আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে ভালোবাসা এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে ঘৃণা করা

আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসা

★আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই ভালবাসবে এবং

ঘৃনা করবে।

সাধারনত দেখা যায় মানুষ নিজের স্বার্থের প্রতি

খেয়াল করে কাউকে ভালবাসে এবং কাউকে ঘৃনা

করে। স্বার্থ পাওয়া যাবে না, সেখানে ভালবাসা

থাকবে না এবং স্বার্থ পাওয়া যাবে, সেখানে

ভালোবাসাও পাওয়া যাবে। স্বার্থহানী ঘটবে,

সেখানে ঘৃনা করবে, যদিও সেটা ভাল কাজ।

★ তাই আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন,

ﻣﻦ ﺍﺣﺐ ﻟﻠﻪ ﻭﺍﺑﻐﺾ ﻟﻠﻪ ﻭﺍﻋﻄﻲ ﻟﻠﻪ ﻭﻣﻨﻊ ﻟﻠﻪ ﻓﻘﺪ

ﺍﺳﺘﻜﻤﻞ ﺍﻻﻳﻤﺎﻥ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻻﻳﻤﺎﻥ

অর্থ যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে,

আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঘৃনা করবে, আল্লাহর

উদ্দেশ্যে দেবে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে

দেবেনা, তার ঈমান পরিপুর্ন হলো। (সহীহ আল -

বুখারী ঈমান অধ্যায়ে)

★আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালবাসা কিয়ামতের দিন

আল্লাহর আরশের ছায়া পাওয়ার কারন। আল্লাহর রাসুল

(সাঃ) বলেন,

ﺳﺒﻌﺔ ﻳﻈﻠﻬﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﻇﻠﻪ ﻳﻮﻡ ﻻﻇﻞ ﺍﻻ ﻇﻠﻪ ﺍﻣﺎﻡ ﻋﺎﺩﻝ

ﻭﺭﺟﻞ ﻧﺸﺄ ﻓﻲ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺟﻞ ﻗﻠﺒﻪ ﻣﻌﻠﻖ ﺑﺎﻟﻤﺴﺠﺪ

ﻭﺭﺟﻼﻥ ﺗﺤﺎﺑﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺟﺘﻤﻌﺎ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺗﻔﺮﻗﺎ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺭﺟﻞ

ﺩﻋﺘﻪ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﺫﺍﺕ ﺣﺴﺐ ﻭﺟﻤﺎﻝ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻧﻲ ﺍﺧﺎﻑ ﺍﻟﻠﻪ

ﻭﺭﺟﻞ ﺗﺼﺪﻕ ﺑﺼﺪﻗﺔ ﻓﺎﺧﻔﺎﻫﺎ ﺣﺘﻲ ﻻﺗﻌﻠﻢ ﺷﻤﺎﻟﻪ

ﻣﺎﺗﻨﻔﻖ ﻳﻤﻴﻨﻪ ﻭﺭﺟﻞ ﺫﻛﺮﺍﻟﻠﻪ ﺧﺎﻟﻴﺎ ﻓﻔﺎﺿﺖ ﻋﻴﻨﺎﻩ ﺭﻭﺍﻩ

ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ

★অর্থ সাতশ্রেনীর ব্যক্তি যাদেরকে আল্লাহ

এমন একটি দিনে নিজের (আরশের) ছায়ায় স্থান দান

করবেন, যে দিন আল্লাহর ছায়া আর কোন ছায়া

থাকবে না। (১)ন্যায় বিচারক বাদশাহ, (২)সে যুবক, যে

আল্লাহর ইবাদাতে বেড়ে উঠেছে, (৩)যে

ব্যক্তির অন্তর মাসজিদে লটকানো থাকে।

((৪))যে দুইজন ব্যক্তি একে অপরকে আল্লাহর

উদ্দেশ্যে ভালবাসে, তারই উদ্দেশ্যে একত্রিত

হয় এবং তাঁরই উদ্দেশ্যে বিচ্ছিন্ন হয়। (৫)যে

ব্যক্তিকে কোন উচ্চ বংশীয় ও সুন্দরী নারী

আহবান করলে বলে দিয়েছে আমি আল্লাহকে

ভয় করি। (৬)যে ব্যক্তি দান করতে এমন গোপন

করে যে, ডান হাতে যা দান করে বাম হাত তা জানেনা।

এবং (৭)যে ব্যক্তি আল্লেহকে নির্জনে স্মরন

করে চক্ষু দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত করে। (সহীহ আল

বুখারী)

★ঈমানের স্বাদ অনুভব করার জন্য আল্লাহর

উদ্দেশ্যে ভালবাসার গুন অর্জন অপরিহার্য। আল্লাহর

রাসুল বলেন,

ﺛﻼﺙ ﻣﻦ ﻛﻦ ﻓﻴﻪ ﻭﺟﺪ ﺣﻼﻭﺓ ﺍﻻﻳﻤﺎﻥ ﺍﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﻠﻪ

ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ﺍﺣﺐ ﺍﻟﻴﻪ ﻣﻤﺎﺳﻮﺍﻫﻤﺎ ﻭﺍﻥ ﻳﺤﺐ ﺍﻟﻤﺮﺃ ﻻﻳﺤﺒﻪ

ﺍﻻ ﻟﻠﻪ ﻭﺍﻥ ﻳﻜﺮﻩ ﺍﻥ ﻳﻌﻮﺩ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﻛﻤﺎﻳﻜﺮﻩ ﺍﻥ ﻳﻘﺬﻑ

ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ

অর্থ তিনটি গুন যার মধ্যে অর্জিত হয়েছে, সে

ঈমানের স্বাদ পাবে। যথা (১)আল্লাহ এবং তাঁর

রাসুল যার কাছে অন্যান্য সকল ব্যক্তি ও বস্তুর

চেয়ে অধিক প্রিয় হবে। (২) যে কাউকে

ভালবাসবে, আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে

ভালবাসবে না এবং (৩)কুফরী মতবাদে ফিরে যাওয়া

এমন ঘৃনা করবে, যেমন আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে

ঘৃনা করবে। (সহীহ আল -বুখারী)

★আলিমে দ্বীন মানুষকে ভালবাসা ও ঘৃনা করার

ক্ষেত্রে আল্লাহর ভালবাসাকে কেন্দ্রবিন্দু

বানাবে। শয়তানের সাথে শত্রুতা করলেও

আল্লাহকে ভালবাসার জন্য শয়তানের সাথে শত্রুতা

করবে। আল্লাহকে মধ্যখান থেকে বাদ দিয়ে

শয়তানের সাথে শত্রুতা বা ঘৃনা করবে না।কুরআন ও

সুন্নাহের মাধ্যমে যদি বুঝতে পারে কোন খারাপ

লোককে ভালবাসলে ও তার সাথে সম্পর্ক রাখলে

আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন, তবে তাই তার করা উচিৎ।

যেমন কোন চরিত্রহীন ব্যক্তির চরিত্র সংশোধন

করার উদগ্র মানষিকতা নিয়ে তার সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি

করে ও ভালবাসার সৃষ্টি করে, তাহলে এটা অন্যায় নয়।

বরং ভাল কাজ। ভাল ব্যক্তির সাথে নিজ বৈষয়িক অবৈধ

স্বার্থ অর্জন করার জন্য সম্পর্ক সৃষ্টি করাও অন্যায়

ও গুনাহ!

★খারাপ মানুষের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করা মুমিনের

উচিৎ। আলিমে দ্বীন আদর্শ হিসেবে খারাপ ব্যক্তি

ত্যাগ করে চলাই উচিৎ। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

ﻻﺗﺠﺪﻗﻮﻣﺎ ﻳﻮﻣﻨﻮﻥ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﻴﻮﻡ ﺍﻻﺧﺮ ﻳﻮﺍﺩﻭﻥ ﻣﻦ ﺣﺎﺩ

ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ﻭﻟﻮﻛﺎﻧﻮﺍ ﺍﺑﺎﺋﻬﻢ ﺍﻭ ﺍﺑﻨﺎﺋﻬﻢ ﺍﻭﺍﺧﻮﺍﻧﻬﻢ ﺍﻭ

ﻋﺸﻴﺮﺗﻬﻢ ﺍﻭﻟﺌﻚ ﻛﺘﺐ ﻓﻲ ﻗﻠﻮﺑﻬﻢ ﺍﻻﻳﻤﺎﻥ ﻭﺍﻳﺪﻫﻢ ﺑﺮﻭﺡ

ﻣﻨﻪ ﻭﻳﺪﺧﻠﻬﻢ ﺟﻨﺎﺕ ﺗﺠﺮﻱ ﻣﻦ ﺗﺤﺘﻬﺎ ﺍﻻﻧﻬﺎﺭ ﺧﺎﻟﺪﻳﻦ

ﻓﻴﻬﺎﺍﻭﻟﺌﻚ ﺣﺰﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺣﺰﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻫﻢ ﺍﻟﻤﻔﻠﺤﻮﻥ

অর্থ (হে রাসুল) তুমি আল্লাহ ও আখিরাত

বিশ্বাসীদের আল্লাহ ও তাঁর রসূল(সাঃ) এর

সাথে বিরুধীতাকারীদের সাথে ভালবাসা স্থাপন

করতে দেখতে পাবানা। যদিও তারা (বিরুধীতাকারীরা)

তাদের (মুমিনদের) পিতৃপুরুষ, তাদের সন্তান, তাদের

ভাই ও গোত্রীয় লোক। তাদের অন্তরে তিনি

ঈমান লিপিবদ্ধ করেছেন। এবং তিনি তাদেরকে

স্বীয় আত্মা দিয়ে সাহায্য করেছেন। আর

তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার

তলদেশ দিয়ে নহরসমুহ প্রবাহিত। সেখানে তারা

চিরস্হায়ীভাবে অবস্থান করবে। তারাই আল্লাহর

দলের লোক। আর নিশ্চয় আল্লাহর দলের

লোকেরাই সফল। (সুরা আল -মুযাদালাহ শেষ)

★আল্লাহ ও তার রাসুল(সাঃ) এর বিরুধীতাকারীদের

সাথে আত্মিক ভালবাসা মুমিনদের হতে পারেনা।

আলিমে দ্বীনরাই তো এ শিক্ষা মুমিনদের

দেবেন। তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাঃ) এর

বিরুধীদের সাথে তাদের ফিরানোর মানষিকতা নিয়ে

সম্পর্ক করতে পারেন। কিন্তু নিদ্দিষ্ট সময়

অতিক্রান্ত হলে, যদি দৃড় ধারনা হয়, তাদের পরিবর্তন

সম্ভব নয়। তখন তাদের সম্পুর্ন সম্পর্ক ত্যাগ করা

আবশ্যক। তাই আল্লাহর রাসুল শিক্ষা দিয়েছেন আমরা

যেন বেতের নামাযে দুআ কুনুতের বলি,

ﻭﻧﺨﻠﻊ ﻭﻧﺘﺮﻙ ﻣﻦ ﻳﻔﺠﺮﻙ ﺍﻟﺦ

অর্থ আর আমরা (হে আল্লাহ,) তোমার নাফরমান

ব্যক্তিদের সম্পর্ক ছ্বেদ করবো ও ত্যাগ

করবো। (দুআ কুনুত)

যাদের হিদায়াত থেকে নিরাশ, তাদের অন্যায় কাজে

কোন সমর্থন নেই এবং তাদের সাথে মিশে

অন্যায় কাজে সহায়তা দেয়া যাবে না। তবে

হিদায়াতের আশা থাকলে শুধুমাত্র হিদায়াতের

উদ্দেশ্যে সম্পর্ক রাখা যাবে।

লেখকঃ মুহাদ্দিস রবিউল বাশার

আলেমে দ্বীনের বৈশিষ্ট (৭ম)

 

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়