প্রেম থেকে বিয়ে! তারপর............?
নারী–পুরুষের অবৈধ আবেগী প্রেম অতঃপর বিবাহ যার
পরবর্তী ফলাফল ভয়াবহ ৷
—আব্দুল্লাহ আল বাকী
অবৈধ প্রেম হলো ইসলামের
সাথে সাংঘর্ষিক
কতকগুলো হারাম বিষয়ের সংমিশ্রন ৷
এক্ষেত্রে একজন নারী ও একজন
পুরুষের
মধ্যে বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক
গড়ে ওঠে,
যাকে লোকেরা “প্রেম”
বা “ভালবাসা” বলে ।
প্রেমের ক্ষেত্রে একজন পুরুষ
একজন বেগানা মহিলার
সাথে একাকী কাটানো,
তার দিকে তাকানো, তাকে স্পর্শ
করা, তার
সাথে প্রেমালাপ করা কিংবা তাকে চু…
দেওয়া ইত্যাদি কুপ্রভৃতি জড়িত
থাকে ।
সুতরাং কোন বিবেকবান
লোকেরই সন্দেহ
থাকতে পারে না যে বিষয়টি হারাম।
এ ধরনের সম্পর্ক এর চাইতেও
মারাত্নক দিকে গড়াতে পারে,
যেমনটি বর্তমানে ঘটছে।
দ্বিতীয়ত,
গবেষনায় দেখা গেছে :
১.একজন পুরুষ ও একজন মহিলার মধ্যকার
বিবাহপূর্ব প্রেমের উপর
ভিত্তি করে গড়ে ওঠা বৈবাহিক
সম্পর্ক ব্যর্থ হয় ।
২.অন্য দিকে যে সকল বিয়ে এ
ধরনের হারাম সম্পর্কের ওপর
ভিত্তি করে গড়ে ওঠে নি যেগুলোকে লোকেরা
“প্রথাগত বিয়ে” বলে থাকেন
সেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
সফল হয়। একজন ফ্রেঞ্চ
সমাজবিজ্ঞানী কর্তৃক মাঠপর্যায়ে চালানো এক
গবেষনায় উঠে এসেছে,
“যখন দুই পক্ষ বিবাহ পূর্ব প্রেমের
সম্পর্কে লিপ্ত
হয় না তখন সে বিয়ের সফলতার
সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়”
প্রফেসর ইসমাঈল আবদ’ আল বারি’
কর্তৃক
প্রায় ১৫০০ পরিবারের ওপর
চালানো অন্য এক
জরিপের ফলাফল ছিল এমন
যে শতকরা ৭৫ ভাগ
“ভালবেসে বিয়ে” এর
পরিণতি ছিল ডিভোর্স
যেখানে “প্রথাগত বিয়ে” এর
ক্ষেত্রে শতকরা ৫
ভাগেরও কম। এর কারণ হলো :
১. আবেগ একজন মানুষকে অপরের
ভুলগুলো সম্পর্কে অন্ধ
করে ফেলে ।
এজন্য
বলা হয়ে থাকে,”ভালবাসা অন্ধ“ ।
একপক্ষ বা উভয়পক্ষেরই
সমস্যা থাকতে পারে যেটা তাদেরকে বিপরীত
পক্ষের জন্য অযোগ্য
করে তুলতে পারে, কিন্তু এই
ত্রুটিগুলো ঠিক বিয়ের পরেই
স্পষ্ট
হয়ে ওঠে।
২. প্রেমিক-প্রেমিকারা ভাবেন,
এজীবন শুধুই
ভালবাসার পথে অন্তহীন একযাত্রা । তাই
দেখা যায় তাদের বলা পরস্পরের মধ্যকার
কথাগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ভালবাসার গল্প
আর স্বপ্নের জাল বোনা ছাড়া আর
কিছুই থাকে না । তারা বাস্তব জীবনের
সমস্যা এবং সেগুলোর সমাধান
নিয়ে সে সময়ে খুব
একটা মাথা ঘামায় না। এই প্রবণতাটি বিয়ের
পর কেটে যায়, যখন তারা নানা দ্বায়িত্ববোধ
ও সমস্যার মুখোমুখি হয়।
৩. প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল তিক্ত
আলোচনা কিংবা তর্কে কম অভ্যস্ত
হয় ।
কেননা বেশিরভাগ সময়ই
একে অপরকে খুশি করবার জন্য ত্যাগ ও
মেনে নেয়ার প্রবণতা থাকে। তাদের
মধ্যে বরং প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয়। কারণ
অপর পক্ষ ত্যাগ স্বীকার
করে তাকে খুশি করতে চায়।
বিয়ের পর ঠিক উলটোটি ঘটে এবং তাদের
বিবাদগুলো সমস্যায় রূপ
নিতে থাকে । কারণ
আগে তারা বিনা বাক্য ব্যয়ে অপর
পক্ষকে তার
কথাটি মেনে নিতে দেখে এসেছে ।
৪. কোন পক্ষই অপর পক্ষের সত্যিকার
রূপটা বুঝে উঠতে পারে না। কারন
উভয় পক্ষই
অন্যের কাছে নিজেকে শান্ত, ভদ্র
হিসেবে তুলে ধরতে ও
তাকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করে।
নিজেকে এভাবে উপস্থাপনের
ঘটনাটা তথাকথিত “ভালবাসার”
ঘোরের মধ্যে থাকার কারণে ঘটে থাকে ।
কিন্তু কেউই সারা জীবন এই
প্রবণতাকে ধরে রাখতে পারে না।
ফলে সত্যিকার চিত্র
ফুটে ওঠে বিয়ের
পরে এবং সমস্যার জন্ম দেয়।
৫. ভালবাসার সময়টা থাকে স্বপ্ন ও
বিলাসিতার যা বিবাহ
পরবর্তি জীবনের
বাস্তবত অবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক
বলে প্রতীয়মান হয়। প্রেমিক
মনে করতে পারে :
যে সে তার প্রেমিকাকে একখন্ড চাঁদ
হাতে তুলে এনে দেবে এবং সে তার
প্রেমিকাকে পৃথিবীর
সবচেয়ে সুখী মানুষ
হিসেবে না দেখতে পেলে নিজে সুখী হতে পারবে না।
এবং বিনিময়ে প্রেমিকা তার
সাথে একই ছাদের
নিচে থাকবে এবং তার অন্য কোন
আবদার
থাকবে না, অনুরোধ
থাকবে না যতক্ষণ প্রেমিক
তার মন দখল করে রাখবে।
যেমন : একজন বলেছিল, “আমাদের
জন্য
একটা ছোট্ট কুটিরই যথেষ্ট” এবং “দু-
একমুঠো ভাতই আমাদের জন্য যথেষ্ট
হবে”
কিংবা “তুমি আমাকে একটুকরো অমুক
অমুক খাবার এনে দিলেই
আমি খুশি থাকবো” এগুলো নিতান্তই
বাস্তবতা বিবর্জিত কল্পনাপ্রসূত
কথাবার্তা এবং বিয়ের পর উভয়
পক্ষই এসব ভুলে যায়। স্ত্রী তার
স্বামীর
আর্থিক দুরাবস্থার অভিযোগ
করে এবং স্বামী স্ত্রীর
চাহিদা পূরণে ব্যর্থ
হয়। তখন স্বামীও পালটা স্ত্রীর
বেশি বেশি চাওয়া নিয়ে অভিযোগ
আনে ।
এসব বিষয় এবং আরো কিছু
কারনে যখন উভয় পক্ষ
বলে যে আমরা প্রতারিত
হয়েছি এবং বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি সেটা শুনে
আমরা অবাক
হই না। স্বামী আক্ষেপ করে কেন
বাবা-মায়ের পছন্দের অমুক
অমুককে বিয়ে করলো না কিংবা স্ত্রী আক্ষেপ
করে কেন
অমুককে বিয়ে করলো না অথচ
প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই
সেটা করে নি নিজেদের
আকাঙ্ক্ষার কারনে। ফলে মানুষ
যেটাকে ভাবে পৃথিবীর জন্য
একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে তাদের
“ভালবেসে বিয়ে”
টি সেখানে কিছুদিন পর
সে বিয়েটি ভেঙ্গে যায়।
তৃতীয়ত, এতক্ষণ
যে কারণগুলো বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলো
বাস্তবতা এবং সত্যিকার
অর্থেই এগুলো মানুষের
জীবনে ঘটছে । কিন্তু
আমাদেরকে এই ব্যর্থতার
পেছনে আসল
কারণটিকে ভুলে গেলে চলবে না ।
সেটি হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার অবাধ্যতা।
ইসলাম কখনই এ ধরনের ঘৃণিত
সম্পর্ককে অনুমোদন
দেয় না, এমনকি যদিও উদ্দেশ্য
বিয়ে করা হয়
থাকে। ফলে প্রেমিক-প্রেমিকা কোনভাবেই
আল্লাহর নির্ধারিত
শাস্তি থেকে রেহাই পায়
না। কারণ আল্লাহ বলছেন :
যে আমার স্মরণ থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেবে, তার
জীবিকা সংকীর্ণ হবে..
(সুরা ত্বাহা :২৪)
আল্লাহর আদেশ অমান্য করার
কারনে এবং কুরআন থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেবার কারনে এই রকম হয়।
আল্লাহ আরো বলছেন : যদি সে জনপদের
অধিবাসীরা বিশ্বাস স্হাপন করত এবং আল্লাহভীতি অবলম্বন করত,
তাহলে আমি তাদের প্রতি আকাশ
ও পৃথিবীর
জীবন উপকরণগুলো খুলে দিতাম।
কিন্তু
তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে।
সুতরাং আমি তাদেরকে তাদের
কৃতকর্মের
প্রতিফলস্বরুপ পাকড়াও করেছি ।
(সুরা আরাফ:৯৬)
আল্লাহর পক্ষ
থেকে সৎকর্মপরায়ণতা ও তার
উপর বিশ্বাসের বিনিময়ে পুরস্কার
ও
দয়া আসবে । যদি সৎকর্মপরায়ণতা কিংবা বিশ্বাস
না থাকে অথবা কম
থাকে তবে পুরষ্কারও
কমিয়ে দেয়া হবে কিংবা দেয়াই
হবে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
যে সৎকর্ম সম্পাদন
করে এবং সে বিশ্বাসী, পুরুষ
হোক
কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র
জীবন দান করব
এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের
উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য
পুরষ্কার দেব
যা তারা করত।
(সুরা আন-নাহল ৯৭)
উত্তম জীবন হল বিশ্বাস ও সৎকর্মের
ফসল।
আল্লাহ যথার্থই বলেছেন,
"যে ব্যক্তি তার ঘরের ভিত্তি স্থাপন
করেছে আল্লাহর ভয় ও আল্লাহর
সন্তুষ্টির উপর সে ব্যক্তি উত্তম ।
না যে ব্যক্তি তার ঘরের ভিত্তি দাঁড়
করিয়েছে পতনোন্মুখ একটি গর্তের
কিনারায় যা তাকে সহ (অচিরেই) জাহান্নামের
আগুনে গিয়ে পড়বে । আল্লাহ তায়ালা কখনো যালেম
সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না" (সুরা আত-তওবাহ ১০৯)
যে ব্যক্তির বিয়ে এধরনের
হারামের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তার
উচিত দ্রুত তওবাহ করা এবং আল্লাহর
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং সৎকর্মময়
জীবনের কামনা করা যার
ভিত্তি হবে ঈমান, পরহেযগারী ও সৎকর্ম।
আল্লাহতালা আমাদের সবাইকে তাঁর নিকট
পছন্দনীয় কাজগুলো করবার জন্য
সাহায্য করুন।
লেখক ও সম্পাদনায়: আব্দুল্লাহ্ আল বাকী
পরবর্তী ফলাফল ভয়াবহ ৷

—আব্দুল্লাহ আল বাকী
অবৈধ প্রেম হলো ইসলামের
সাথে সাংঘর্ষিক
কতকগুলো হারাম বিষয়ের সংমিশ্রন ৷
এক্ষেত্রে একজন নারী ও একজন
পুরুষের
মধ্যে বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক
গড়ে ওঠে,
যাকে লোকেরা “প্রেম”
বা “ভালবাসা” বলে ।
প্রেমের ক্ষেত্রে একজন পুরুষ
একজন বেগানা মহিলার
সাথে একাকী কাটানো,
তার দিকে তাকানো, তাকে স্পর্শ
করা, তার
সাথে প্রেমালাপ করা কিংবা তাকে চু…
দেওয়া ইত্যাদি কুপ্রভৃতি জড়িত
থাকে ।
সুতরাং কোন বিবেকবান
লোকেরই সন্দেহ
থাকতে পারে না যে বিষয়টি হারাম।
এ ধরনের সম্পর্ক এর চাইতেও
মারাত্নক দিকে গড়াতে পারে,
যেমনটি বর্তমানে ঘটছে।
দ্বিতীয়ত,
গবেষনায় দেখা গেছে :
১.একজন পুরুষ ও একজন মহিলার মধ্যকার
বিবাহপূর্ব প্রেমের উপর
ভিত্তি করে গড়ে ওঠা বৈবাহিক
সম্পর্ক ব্যর্থ হয় ।
২.অন্য দিকে যে সকল বিয়ে এ
ধরনের হারাম সম্পর্কের ওপর
ভিত্তি করে গড়ে ওঠে নি যেগুলোকে লোকেরা
“প্রথাগত বিয়ে” বলে থাকেন
সেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই
সফল হয়। একজন ফ্রেঞ্চ
সমাজবিজ্ঞানী কর্তৃক মাঠপর্যায়ে চালানো এক
গবেষনায় উঠে এসেছে,
“যখন দুই পক্ষ বিবাহ পূর্ব প্রেমের
সম্পর্কে লিপ্ত
হয় না তখন সে বিয়ের সফলতার
সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়”
প্রফেসর ইসমাঈল আবদ’ আল বারি’
কর্তৃক
প্রায় ১৫০০ পরিবারের ওপর
চালানো অন্য এক
জরিপের ফলাফল ছিল এমন
যে শতকরা ৭৫ ভাগ
“ভালবেসে বিয়ে” এর
পরিণতি ছিল ডিভোর্স
যেখানে “প্রথাগত বিয়ে” এর
ক্ষেত্রে শতকরা ৫
ভাগেরও কম। এর কারণ হলো :
১. আবেগ একজন মানুষকে অপরের
ভুলগুলো সম্পর্কে অন্ধ
করে ফেলে ।
এজন্য
বলা হয়ে থাকে,”ভালবাসা অন্ধ“ ।
একপক্ষ বা উভয়পক্ষেরই
সমস্যা থাকতে পারে যেটা তাদেরকে বিপরীত
পক্ষের জন্য অযোগ্য
করে তুলতে পারে, কিন্তু এই
ত্রুটিগুলো ঠিক বিয়ের পরেই
স্পষ্ট
হয়ে ওঠে।
২. প্রেমিক-প্রেমিকারা ভাবেন,
এজীবন শুধুই
ভালবাসার পথে অন্তহীন একযাত্রা । তাই
দেখা যায় তাদের বলা পরস্পরের মধ্যকার
কথাগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র ভালবাসার গল্প
আর স্বপ্নের জাল বোনা ছাড়া আর
কিছুই থাকে না । তারা বাস্তব জীবনের
সমস্যা এবং সেগুলোর সমাধান
নিয়ে সে সময়ে খুব
একটা মাথা ঘামায় না। এই প্রবণতাটি বিয়ের
পর কেটে যায়, যখন তারা নানা দ্বায়িত্ববোধ
ও সমস্যার মুখোমুখি হয়।
৩. প্রেমিক-প্রেমিকা যুগল তিক্ত
আলোচনা কিংবা তর্কে কম অভ্যস্ত
হয় ।
কেননা বেশিরভাগ সময়ই
একে অপরকে খুশি করবার জন্য ত্যাগ ও
মেনে নেয়ার প্রবণতা থাকে। তাদের
মধ্যে বরং প্রায়ই কথা কাটাকাটি হয়। কারণ
অপর পক্ষ ত্যাগ স্বীকার
করে তাকে খুশি করতে চায়।
বিয়ের পর ঠিক উলটোটি ঘটে এবং তাদের
বিবাদগুলো সমস্যায় রূপ
নিতে থাকে । কারণ
আগে তারা বিনা বাক্য ব্যয়ে অপর
পক্ষকে তার
কথাটি মেনে নিতে দেখে এসেছে ।
৪. কোন পক্ষই অপর পক্ষের সত্যিকার
রূপটা বুঝে উঠতে পারে না। কারন
উভয় পক্ষই
অন্যের কাছে নিজেকে শান্ত, ভদ্র
হিসেবে তুলে ধরতে ও
তাকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করে।
নিজেকে এভাবে উপস্থাপনের
ঘটনাটা তথাকথিত “ভালবাসার”
ঘোরের মধ্যে থাকার কারণে ঘটে থাকে ।
কিন্তু কেউই সারা জীবন এই
প্রবণতাকে ধরে রাখতে পারে না।
ফলে সত্যিকার চিত্র
ফুটে ওঠে বিয়ের
পরে এবং সমস্যার জন্ম দেয়।
৫. ভালবাসার সময়টা থাকে স্বপ্ন ও
বিলাসিতার যা বিবাহ
পরবর্তি জীবনের
বাস্তবত অবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক
বলে প্রতীয়মান হয়। প্রেমিক
মনে করতে পারে :
যে সে তার প্রেমিকাকে একখন্ড চাঁদ
হাতে তুলে এনে দেবে এবং সে তার
প্রেমিকাকে পৃথিবীর
সবচেয়ে সুখী মানুষ
হিসেবে না দেখতে পেলে নিজে সুখী হতে পারবে না।
এবং বিনিময়ে প্রেমিকা তার
সাথে একই ছাদের
নিচে থাকবে এবং তার অন্য কোন
আবদার
থাকবে না, অনুরোধ
থাকবে না যতক্ষণ প্রেমিক
তার মন দখল করে রাখবে।
যেমন : একজন বলেছিল, “আমাদের
জন্য
একটা ছোট্ট কুটিরই যথেষ্ট” এবং “দু-
একমুঠো ভাতই আমাদের জন্য যথেষ্ট
হবে”
কিংবা “তুমি আমাকে একটুকরো অমুক
অমুক খাবার এনে দিলেই
আমি খুশি থাকবো” এগুলো নিতান্তই
বাস্তবতা বিবর্জিত কল্পনাপ্রসূত
কথাবার্তা এবং বিয়ের পর উভয়
পক্ষই এসব ভুলে যায়। স্ত্রী তার
স্বামীর
আর্থিক দুরাবস্থার অভিযোগ
করে এবং স্বামী স্ত্রীর
চাহিদা পূরণে ব্যর্থ
হয়। তখন স্বামীও পালটা স্ত্রীর
বেশি বেশি চাওয়া নিয়ে অভিযোগ
আনে ।
এসব বিষয় এবং আরো কিছু
কারনে যখন উভয় পক্ষ
বলে যে আমরা প্রতারিত
হয়েছি এবং বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি সেটা শুনে
আমরা অবাক
হই না। স্বামী আক্ষেপ করে কেন
বাবা-মায়ের পছন্দের অমুক
অমুককে বিয়ে করলো না কিংবা স্ত্রী আক্ষেপ
করে কেন
অমুককে বিয়ে করলো না অথচ
প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই
সেটা করে নি নিজেদের
আকাঙ্ক্ষার কারনে। ফলে মানুষ
যেটাকে ভাবে পৃথিবীর জন্য
একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে তাদের
“ভালবেসে বিয়ে”
টি সেখানে কিছুদিন পর
সে বিয়েটি ভেঙ্গে যায়।
তৃতীয়ত, এতক্ষণ
যে কারণগুলো বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলো
বাস্তবতা এবং সত্যিকার
অর্থেই এগুলো মানুষের
জীবনে ঘটছে । কিন্তু
আমাদেরকে এই ব্যর্থতার
পেছনে আসল
কারণটিকে ভুলে গেলে চলবে না ।
সেটি হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার অবাধ্যতা।
ইসলাম কখনই এ ধরনের ঘৃণিত
সম্পর্ককে অনুমোদন
দেয় না, এমনকি যদিও উদ্দেশ্য
বিয়ে করা হয়
থাকে। ফলে প্রেমিক-প্রেমিকা কোনভাবেই
আল্লাহর নির্ধারিত
শাস্তি থেকে রেহাই পায়
না। কারণ আল্লাহ বলছেন :
যে আমার স্মরণ থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেবে, তার
জীবিকা সংকীর্ণ হবে..
(সুরা ত্বাহা :২৪)
আল্লাহর আদেশ অমান্য করার
কারনে এবং কুরআন থেকে মুখ
ফিরিয়ে নেবার কারনে এই রকম হয়।
আল্লাহ আরো বলছেন : যদি সে জনপদের
অধিবাসীরা বিশ্বাস স্হাপন করত এবং আল্লাহভীতি অবলম্বন করত,
তাহলে আমি তাদের প্রতি আকাশ
ও পৃথিবীর
জীবন উপকরণগুলো খুলে দিতাম।
কিন্তু
তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে।
সুতরাং আমি তাদেরকে তাদের
কৃতকর্মের
প্রতিফলস্বরুপ পাকড়াও করেছি ।
(সুরা আরাফ:৯৬)
আল্লাহর পক্ষ
থেকে সৎকর্মপরায়ণতা ও তার
উপর বিশ্বাসের বিনিময়ে পুরস্কার
ও
দয়া আসবে । যদি সৎকর্মপরায়ণতা কিংবা বিশ্বাস
না থাকে অথবা কম
থাকে তবে পুরষ্কারও
কমিয়ে দেয়া হবে কিংবা দেয়াই
হবে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
যে সৎকর্ম সম্পাদন
করে এবং সে বিশ্বাসী, পুরুষ
হোক
কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র
জীবন দান করব
এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের
উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য
পুরষ্কার দেব
যা তারা করত।
(সুরা আন-নাহল ৯৭)
উত্তম জীবন হল বিশ্বাস ও সৎকর্মের
ফসল।
আল্লাহ যথার্থই বলেছেন,
"যে ব্যক্তি তার ঘরের ভিত্তি স্থাপন
করেছে আল্লাহর ভয় ও আল্লাহর
সন্তুষ্টির উপর সে ব্যক্তি উত্তম ।
না যে ব্যক্তি তার ঘরের ভিত্তি দাঁড়
করিয়েছে পতনোন্মুখ একটি গর্তের
কিনারায় যা তাকে সহ (অচিরেই) জাহান্নামের
আগুনে গিয়ে পড়বে । আল্লাহ তায়ালা কখনো যালেম
সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না" (সুরা আত-তওবাহ ১০৯)
যে ব্যক্তির বিয়ে এধরনের
হারামের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তার
উচিত দ্রুত তওবাহ করা এবং আল্লাহর
কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং সৎকর্মময়
জীবনের কামনা করা যার
ভিত্তি হবে ঈমান, পরহেযগারী ও সৎকর্ম।
আল্লাহতালা আমাদের সবাইকে তাঁর নিকট
পছন্দনীয় কাজগুলো করবার জন্য
সাহায্য করুন।
লেখক ও সম্পাদনায়: আব্দুল্লাহ্ আল বাকী
Comments
Post a Comment