দ্বীন কায়েমে আলেমদের ভূমিকা

দ্বীন কায়েমে আলিমদের ভুমিকা:

মুহাদ্দিস রবিউল বাশারal quran

 

★সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় কাজের নিষেধ করা দ্বীন কায়েমের জন্য আলিমদের বিশেষ দায়িত্ব

★সমাজের বিভিন্ন স্তরে ইসলাম বিরুধী কার্যকলাপ

হয়। সমাজকে এবং নিজের মহলকে পরিচ্ছন্ন রাখার

জন্য এ দায়িত্ব পালন করার মুসলিম জাতির আবির্ভাব।

ইসলাম কায়েম করার ও কায়েম রাখার জন্য "আমরে

বিল মারুফ এবং নাহয়ি আনিল মুনকার "এর দায়িত্ব পালন

আবশ্যক। আল্লাহ বলেন,

ﻛﻨﺘﻢ ﺧﻴﺮ ﺍﻣﺔ ﺍﺧﺮﺟﺖ ﻟﻠﻨﺎﺱ ﺗﺎﻣﺮﻭﻥ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ ﻭﺗﻨﻬﻮﻥ

ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ، ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻝ ﻋﻤﺮﺍﻥ

অর্থ তোমরা শ্রেষ্ঠজাতি, বিশ্বমানবতার কল্যানের

জন্য তোমাদের আবির্ভাব করা হয়েছে। তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজের নিষেধ করবে। 

(সুরা আলে ইমরান, আয়াত নং ১১০)

ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻥ ﻣﻜﻨﺎﻫﻢ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﺍﻗﺎﻣﻮﺍﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﻭﺍﺗﻮﺍﺍﻟﺰﻛﻮﺓ

ﻭﺍﻣﺮﻭﺍ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ ﻭﻧﻬﻮﺍ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ ،ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺤﺞ

অর্থ (নির্যাতিত মুমিনগন)যাদের আমি যদি পৃথীবিতে

প্রতিষ্ঠিত করি, তাহলে তারা নামায কায়েম করবে,

যাকাত আদায় করবে, সৎকাজের আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজের নিষেধ করবে।

( সুরা আল -হাজ্জ, আয়াত নং৪১)

এ দায়িত্ব পালন না করায় আলিমদেরকে কঠিন তিরস্কার

ও ভৎসনাও আল্লাহ করেছেন। অন্য দুনিয়াতেই

শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। আল্লাহ বলেন,

ﻟﻮﻻﻳﻨﻬﺎﻫﻢ ﺍﻟﺮﺑﺎﻧﻴﻮﻥ ﻭﺍﻻﺣﺒﺎﺭ ﻋﻦ ﻗﻮﻟﻬﻢ ﺍﻻﺛﻢ ﻭﺍﻛﻠﻬﻢ

ﺍﻟﺴﺤﺖ ﻟﺒﺌﺲ ﻣﺎﻛﺎﻧﻮﺍﻳﺼﻨﻌﻮﻥ ،ﺳﻮﺭﺓﺍﻟﻤﺎﺋﺪﺓ

আল্লাহ ওয়ালা ও আলিমরা কেন তাদেরকে গুনাহের

কথা বলতে ও হারাম খেতে কেন নিষেধ করেনা।

তাদের এই কর্ম তৎপরতা কতইনা নিকৃষ্ঠ! (সুরা আল - মাইদাহ, আয়াত নং৬৩)

এ দায়িত্ব পালন না করলে আল্লাহ দুনিয়াতে পাকড়াও

করেন। আল্লাহ বলেন,

ﻓﻠﻤﺎﻧﺴﻮﺍ ﻣﺎﺫﻛﺮﻭﺍ ﺑﻪ ﺍﻧﺠﻴﻨﺎ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﻨﻬﻮﻥ ﻋﻦ ﺍﻟﺴﻮﺀ

ﻭﺍﺧﺬﻧﺎﺍﻟﺬﻳﻦ ﻇﻠﻤﻮﺍ ﺑﻌﺬﺍﺏ ﺑﺌﻴﺲ ﺑﻤﺎﻛﺎﻧﻮﺍﻳﻜﺴﺒﻮﻥ،

ﺳﻮﺭﺓﺍﻻﻋﺮﺍﻑ

অর্থ তারপর তাদেরকে যা করার নাসীহাত করা হয়, তা

যখন ভূলে যায়, তখন খারাপ কাজ নিষেধকারীদের

আমি মুক্তি দেই এবং জালিমদের তাদের কর্মের কারনে কঠিন শাস্তিতে পাকড়াও করি। (সুরা আল -আরাফ,

আয়াত নং ১৬৫)

ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺍﻟﺬﻱ ﻧﻔﺴﻲ

ﺑﻴﺪﻩ ﻟﺘﺎﻣﺮﻥ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ ﻭﻟﺘﻨﻬﻮﻥ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ ﺍﻭﻟﻴﻮﺷﻜﻦ

ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻥ ﻳﺒﻌﺚ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻋﻘﺎﺑﺎ ﻣﻦ ﻋﻨﺪﻩ ﺛﻢ ﻟﺘﺪﻋﻨﻪ

ﻓﻼﻳﺴﺘﺠﻴﺐ ﻟﻜﻢ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻮﺩﺍﻭﺩ

অর্থ আল্লাহর রাসুল বলেন, যার হাতে আমার প্রান

তার কসম দিয়ে বলছি, তোমরা অবশ্যই সৎকাজের

আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করবে।

অথবা অচিরেই তোমাদের উপর আল্লাহ নিজের

পক্ষ থেকে শাস্তি প্রেরন করবেন তারপর

তোমরা অবশ্য দুআ করবে। তখন তিনি ফকরুল করবেন না। (আবু দাউদ)

★ইয়াহুদী আলিমগন দ্বীনের তাবলীগ ও প্রচার

করতে দুনিয়ার সম্পদের ক্ষতির আশংকা দেখা দিলে

বা নেতৃত্বের অবস্থান নড়বড়ে হওয়ার আশংকা দেখা

দিলে, সে সকল স্থানে তাবলীগ ও প্রচার

করতো না। বরং গোপন রাখতো। তাদের এই

কুৎসিৎ কর্মের আল্লাহ কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। আল্লাহ বলেন,

ﺍﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﻜﺘﻤﻮﻥ ﻣﺎﺍﻧﺰﻟﻨﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﺒﻴﺎﺕ ﻭﺍﻟﻬﺪﻱ ﻣﻦ ﺑﻌﺪ

ﻣﺎﺑﻴﻨﺎﻩ ﻟﻠﻨﺎﺱ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻳﻠﻌﻨﻬﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻳﻠﻌﻨﻬﻢ

ﺍﻟﻼﻋﻨﻮﻥ ﺍﻻ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺗﺎﺑﻮﺍ ﻭﺍﺻﻠﺤﻮﺍ ﻭﺑﻴﻨﻮﺍ ﻓﺎﻭﻟﺌﻚ ﺍﺗﻮﺏ

ﻋﻠﻴﻬﻢ ﻭﺍﻧﺎﺍﻟﺘﻮﺍﺏ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ

অর্থ নিশ্চয় যারা(যে সকল ইয়াহুদী আলিমরা) আমার

নাযিল করা স্পষ্টবিধান ও পথনির্দেশনা, আমি

(তাওরাত)কিতাবে মানুষের জন্য তা বর্ননা করার পর,

গোপন করে, তাদেরকে আল্লাহ লানাত করেন

এবং লানাতকারীরা লানাত করেন। কিন্তু তারা (লানাত থেকে) মুক্ত, যারা (ইলম গোপন করা থেকে) তাওবা করেছে, সংশোধন করেছে এবং ( প্রয়োজনীয় বিধান) বর্ননা করেছে। উহাদের

তাওবা আমি কবুল করি। আমি অধিক তাওবা কবুলকারী,

অত্যান্ত দয়ালু। (সুরা আল বাকারাহ, আয়াত নং ১৬০)

দ্বীনের ইলেম গোপনকারী আলিমরা লা'নাতের

যোগ্য। আল্লাহ লা 'নাত করেন এবং ফেরেস্তারাও

লা,'নাত করেন। তারা বদ আলিম বা উলামায়ে সূ। তাদের

তাওবা না করা পর্যন্ত অভিশপ্ত। অভিশপ্ত ব্যক্তির জন্য

জান্নাত হারাম অভিশাপ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত।

যে সকল আলিম ইলম গোপন করার অপরাধের জন্য

অনুতপ্ত হয়ে ভবিষ্যতে দ্বীনের কোন ইলম

গোপন করবে না বলে অঙ্গীকার করে নিজের

সম্পদের ও নেতৃত্বের লোভ সংশোধন করবে এবং যেখানে যে বিধান প্রচার করা প্রয়োজন, তা

প্রচার করবে, তার তাওবা কবুল আল্লাহ করবেন।

★আল্লাহর,বিধান গোপন করার অপরাধ বিরাট। বিধান

গোপন করে দুনিয়ার স্বার্থ অর্জন ও ভক্ষন অর্থ

হল পেটে আগুন ভর্তি করা। এই গোপনকারী

আলিমরা এতই নিকৃষ্ট যে, আল্লাহ তাদের সাথে

অসন্তুষ্টির কারনে কথা বলবেন না, তাদের দিকে অনুগ্রহের দৃষ্টিতে তাকাবেন না এবং তাদের জন্য

যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি নির্ধারিত আছে। আল্লাহ বলেন,

ﺍﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﻜﺘﻤﻮﻥ ﻣﺎﺍﻧﺰﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭﻳﺸﺘﺮﻭﻥ ﺑﻪ

ﺛﻤﻨﺎ ﻗﻠﻴﻼ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻣﺎﻳﺎﻛﻠﻮﻥ ﻓﻲ ﺑﻄﻮﻧﻬﻢ ﺍﻻﺍﻟﻨﺎﺭ ﻭﻻﻳﻜﻠﻤﻬﻢ

ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻻﻳﺰﻛﻴﻬﻢ ﻭﻟﻬﻢ ﻋﺬﺍﺏ ﺍﻟﻴﻢ

অর্থ নিশ্চয় যে সকল (ইয়াহুদী আলিম)

ব্যক্তিরা আল্লাহর অবতীর্ন করা কিতাব (এর বিধান) কেগোপন করে এবং উহার বিনিময়ে সামান্য সম্পদ গ্রহন করে, উহারা নিজেদের পেটে আগুনই ভক্ষন

করে, কিয়ামতের দিন তাদের সাথে আল্লাহ কথা

বলবেন না, তাদেরকে গুনাহ থেকে পবিত্র

করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। 

(সুরা আল -বাকারা, ১৭৪ নং আয়াত)

★ইসলাম প্রচার ও তাবলীগের ক্ষেত্রে

আল্লাহকে ছাড়া কাউকে আলিমরা ভয় করবে না :

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

ﻭﺍﻧﻤﺎ ﻳﺨﺸﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﻋﺒﺎﺩﻩ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ،ﺳﻮﺭﺓ ﻓﺎﻃﺮ

অর্থ আল্লাহকে তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে

শুধুমাত্র আলিমগনই ভয় করে থাকে।

(সুরা ফাতির, আয়াত নং২৮)

 

দ্বীনের তাবলীগ, প্রচার ও প্রতিষ্ঠার

ক্ষেত্রে আলিমগন একমাত্র আল্লাহকে ভয়

করবে। পৃথীবির কোন শক্তির পরওয়া করবে না।

কেননা পবিত্র কুরআনে আল্লাহ নাবী -রাসুলগনের চরিত্র সম্পর্কে বলেন,

ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺒﻠﻐﻮﻥ ﺭﺳﺎﻻﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻳﺨﺸﻮﻧﻪ ﻭﻻﻳﺨﺸﻮﻥ ﺍﺣﺪﺍ ﺍﻻ ﺍﻟﻠﻪ، ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻻﺣﺰﺍﺏ

অর্থ (নাবী -রাসুলগন(আঃ)) যারা আল্লাহর পয়গামসমুহ পৌঁছায়, তাঁকে ভয় করে এবং আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করে না।

(সুরা আল -আহযাব,)

নাবী -রাসুলগনের উত্তরাধিকারী আলিমগন ইসলাম

প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামের তাবলীগ ও প্রচারের ক্ষেত্রে আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করবে না।

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়