঘ্রাণে
পরিপূর্ণ হয়ে যেত, আর তার মাথার ওড়না দুনিয়া এবং
উহার মধ্যবর্তী সকল বস্তু হতে অতি উত্তম।
( বুখারী )
আবু হারায়রা (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
ﻟِﻠﺮَّﺟُﻞِ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﺯَﻭْﺟَﺘَﺎﻥِ ﻣِﻦْ ﺣُﻮﺭِ ﺍﻟْﻌِﻴﻦِ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ
ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﺳَﺒْﻌُﻮﻥَ ﺣُﻠَّﺔً ﻳُﺮَﻯ ﻣُﺦُّ ﺳَﺎﻗِﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻭَﺭَﺍﺀِ ﺍﻟﺜِّﻴَﺎﺏِ
“প্রত্যেক পুরুষের জন্যে জান্নাতে দু’জন করে
রমণী থাকবে। প্রত্যেক রমণীর জন্যে
থাকবে সত্তরটি করে পোশাকের সুট, সৌন্দর্যের
কারণে পোশাকের ভিতর থেকে তাঁর
হাড়ের ভিতরের মগজ প্রকাশ পাবে।” (আহমাদ)
যে হারাম থেকে তার দৃষ্টিকে ফিরিয়ে রাখবে
আল্লাহ তা’আলা তার পরিবর্তে তার চেয়ে অনেক
উত্তম জিনিস ব্যবস্থা করে দিবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﻦْ ﺗَﺪَﻉَ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻟِﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﺇِﻟَّﺎ ﺑَﺪَّﻟَﻚَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺑِﻪِ ﻣَﺎ ﻫُﻮَ
ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻚَ ﻣِﻨْﻪ
“যখন তুমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোন কিছুকে
ত্যাগ করবে, তার পরিবর্তে আল্লাহ তা’আলা
তোমাকে উত্তম জিনিষ দান করবেন।” (আহমাদ)
পরিশেষে আল্লাহ তা’আলার কাছে প্রার্থনা জানাই,
তিনি আমাদের সকলকে এই প্রকার কুদৃষ্টি থেকে
বেঁচে থাকার পূর্ণ তাওফীক দান করেন। দরূদ
ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী তাঁর
পরিবারবর্গ এবং সকল সাহাবাদের উপর।
লেখক: জাহিদুল ইসলাম
সম্পাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়