প্রেম করার গুরুত্ব পূর্ণ টিপস

সম্পর্ক ছিল। মেয়ের মা মেয়েকে বলেছে
সে যেন আমাকে ছেড়ে দেয়, কারন আমি তার
মায়ের কাছে খারাপ চরিত্রের মানুষ। আমি তার মায়ের
সাথে খারাপ আচরণ করেছি, তার জন্য আমার
অনুশোচনা হয় এবং তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমি
তার মায়ের পা ধরে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়েছি। মেয়ের
মা বলেছেন, তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন, কিন্তু
তার মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দেবেন না। তার
মেয়ে আমার সাথে ছিল ৫ বছর ধরে এবং আমরা যিনা
করেছি অগণিত বার, যার জন্য আমরা অনুশোচনা করি
এবং আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাই। মেয়েটি আমার সাথে
সৎ ছিল এবং আমিও তার সাথে সৎ ছিলাম, সে বলেছিল
আমরা দুজন বিয়ে করব কারন আমরা যিনা করেছি। তার
পর আমি তার মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করি এবং তার
পা ধরে ক্ষমা চাই, তার পর তাঁর মেয়ে আমার সাথে
ছিল প্রায় ১ বছর ৬ মাস। তার মা তাকে প্রতিনিয়ত
বলতে থাকে আমাকে ত্যাগ করার জন্য, কিন্তু সে
আমাকে ত্যাগ করেনা কারন সে আমার সাথে সৎ ছিল
এবং যেহেতু আমরা যিনা করেছি এবং যেহেতু আমরা
একে অপরকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু হঠাৎ করে
সে বলল, সে আমার সাথে থাকতে পারবে না এবং
আমাকে ছেড়ে চলে যায়। এক বছর ধরে আমি
খুব চেষ্টা করেছি মেয়ের সাথে যোগাযোগ
করার জন্য, এমন কি তাকে আমি কিছু হুমকিও দিয়েছি
(শুধু এই কারনে যে, সে আমার সাথে কথা বলবে
যেন আমি তাকে বুঝাতে পারি যে, আমি ভবিষ্যতে
ঐরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করব না এবং তার কথা মত
কাজ করব) কিন্তু সে আমার সাথে যোগাযোগ
করেনি এবং আমার সাথে কথা বলেনি তারপর
থেকে। আমি জানি না, তার মা মানুষিক ভাবে তাকে
বিভ্রান্ত করছে কিনা এই বলে যে তিনি ব্যথা অনুভব
করছেন তার বাঁ হাতে (যেন সে ভাবে তার মা হৃদ
রোগে আক্রান্ত হচ্ছে) অথবা তার থেকে
প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছে যে সে আমার সাথে
কথা বলবে না। আমি সঠিক জানি না। কিন্তু তার মা তাকে
বিভ্রান্ত করত অন্যান্য মানুষের খারাপ ঘটনার মাধ্যমে,
যেমন কেউ তার স্ত্রীকে শারীরিক ভাবে
আঘাত করে এবং কেউ স্ত্রীকে ছেড়ে চলে
গেছে এবং কেউ তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে
ইত্যাদি। তিনি এ কথাও বলেছেন যে তিনি কোন এক
বাবাকে (কোন ধার্মিক মানুষ হতে পারে) জিজ্ঞাসা
করেছেন আমি বিয়ের পর মেয়েকে ছেড়ে
দিব। আমি জানি যে অদৃশ্য কেউ বলতে পারে না।
১. Sir, আমার প্রশ্ন হল: বিয়ে করা কি সমাধান নয় যদি
আমরা যিনা করে থাকি? আমাদের গুনাহ্ কি কমে যাবে
না, যদি আমরা বিয়ে করি?
২. আমরা যদি বিয়ে না করি, আমাদের গুনাহ্ কি আল্লাহ্
ক্ষমা করবেন যদি আমরা দুজন ১০০ টি চাবুকের শাস্তি
গ্রহণ করি? অথবা শুধু আল্লাহ্র কাছে তার ক্ষমা
প্রার্থনা করলেই কি চলবে, ১০০ টি চাবুকের শাস্তি
গ্রহণ করা ছাড়া?
৩. মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু যদি তার
মা বিয়ে দিতে না চায় তবে আমাদের ক্ষেত্রে কি
একই ১০০ টি চাবুকের শাস্তি প্রযোজ্য হবে?
৪. মেয়ে যদি তার মায়ের জন্য বিয়ে করার
ক্ষেত্র মত পরিবর্তন করে, যেখানে আমি বিয়ে
করতে চাচ্ছি, মেয়ের সাথে যিনা করার পাপের
জন্য। মেয়ে যদি বিয়ে করতে না চায় এই
জেনেও যে, তার উচিত বিয়ে করা যার সাথে সে
যিনা করেছে। এই ক্ষেত্রে মেয়ে এবং
ছেলের গুনাহে্র পরিমান কি হবে?
৫. তার মায়ের জন্য মেয়ে যদি বিয়ে না করে,
তাহলে বিয়ে না করার জন্য যে গুনাহ্ করা হচ্ছে এই
ক্ষেত্রে কে গুনাহ্গার হবে, মেয়ে নাকি মা?
৬. মেয়ে যদি বিয়ে করতে না চায়, ছেলের
ক্ষেত্রে যিনার করার জন্য কি ধরনের গুনাহ্ হবে
যেখানে ছেলে বিয়ে করতে রাজি?
আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব, যদি আপনি আপনার
মূল্যবান সময় ব্যয় করেন আমার প্রশ্নের উত্তর
দেয়ার ক্ষেত্রে।
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্র।
প্রথমত:
আপনার বুঝা উচিত আপনার সমস্যা আছে নিজের
ধর্মীয় প্রতিশ্রুতির উপর এবং যা সব থেকে
দুর্ভোগের বিষয়। আপনার আরও বুঝা উচিত যিনার মত
খারাপ কাজ হচ্ছে, বিভিন্ন কবিরা গুনাহের মধ্যে একটি,
যা আল্লাহ্ তার বান্দাহ্দের করতে নিষেধ
করেছেন এবং তাদের কাছে তুলে ধরেছেন
এর শাস্তি। মহান আল্লাহ্ বলেছেন:
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা
অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ (যা জাহান্নামের পথে
ধাবিত করে, যদি না আল্লাহ্ ক্ষমা করেন)…[সূরা আল-
ইসরা, আয়াত-৩২]
শায়েখ আল-সা’আদি (রহ:) বলেছেন:
তা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার চেয়ে অনেক
বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এর কাছে আসার
ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা অথবা এর সম্মুখীন হওয়ার
ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা, কারন তাতে সব কিছু আছে
যা তার দিকে ধাবিত করে এবং উৎসাহিত করে। যে
পবিত্র স্থানে পশুর পাল চরায়, সে খুব শীঘ্রই তার
সীমা লংঘন করবে, মূলত এই ক্ষেত্রে। এই
প্রবণতা অধিকাংশ মানুষের মধ্যে অনেক বেশি।
আল্লাহ্ যিনা এবং এর ঘৃণিত রুপকে বর্ণনা করেছেন
“ফাহিসা’হ্” বলে অথবা যা শরিয়ত মতে, যুক্তি বা সাধারন
জ্ঞানে একটি ঘৃণিত কবিরা গুনাহ্, কারন তা আল্লাহ্র
অধিকারের ক্ষেত্রে, মহিলার অধিকারের
ক্ষেত্রে এবং তার পরিবার অথবা তার স্বামীর
ক্ষেত্রে সীমালংঘন করে, বিয়ে ধ্বংস করে,
বংশের সংমিশ্রণ ঘটায় এবং অন্যান্য খারাপ পরিনিতির দিকে
ধাবিত করে।
“খারাপ পথ” অর্থ, কতই না খারাপ পথে সেই লোক
যে এই কবিরা গুনাহ্ করার সাহস করে।
তাফসীর আস-সা’আদি, ৪৫৭।
দ্বিতীয়ত:
যিনা একটি স্বাধীন পাপ যার পরিণতি খুবই খারাপ এবং এই
গুনাহ ক্ষমার যোগ্য নয়, যদি না আপনি আল্লাহ্র কাছে
আন্তরিক ভাবে তওবা করেন। মহান আল্লাহ্
বলেছেন:
এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে
না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ
ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না।
যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায়
লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। কিন্তু যারা
তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে,
আল্লাহ তাদের গুনাহ্কে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে
দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যে তওবা
করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান
আল্লাহর দিকে ফিরে আসে…[সূরা আল-ফুরকান,
আয়াত: ৬৮-৭১]
এটা যিনাকারীর জন্য আন্তরিক তওবার একটি সর্ত নয়
যে সে তার যিনা কারী বা কারিণীকে বিয়ে
করবে। পক্ষান্তরে তাদের বিয়ে করার জন্য
প্রথমে প্রয়োজন তওবা করা, পরে ইচ্ছা হলে
বিয়ে করবে।
প্রকৃতপক্ষে, আপনার যিনার পাপ বৃদ্ধি পাবে না যদি তার
মা আপনার সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হয় অথবা
আল্লাহ্র কাছে তওবা করার পরও আপনারা যদি বিয়ে না
করেন, তবে আপনার পাপ বারবে না, আল্লাহ্ সর্ব
সম্মানিত। এতে কোন দোষ নেই মেয়ের বা
তার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি তারা যিনা কারী বা
কারিণীর সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হয়, যদিও তাদের
মধ্যে দুশ্চরিত্রের কাজ ঘটেছে। এটা যিনার পাপ
এবং লজ্জার শরীয়তি সমাধান নয়। বরং সমাধান হচ্ছে
আন্তরিক ভাবে তওবা করা এবং নিজেকে সংশোধিত
করা (যতটুকু নিজের দ্বারা সম্ভব) ভবিষ্যতের জন্য
এবং অনেক ভাল কর্ম করা এই আশায় যে আল্লাহ্
আপনার তওবা কবুল করবেন।
তৃতীয়ত:
তওবা কারীর, তওবা তার উপর প্রদানকৃত শাস্তির
আদেশ থামিয়ে দেয় না এবং তা মাপ বা কমিয়েও
দেয়া যাবে না, যদি কারো উপর প্রমান উপস্থাপন করা
হয়।
এটা তওবার সর্ত নয় যে তার শাস্তি এই পৃথিবীতে
প্রদান করতে হবে, বরং যদি পাপীর পাপ প্রকাশ পায়
এবং এই পৃথিবীতে তার শাস্তি প্রদান করা হয় তাহলে
তা তার জন্য পরিত্রানের বিষয়। যদি আল্লাহ্ তাকে
গোপন রাখে তাহলে পরবর্তীতে এই বিষয়
আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীল। আল্লাহ্ চাইলে তাকে
ক্ষমা করবেন অথবা তাকে শাস্তি দিবেন।
আল্লাহ্ই সর্বাপেক্ষা ভাল জানেন।
Comments
Post a Comment