বিয়ে করলে কী কী উপকার পাবেন??

রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেন, মুখাপেক্ষী! মুখাপেক্ষী! ঐ পুরুষ যার
স্ত্রী নেই। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করেন, যদি
তার অনেক সম্পদ থাকে তবুও কি সে
মুখাপেক্ষী? রাসুলুল্লাহসাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেন, যদিও তার অনেক সম্পদ
থাকে তবুও সে মুখাপেক্ষী। মুখাপেক্ষী!
মুখাপেক্ষী! ঐ নারী যার স্বামী নেই।
সাহাবগণ জিজ্ঞেস করেন, যদি তার অনেক
সম্পদ থাকে তবুও কি সে মুখাপেক্ষী?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেন, যদিও তার অনেক সম্পদ থাকে তবুও সে
মুখাপেক্ষী।
কেননা সম্পদের উপকারিতা -প্রশান্তি ও
চিন্তামুক্ত থাকা- সে পুরুষের ভাগ্যে জুটে
না যার স্ত্রী নেই। সে নারীর ভাগ্যেও জুটে
না যার স্বামী নেই। বাস্তব অভিজ্ঞতা
থেকে জানা যায়, বিয়েতে জাগতিক ও
পরকালীন অনেক বড় বড় উপকার রয়েছে।
[হায়াতুল মুসলিমিন, পৃষ্ঠা-১৮৭।]
বিয়ে আল্লাহর বিশেষ দান বা উপহার।
বিয়ের দ্বারা জাগতিক জীবন ও ধর্মীয়
জীবন দুটিই ঠিক হয়ে যায়। মন্দ চিন্তা ও
অস্থিরতা থাকে না। সবচেয়ে বড় উপকার
হলো, অশেষ নেকি অর্জন। কেননা স্বামী-
স্ত্রী একত্রে বসে ভালোবাসার কথা বলা,
হাসি-তামাশা করা নফল নামাজ পড়ার
চেয়েও উত্তম। [বেহেশতি জেওয়ার, খন্ড-৪।]
হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ
সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
নারীকে বিয়ে করো সে তোমার জন্য সম্পদ
টেনে আনবে। সম্পদ টেনে আনার উদ্দেশ্য
হলো, স্বামী-স্ত্রী দু’জন বুঝমান ও একে
অপরের কল্যাণকামী হয়ে থাকে। স্বামী এ
কথা স্মরণ রাখে, আমার দায়িত্বে খরচ বেড়ে
গেছে তখন বেশি বেশি উপার্জন করার
চেষ্টা করে। নারীও এমন কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ
করে যা পুরুষ গ্রহণ করতে পারে না। ফলে
তারা প্রশান্তি ও চিন্তামুক্ত হতে পারে।
আর সম্পদের মূল উদ্দেশ্যই এটি। হায়াতুল
মুসলিমিন।
হজরত মাকাল ইবনে ইয়াসার রা. থেকে
বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেন, তোমরা অধিক সন্তান
প্রসবকারী নারীকে বিয়ে করো। কেননা
আমি তোমাদের অধিক্যতা দ্বারা অন্যান্য
উম্মতের উপর গর্ব করবো যে, আমার উম্মত
এতো বেশি। [আবু দাউদ, নাসায়ী। হায়াতুল
মুসলিমিন, পৃষ্ঠা-১৮৯]
মানুষের ভেতরে যে জৈবিক চাহিদা থাকে
যদি তা পূরণের একটি বৈধ মাধ্যম না থাকে
তবে সে তা যথেচ্ছা পূরণ করবে। তার থেকে
নির্লজ্জতা প্রকাশ পাবে। এজন্য শরিয়ত
বিয়ে বৈধ করে মানুষের জৈবিক চাহিদা
পূরণের একটি বৈধ মাধ্যম নির্ধারণ করেছেন।
বিয়ের বৈধতা প্রমাণ করে শরিয়ত মানুষের
বুদ্ধি ও বিবেকের তুলনায় অধিক
কল্যাণকামী। বিবেকের নিকট প্রশ্ন করা
হলে তা বিয়েকে বৈধ বলে স্বীকৃতি দিবে
না। কেননা একজন অপরিচিত পুরুষের সামনে
একজন নারী কিভাবে বিবস্ত্র হবে।
বিবেকের বিচারে যা সম্পূর্ণ নিন্দনীয়। তবে
বিবেকের এই বিচারকে গুরুত্ব দিলে বা সে
অনুযায়ী কাজ করলে অনেক রকম ফেৎনা
বেড়ে যাবে। এখন একজন অপরিচিত নারী-
পুরুষ বিবস্ত্র হচ্ছে। জানা নাই তখন কতো
নারী-পুরুষ পরস্পরের সামনে বিবস্ত্র হবে।
কেননা একজন নারী বা পুরুষ কতোক্ষণ ধৈর্য্য
ধারণ করতে পারবে? নিজেদের কাম চাহিদা
দমন করে রাখবে? এই পরিণতির দিকে লক্ষ
রেখে ইসলামি শরিয়ত বিয়ে অনুমোদন
করেছে। যাতে মানুষের চাহিদা পূরণের
নির্ধারিত মাধ্যম থাকে। সমাজে বিশৃংখলা
ছড়িয়ে না পরে। ইসলামি শরিয়ত খোদা
প্রদত্ত ঐশী হওয়ার প্রমান হলো, তার দৃষ্টি
সর্বদা পরিণতির দিকে। যে আইন ও নিয়ম
মানুষের মেধা প্রসূত তার দৃষ্টি পরিনতিতে
আবদ্ধ থাকে না। [হুকুকুল জাওযাইন,
পৃষ্ঠা-১৫৪। রফউল আলবাস]
স্বাভাবিকভাবে বিবেক লজ্জাশীল হওয়া
কামনা করে। আর বিয়ে নির্লজ্জ বলে মনে
হয়। কিন্তু শরিয়ত বিয়ের বিধান প্রণয়ন
করেছে লজ্জাকে রক্ষা করতে। কারণ যদি
এক স্থানেও মানুষ লজ্জা পরিহার না করে।
তবে সমগ্র মানব সভ্যতা নির্লজ্জ হয়ে যাবে।
[হুকুকুল জাওযাইন, পৃষ্ঠা-১৫৬]
মাওলানা মিরাজ রহমান
Comments
Post a Comment