কেমন রোগাক্রান্ত হলে রোযা ভঙ্গ করা যায়?

আল -কুরআনে মুমিনদের আদেশ -নিষেধ(৭০)

মুহাদ্দিস রবিউল বাশার রোগীর রোযা

--------------------------------------------------------------

সুরা আল বাকারার ১৮৪ নং আয়াতের বাকী ব্যাখ্যা :

★কেমন রোগে রোযা ভঙ্গ করা যায়?

রোগের দুটি অবস্থা।যথা (১)যে রোগে কোন

অবস্থায় রোযা রাখতে সক্ষম হবে না। এমন

রোগে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। (২)যে

রোগে ক্ষতি ও কষ্টসহকারে রোযা রাখতে

সক্ষম। এমন রোগে রোযা ভঙ্গ করা মুস্তাহাব। এ

অবস্থায় মুর্খ ব্যক্তি ছাড়া কেউ রোযা রাখে না।

(তাফসীরে কুরতুবী)

★ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন,রোযাদার ব্যক্তি

রোযা রেখে যখন আশংকা করবে যে, যদি রোযা

ভঙ্গ না করে, তাহলে তার চোখের বেদনা

বেড়ে যাবে এবং তার জ্বর কঠিন আকার ধারন

করবে, তখন রোযা ভঙ্গ করা যাবে। নইলে রোযা

ভঙ্গ করা যাবে না।

★অধিকাংশ আলিমদের অভিমত হলো, যখন রোযাদার

ব্যক্তির এমন রোগ হবে, যা ব্যাথা, যন্ত্রনা ও

কষ্টদায়ক, রোগ দীর্ঘায়িত বা রোগ বৃদ্ধি পাওয়ার

আশংকা হবে, তখন রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ।

ইবনে আতিয়্যা বলেন, ইমাম মালিক (রহঃ) এর দুরদৃষ্ট

সম্পন্ন সাথীদের ইহাই মাযহাব। তারা এইমত নিয়ে

বিতর্ক করতেন।

ইমাম মালিক (রহঃ ) এর ভাষা হলো, রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ

হয় এমন রোগে, যাতে মানুষের কষ্ট হয় ও কঠিন

আকার ধারন করে।

যে রোগে রোযা ভঙ্গ করা যায়, সে সম্পর্কে

ইমাম মালিকের ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া যায়। (১) কখনো

তিনি বলেছেন, রোযা রাখার কারনে মৃত্যুর আশংকা

হলে, রোযা ভঙ্গ করা যায়। (২)কখনো

বলেছেন, রোযার কারনে দীর্ঘায়িত ও বৃদ্ধি

পাওয়ার আশংকা হলে, রোযা ভঙ্গ করা যায়।

★ইমাম ইবনে সিরীন (রহঃ) বলেন, রোযাদার

ব্যক্তির যখন এমন অবস্থা হয়, যে অবস্থার কারনে

সে রোগের নামের যোগ্য হয়, তবে তার

রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ হবে। যেমন মুসাফির সফর

করার কারনে তার রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ, যদিও ঐ

মুসাফির ব্যক্তির রোযা ভঙ্গ করতে বাধ্য হওয়ার

কারন না ঘটে।

মুতার্রিফ বিন তাম্মাম আল আতারিদী বলেন, আমি

একবার রমাদান মাসে মুহাম্মাদ বিন শিরীনের নিকট

প্রবেশ করলাম।তখন তিনি খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন,

আমার এ আঙ্গুল ব্যাথা ও যন্ত্রনা হচ্ছে।

★অধিকাংশ আলিমদের অভিমত হলো,যন্ত্রনাদায়ক,

কষ্টদায়ক ও ব্যথাদায়ক রোগ হলে রোযা ভঙ্গ করা

শুদ্ধ হবে,রোযার কারনে রোগ দীর্ঘায়িত হওয়ার

আশংকা হলে বা রোগ বৃদ্ধি ও কঠিন হওয়ার আশংকা

হলে রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ হবে।

★ইবনে আতিয়্যা বলেন, ইমাম মালিক (রহঃ) এর

দুরদৃষ্টি সম্পন্ন সাথীদের ইহাই মাযহাব।

★ইমাম মালিক (রহঃ) এর ভাষ্য হলো,

ﺍﻟﻤﺮﺽ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﺸﻖ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻤﺮﺍ ﻭﻳﺒﻠﻎ ﺑﻪ

অর্থ যে রোগ মানুষের জন্য কষ্টদায়ক এবং যদ্বারা

কঠিন অবস্থায় পৌছে যায়, সেই রোগের কারনে

রোযা ভঙ্গ করা জায়েয।

★ইমাম মালিক (রহঃ) এর পক্ষ থেকে রোযা ভঙ্গ

করা বৈধকারী রোগ সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া

যায়। যথা

(১)--- ﺧﻮﻑ ﺍﻟﺘﻠﻒ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﻴﺎﻡ ---রোযা রেখে ধ্বংস

বা মৃত্যুর ভয় হলে রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ হবে।

(২)--- ﺷﺪﺓ ﺍﻟﻤﺮﺽ ﻭﺯﻳﺎﺩﺗﻪ ﻓﻴﻪ ﻭﺍﻟﻤﺸﻘﺔ ﺍﻟﻔﺎﺩﺣﺔ --কঠিন

রোগাক্রান্ত হলে, রোযায় রোগের আধিক্য

হলে এবং ক্ষতিকর কষ্ট হলে রোযা ভঙ্গ করা শুদ্ধ

হবে।

★ইহাই মালিক(রহঃ)এর সহীহ মাযহাব। কেননা তিনি

কোন রোগ থেকে কোন নিদ্দিষ্ট করেননি।

সব রোগেই রোযা ভঙ্গ করা বৈধ। তবে যে

জ্বর, মাথা যন্ত্রনা বা হাল্কা রোগে রোযা রাখতে

কষ্ট হয়না, এমন রোগে রোযা ভঙ্গ করা বৈধ নয়।

★হযরত ইব্রাহীম নাখয়ী(রহঃ) হযরত হাসান বাসরী

(রহঃ) বলেন, যে রোগের কারনে দাড়িয়ে নামায

পড়তে ক্ষমতা থাকে না, সে রোগে রোযা ভঙ্গ

করা যায়।

★ইমাম শাফিয়ী (রহঃ)সহ একদল আলিম বলেন, যে

রোগে রোগে রোযা ভঙ্গ করতে বাধ্য হতে

হয় এমন রোগেই রোযা ভঙ্গ করা যায়।

Comments

Popular posts from this blog

বাংলাদেশী মেয়েদের হট ছবি

হে যুবক কোন দিকে যাও!! জান্নাতি হুর তোমাকে ডাকছে

ইসলামের দৃষ্টিতে যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শক্তি বৃদ্ধিকারী খাদ্য-পানীয়