ইমানের মুল পূর্ণতা অর্জন করা ।

ঈমান ছাড়া কোন কল্যান বা পুর্নের কাজ মহান আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। কেহ কেবলার
দিক ফেরাকে মুল পুর্ন মনে করে। কেহ শুধু
জিহাদ করাকে মুল পুর্ন মনে করে। কেহ তাবলীগ করাকে মুল পুর্ন মনে করে। কেহ পীর মরীদীর কার্যকলাপকে মুল পুর্ন মনে করে।
কিন্তু মুলত মুল পুর্ন হলো ঈমান ও ঈমান ভিত্তিক আমল বা সৎকাজ।
ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা বাইতুল মুকাদ্দাসের পুর্ব বা পশ্চিম
দিকে ফিরে ইবাদাত করাকে মুল পু্র্নের কাজ মনে
করতো। আল্লাহ বলেন, পুর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ
ফিরানো মুল পু্র্ন নয়। মুল পু্র্ন হলো ঈমান ও
আনুগত্য। ঈমান না থাকলে ও সর্বক্ষেত্রে
আনুগত্য না থাকলে বাহ্যিক কর্মের কোন মুল্য নেই।
★ ঈমান সম্পর্কিত আলোচনা :
ﻭﻟﻜﻦ ﺍﻟﺒﺮ ﻣﻦ ﺍﻣﻦ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﻴﻮﻡ ﺍﻻﺧﺮ ﻭﺍﻟﻤﻼﻳﻜﺔ ﻭﺍﻟﻜﺘﺎﺏ
ﻭﺍﻟﻨﺒﻴﻦ
অর্থ কিন্তু মুল পুর্ন হলো আল্লাহ, শেষ দিন,
ফেরেস্তামন্ডলী, আসমানী কিতাব ও নাবীউ -
রাসুলগনের প্রতি ঈমানদারের পুর্ন।
★পুর্ব বা পশ্চিম দিক ফিরে নামাজ পড়া মুল পুর্ন নয়।
কুরবানীর গোস্ত ও রক্ত কাবা শারীফের গাত্রে
মাখানো আল্লাহর দরবারে পৌছে না।বরং তোমাদের ঈমান ও তাকওয়া পৌছে।
(ক)মুল পুর্ন আল্লাহর প্রতি ঈমান। শুধু আল্লাহর
অস্তিত্বে বিশ্বাস নয়। আল্লাহ বিশ্বের স্রষ্টা ও
মালিক। তিনি বিশ্ব পরিচালক। তিনি সমস্ত গুনের আধার।
তিনিই একমাত্র ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য সত্বা এবং তিনিই
একমাত্র আনুগত্যের যোগ্য। তাকে মানার জন্য
রাসুলকে মানতে হয়। তাঁর নির্দেশেই
পিতামাতাকে মানতে হয়। তাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
ﻻﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ ( ﻣﺸﻜﻮﺓ )
অর্থ স্রষ্টার নির্দেশ অমান্য করে কোন সৃষ্টির
নির্দেশ মানা যাবে না (মিশকাত)
★ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা মুমিন নয়।
কেননা (১)ইয়াহুদীরা হযরত ওযাইর (আঃ) কে
আল্লাহর পুত্র বলে শিরক করে। খৃষ্টানরা হযরত ঈসা (আঃ) কে আল্লাহর পুত্র বলে শিরক করে। আল্লাহ
তায়ালা বলেন,
ﻭﻗﺎﻟﺖ ﺍﻟﻴﻬﻮﺩ ﻋﺰﻳﺮﺍﺑﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻗﺎﻟﺖ ﺍﻟﻨﺼﺎﺭﻱ ﺍﻟﻤﺴﻴﺢ ﺍﺑﻦ
ﺍﻟﻠﻪ .
অর্থ ইয়াহুদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং
খৃষ্টানরা বলে, মাসীহ আল্লাহর পুত্র। (সূরা আত্তাওবা,
আয়াত নং৩০)
(২)ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের
আলিম ও পীরদেরকে রব হিসাবে গ্রহন করে
শিরক করেছে। তারা আল্লাহকে এককভাবে রব
হিসাবে গ্রহন করেনি। আল্লাহ বলেন,
ﺍﺗﺨﺬﻭﺍ ﺍﺣﺒﺎﺭﻫﻢ ﻭﺭﻫﺒﺎﻧﻬﻢ ﺍﺭﺑﺎﺑﺎ ﻣﻦ ﺩﻭﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﺳﻮﺭﺓﺍﻟﺘﻮﺑﺔ (31 )
অর্থ তারা তাদের আলিম ও পীরদেরকেে রব
হিসাবে গ্রহন করেছে। (সুরা আত্তাওবা, আয়াত নং৩১)
(৩)ইয়াদীরা নিজেদের ধনী বলে এবং
আল্লাহকে ফাকীর বলে মুমিন নেই, কাফির হয়ে
গেছে। আল্লাহ বলেন,
ﻟﻘﺪ ﺳﻤﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﻮﻝ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻗﺎﻟﻮﺍ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻘﻴﺮ ﻭﻧﺤﻦ
ﺍﻏﻨﻴﺎﺀ . ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﻨﺴﺎ
অর্থ নিশ্চয় আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন, যারা
বলেছে, নিশ্চয় আল্লাহ ফাকীর আর আমরা ধনী।
(সুরা আননিসা, আয়াত নং১৮১)
(৪)ইয়াহুদীরা আল্লাহকে কৃপনতা বলে কাফির হয়ে
গেছে। আল্লাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻟﺖ ﺍﻟﻴﻬﻮﺩ ﻳﺪﺍﻟﻠﻪ ﻣﻐﻠﻮﻟﺔ ﻏﻠﺖ ﺍﻳﺪﻳﻬﻢ ﻭﻟﻌﻨﻮﺍ
ﺑﻤﺎﻗﺎﻟﻮﺍ ﺑﻞ ﻳﺪﺍﻩ ﻣﺒﺴﻮﻃﺘﺎﻥ . ﺳﻮﺭﺓﺍﻟﻤﺎﻳﺪﺓ
ইয়াদীরা বলে, আল্লাহর হাত শিকল দিয়ে বাধা। তাদের
হাত বাধা এবং তাদের কটুক্তির কারনে তারা অভিশপ্ত। বরং তাঁর হাতদ্বয় প্রশস্ত।
(সুরা আল মাইদাহ, আয়াত নং৬৪ )
(খ)মুল পুর্ন হলো শেষদিনের প্রতি ঈমান। দুনিয়ার
তাকলীফের যুগ শেষ হবে। আমলের
প্রতিফলের দিন শুরু হবে। মানুষের ভাল ও মন্দ
কর্মের প্রতিদান ও প্রতিফল দেয়ার জন্য আমল নামা
প্রত্যেক্যে দেয়া হবে। আমল মাপা হবে। আমল অনুযায়ী জান্নাত বা জাহান্নাম সেদিন পেতে হবে।
★কিন্তু ইয়াহুদীরা ও খৃষ্টানরা সঠিক অর্থে
কিয়ামতের বিশ্বাস করেনা।! (১)ইয়াহুদীদা দাবী করে,তারা ছাড়া কেহ জান্নাতে যাবে না। আর খৃষ্টানরা
দাবী করে, খৃষ্টানরা ছাড়া আর কেউ জান্নাতে যাবে না। আল্লাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻟﻮﺍ ﻟﻦ ﻳﺪﺧﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺍﻻﻣﻦ ﻛﺎﻥ ﻫﻮﺩﺍ ﺍﻭ ﻧﺼﺎﺭﻱ . ﺳﻮﺭﺓ
ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ
অর্থ তারা (ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা) বলে, জান্নাতে
ইয়াহুদী বা খৃষ্টানরা ছাড়া আর কেহ কখনো প্রবেশ করতে পারবে না।
(সুরা আল বাকারা, আয়াত নং ১১১)
(২)ইয়াহুদীদের দাবী হলো তারা জাহান্নামে
গেলেও মাত্র কয়েকদিন ছাড়া দোযখের আগুন
তাদের স্পর্শ করবে না। আল্লাহ বলেন,
ﻭﻗﺎﻟﻮﺍ ﻟﻦ ﺗﻤﺴﻨﺎ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻻ ﺍﻳﺎﻣﺎ ﻣﻌﺪﻭﺩﺓ . ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ
অর্থ তারা বলে, দোযখের আগুন আমাদেরকে কখনো স্পর্শ করবে না মাত্র কয়েকদিন ছাড়া।
(সুরা.আল বাকারা, আয়াত নং৮০, সুরা আলে ইমরান আয়াত নং ২৪)
লেখকঃ মুহাদ্দিস রবিউল বাশার
Comments
Post a Comment